জাবি প্রতিনিধি

  ০৬ নভেম্বর, ২০১৯

বিক্ষোভে উত্তাল জাবি, বন্ধের নির্দেশ প্রত্যাখান

উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামকে অপসারণের দাবিতে আন্দোলনরতদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা ও অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণার প্রতিবাদে ছাত্র-শিক্ষক বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।

বুধবার সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা হল ছাড়ার নির্দেশ প্রত্যাখান করে ও উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করছেন। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ‘আমার বোন আহত কেন? প্রশাসন জবাব চাই’, ‘এক দফা এক দাবি, ফারজানা তুই কবে যাবি’, ‘যে হাত শিক্ষক মারে, সেই হাত ভেঙে দাও’, ‘আমাদের শরীরে শহীদের রক্ত’ স্লোগানে ক্যাম্পাস মুখরিত হয়ে উঠেছে।

সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের মুরাদ চত্বরে জড়ো হন। পরে ১০টার দিকে তারা মুরাদ চত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ছাত্রী হলের দিকে রওনা হয়। মিছিলটি ছাত্রীদের হলের কাছে পৌঁছালে হল ত্যাগের নির্দেশ প্রত্যাখান করে ছাত্রীরাও মিছিলে যোগ দেয়। পরে মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থান প্রদক্ষিণ করে শহীদ মিনারের কাছে আসলে সেখানে আগে থেকে অবস্থান করা আওয়ামী, বিএনপি ও বামপন্থি শিক্ষকদের একটি অংশ মিছিলে যোগ দেয়। এরপর শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে পুরাতন প্রশাসনিক ভবনে গিয়ে সমাবেশ করেন।

আন্দোলনকারী শিক্ষক অধ্যাপক কামরুল আহসান বলেন, এখন সংহতি সমাবেশ চলছে। আমাদের এই কর্মসূচি চলবে। পরে বিকেলে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

তিনি আরো বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন নতুন নয়। অনেক হট্টগোল, উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় সবই হয়। এসব নতুন নয়। তবে নতুন হচ্ছে, কর্মকর্তা-কর্মচারী দ্বারা শিক্ষকদের নিগৃহীত করা। এটা নজিরবিহীন। এটা ফারজানা ইসলামের নতুন আবষ্কার। আমি এমন ঘটনা কখনো দেখিনি।

ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, ছাত্র-শিক্ষক বিক্ষোভ হবে কেন? বিক্ষোভ তো হওয়ারই কথা না। সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী বডি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেছে এবং হল ভ্যাকেন্টের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যেসব ছাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত মানছে না, তারা আইন ভঙ্গ করছে। আইন ভঙ্গ করা তো উচিৎ না। আমি অনুরোধ করছি, ওরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাবে এবং হল ছেড়ে চলে যাবে।

পুলিশের সহযোগিতায় হল ভ্যাকেন্ট কার্যকর করা হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা এরকম কোনো সিদ্ধান্ত এখনো নিইনি। তবে প্রয়োজন হলে করতে হবে। আমরা সেটা জানাবো।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সমাবেশ চলছিল। মঙ্গলবারও বিকেল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। রাতে আবাসিক ছাত্রীরা হল গেটের তালা ভেঙে বিক্ষোভে যোগ দেয়।

এদিকে অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি এড়াতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এর আগে গতকাল দুপুরে উপাচার্যের বাসভবন অবরোধকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ হামলা চালায়। এতে শিক্ষকসহ অন্তত ৩৫ জন আহত হন।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
জাবি,বিক্ষোভ,জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close