স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উপস্থিতিতে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) চতুর্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে গ্যাস বেলুন বিস্ফোরণে কমেডিয়ান আবু হেনা রনিসহ পাঁচজন দ্বগ্ধের ঘটনায় গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করে সমবেদনা জ্ঞাপন ও চিকিৎসাসহ সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ণ ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে গিয়ে বেলুন বিস্ফোরণে দ্বগ্ধদের খোঁজ নেন। এসময় ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেনসহ অন্যান্য চিকিৎসকবৃন্দের সঙ্গে নিয়ে পুলিশ কমিশনার আহতদের চিকিৎসার বিষয়ে খোঁজখবর নেন এবং সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সঙ্গে চিকিৎসা প্রদানের জন্য অনুরোধ করেন।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার (ডিবি-মিডিয়া) আবু সায়েম নয়ন জানান, পুলিশ কমিশনার এসময় উপস্থিত কমেডিয়ান আবু হেনা রনি, পুলিশ সদস্য জিল্লুর রহমানের স্বজনদের কাছে অনাকাঙ্খিত এ দুর্ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে সমবেদনা জ্ঞাপন করে চিকিৎসাসহ সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। পাশাপাশি সুস্থতার জন্য যা যা করণীয় সবকিছুই করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. সামন্ত লাল সেন আহতদের চিকিৎসায় ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন। অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনায় গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ গভীর মর্মাহত এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছে।

এর আগে শুক্রবার সন্ধ্যায় জিএমপির ৪র্থ বর্ষপূর্তীর অনুষ্ঠানের মঞ্চের পূর্ব পাশে ছোট উদ্বোধন মঞ্চে ওড়ানোর জন্য কিছু গ্যাস বেলুন নেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও বিশেষ অতিথি আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ বারবার চেষ্টা করলেও বেলুনগুলো উড়ছিল না। পরে কয়েকজন পুলিশ সদস্য সেই বেলুনগুলো মঞ্চের পেছনে নিয়ে যায়। পরে পায়রা উড়িয়ে স্বরাষ্ট্রামন্ত্রীসহ অন্য অতিথিবৃন্দ অনুষ্ঠানের মূল মঞ্চে চলে যান।

তারা মূল মঞ্চে চলে যাওয়ার কিছু সময় পর কয়েকজন পুলিশ সদস্য বেলুন বিক্রেতাকে বকাঝকা করলে বেলুন বিক্রেতা নিজেই বেলুনগুলো উড়ানোর চেষ্টা করার সময় বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে কমেডিয়ান আবু হেনা রনি, গাজীপুর জেলা পুলিশের কন্সটেবল মোশারফ হোসেন, গাছা থানার কনস্টেবল রুবেল মিয়া ও ইমরান হোসেন, টঙ্গী পূর্ব থানার কনস্টেবল জিলুর রহমান আহত হয়ে নিচে লুটিয়ে পড়েন।

পরে আশপাশের পুলিশ সদস্যরা তাদের গায়ে পানি ঢেলে আগুন নেভায় এবং গাড়িতে করে দ্রুত গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আবু হেনা রনি ও কনস্টেবল জিল্লুর রহমানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়। এর মধ্যে আবু হেনা রনির শ্বাসনালী পুড়ে গেছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন।

তদন্ত কমিটি গঠন : বেলুন বিস্ফোরণে আহত হওয়ার ঘটনা তদন্তে শুক্রবার রাতেই গাজীপুর মহানগর পুলিশের ডিসি (উপ-কমিশনার, উত্তর) আবু তোরাব মো. শামসুর রহমানকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার। অন্য সদস্যরা হলেন, এডিসি (উত্তর) রেদোয়ান আহমেদ, এসি প্রসিকিউশন মো. ফাহিম আশজাদ ও গাজীপুর সদর থানা পুলিশের ওসি মো. রফিকুল ইসলাম। তিন কার্য দিবসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।