বাকৃবি প্রতিনিধি
বাকৃবিতে শিক্ষার্থীদের তোপে ছাত্রলীগ কর্মীর পলায়ন
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ১ম বর্ষের শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে হল থেকে পালিয়ে জীবন রক্ষা পেয়েছেন ছাত্রলীগের সিনিয়র এক কর্মী । সোমবার রাত ২ টার দিকে ওই ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সোমবার ছাত্রলীগের অনুষ্ঠানে না যাওয়ায় একই রাতে ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক আশরাফুল হক হলের প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে মারধর করে ছাত্রলীগের সিনিয়র কর্মী রেজাউর রহমান লিমন। এতে প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হয়ে রেজাউর রহমান লিমনকে লাঞ্ছিত করলে সে হল থেকে পালিয়ে যায়। পরে ওই কর্মীর কক্ষ ও হল ভাংচুর করে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, বাকৃবি শাখা ছাত্রলীগের সবুজ-রুবেল কমিটি হওয়ার পর থেকে আশরাফুল হক হল চালাচ্ছে লিমন নামের ওই কর্মী। হলের সিট বন্টন, গেস্ট রুমে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার, ডাইনিংয়ে খাবার, টাকা নিয়ে মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের হলে তোলাসহ তার বিভিন্ন কার্যক্রমের অভিযোগে দীর্ঘদিনের ক্ষোভ ছিল হলের শিক্ষার্থীদের। পরে গতকাল প্রধানমন্ত্রীর ডক্টর অফ লেটারস ডিগ্রিতে ভূষিত হওয়ায় ছাত্রলীগের আনন্দ মিছিলে প্রথম বর্ষের কোন শিক্ষার্থী না যাওয়ায় তাদের নিয়ে হলের কক্ষ নং ১১২ তে বসে লিমন।
এর আগে লিমনের অনুসারী রাকিব হাসান ১ম বর্ষের শিক্ষার্থীদের হলের ক্যান্টিনের ডিম হারিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। এক পর্যায়ে হল ক্যান্টিন থেকে ডিম চুরির অভিযোগে এক শিক্ষার্থীকে পেটায় লিমন। ওই রাত ১টার সময়ই অন্য এক শিক্ষার্থীর অভিভাবককে ফোন দিয়ে চুরিসহ বিভিন্ন উল্টা-পাল্টা কথা বলা হয়। পরে ওই হলের ১ম বর্ষের সকল শিক্ষার্থী একত্রিত হয়ে লিমনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেয়। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হয়ে লিমনের উপর চড়াও হয়। পরে তাকে লাঞ্ছিত করলে লিমন হল থেকে পালিয়ে যায়।
এ সময় বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা লিমনের রুম, হলে ফুলের টব, জানালার কাচ ভাংচুর করে। পরে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সবুজ কাজী হলে এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন। কিন্তু এ ঘটনায় হল প্রশাসনের কোন ভূমিকা ছিল না। কিন্তু এ ঘটনার পরেও সারা রাত ও দুপুর পর্যন্তও প্রভোস্ট হলে যাননি।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগ কর্মী রেজাউর রহমান লিমন বলেন, হলের ক্যান্টিন থেকে ডিম চুরি করার শিক্ষার্থীদের নিয়ে আমি আলাদা বসি। কিন্তু তারা স্বীকার না করায় একজনকে শুধু চড় দেই। ছাত্রলীগের অনুষ্ঠানে না যাওয়া বা অভিভাবকে ফোন দেওয়া বিষয়ে কিছু জানি না আমি। শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. সবুজ কাজীর সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে আশরাফুল হক হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মহির উদ্দিন বলেন, হলে মারামারি হলে কি কখনও প্রভোস্ট যায়? প্রক্টরও তো হলে আসেননি। আমি এখন ব্যস্ত আছি। পরে কথা বলব।
এ প্রসঙ্গে প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আতিকুর রহমান খোকন বলেন, বিষয়টি জানতে পেরেছি। পরে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পিডিএসও/তাজ