সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি

  ০৪ মে, ২০২৪

বাজার সয়লাব কেমিক্যাল দিয়ে পাকানো আমে

উত্তরের ১৬ জেলায় আম পাকা এখনও শুরু হয়নি। অথচ নীলফামারীর সৈয়দপুরের বাজারগুলো কেমিক্যাল দিয়ে পাকানো আমে সয়লাব হয়ে গেছে। অপরিপক্ক এসব আম বিভিন্ন জাতের নাম দিয়ে ৩ হাআর ৬০০ থেকে ৪ হাজার টাকা মন দরে বিক্রি করা হচ্ছে।

এ বছরের আম পাকার তারিখ ১৮ মে থেকে নির্ধারণ করা হলেও সৈয়দপুরের আড়তে গত ২৮ এপ্রিল থেকেই আম ওঠতে শুরু করেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এসব আম দেখতে পাকা। কিন্তু আঁটি কাঁচা।

স্থানীয়রা জানান, এসব আম নানা প্রকার কেমিক্যাল দিয়ে পাকানো।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লাল মোহন নামে আমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা থেকে ১০০ টাকা, গোপাল ভোগ ১৩০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। অপরিপক্ক এসব আম কেমিক্যাল দিয়ে পাকানোর ফলে আমের উপরের অংশ হালকা হলুদ ও বেশ চকচকে। ক্রেতারা রসালো ও গাছপাকা মনে করে দেদারসে কিনছেন এসব আম।

উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, এবার গরম আবহাওয়া ও বৃষ্টি না হওয়ার ফলে প্রায় গাছের আম ঝরে গেছে। একই সঙ্গে আম পাকতে সময় লাগবে। যেসব গাছে আম আছে সেগুলি ১৮ মে এর আগে পরিপক্ক হওয়ার কথা নয়।

কৃষি বিভাগের ঘোষিত নির্ধারিত তারিখ ১৮ মে ঘোষণা করা হলেও সৈয়দপুরের ফলের আড়ত ও খুচরা বাজারে কেমিক্যাল মিশিয়ে পাকানো আম বেচাকেনা চলছে জোরেশোরেই।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ধীমান ভুষণ রায় বলেন, কৃষি বিভাগ ১৮ মে এর পরে আম পাড়ার নির্দেশ দিলেও আমরা ২৩ মে’র আগে আম পাড়াতে নিরুৎসাহিত করছি। কারণ ১৮ মে’র মধ্যে আম পরিপুষ্ট হবে না।

একই মতামত ব্যক্ত করেন নীলফামারী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ডক্টর এসএম আবু বকর সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, বাজারে মে মাসের শেষের দিকে আসবে দেশি আঁঠির আম, আর জুন মাসের প্রথম দিকে নামবে গোপাল ভোগ, ল্যাংড়াসহ রংপুরের বিখ্যাত হাড়ি ভাংগা আম। তিনি বলেন, বাজারের যে সব আম বিক্রি হচ্ছে সেগুলি কেমিক্যাল মিশিয়ে অথবা কিলিয়ে পাকানোর মত।

একাধিক ক্রেতা জানিয়েছেন বাজারের যে সব আম বিক্রি করা হচ্ছে সেগুলির উপরের অংশ হালকা হলুদ হলেও মিষ্টি নেই এবং আটি গুলি কাঁচা। অধিকাংশ আমই ১২ ঘন্টার মধ্যে শুকিয়ে যাচ্ছে।

শহরের ১ নং রেল ঘুমটি এলাকার একাধিক ফল বিক্রেতা জানান, গিয়াস উদ্দিন নামের এক আড়তদার নাটোর ও শান্তাহার থেকে যে আম আড়তে এনেছেন সেগুলির সবই অপরিপক্ক ও কেমিক্যালে পাকানো। ওই আড়তদার বিভিন্ন নামে আম বিক্রি করছেন এবং দামও নিচ্ছেন অনেক বেশি। তারা বলেন অপরিপক্ক পাকা আম বিক্রির দায়ে রংপুর বিভাগের অনেক ব্যবসায়ির জরিমানা করা হলেও গিয়াস নামের ওই আড়তদার দাপটের সাথেই বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল মিশানো আম বিক্রি করে চলেছেন।

সৈয়দপু ফল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি বাদশা মিয়া জানান, সৈয়দপুর শহরের ২/৩ জন আড়তদার খুলনা,নাটোর ও রাজশাহী থেকে আম নিয়ে আসছেন এবং এখান থেকে জেলার বিভিন্ন বাজারে পাঠাচ্ছেন। কৃষি অধিদপ্তরের নির্ধারীত ১৮মে’র আগে যে আমগুলো বাজারে আনা হচ্ছে সেগুলির সবই অপরিপক্ক।

জানতে চাইলে শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ওয়াসিম বারি জয় বলেন অপরিপক্ক পাকা আঠালো আম খেলে পেটের পিড়া হবেই হবে। শিশুসহ বয়স্ক মানুষ ওইসব আম খেলে ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশ্ঙকা রয়েছে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close