জয়পুরহাট প্রতিনিধি

  ১৩ মে, ২০২০

করোনা মোকাবিলায় হুইপ স্বপনের ব্যতিক্রমী প্রয়াস

করোনা মোকাবিলায় জয়পুরহাট জেলায় নেওয়া হয়েছে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। গত ১০ মে পর্যন্ত জেলার ৫ উপজেলায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ২৭২৯ জনের। আর পরীক্ষা করা হয়েছে ১৫৪২ জনের এবং বাকিগুলো প্রক্রিয়াধীন।

দেশের একাধিক সরকারি ল্যাবে টেস্ট করিয়ে এ পর্যন্ত ৪৩ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। যারা বিশেষ ব্যবস্থায় আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৪ জন। জেলা শহরে একটি প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারান্টাইন সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। যেখানে হোম কোয়ারান্টাইন না মানাদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারান্টাইনে রাখা হয়েছে।

করোনার প্রকোপ শুরুর প্রাথমিক পর্যায়ে ২২ মার্চ জাতীয় সংসদের হুইপ, জয়পুরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ, পুলিশ বিভাগের কর্মকর্তা এবং উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌর মেয়রদের সঙ্গে একটি সমন্বয় সভা করেন।

জেলা প্রশাসন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সভায় জেলার স্বাভাবিক স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রম নিরবচ্ছিন্নভাবে অব্যাহত রাখার স্বার্থে জেলা আধুনিক হাসপাতাল এবং উপজেলা হাসপাতালে আইসোলেশন বা প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারান্টাইন সেন্টার স্থাপন না করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং নবনির্মিত ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির ক্যাম্পাসে আইসোলেশন ও কোয়ারান্টাইন সেন্টার চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সরকার ব্যয়ভার না দেওয়া পর্যন্ত এই সেন্টারের সকল খরচ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বহন করার ঘোষণা দেন। জেলার সকল হাসপাতালের পরিবর্তে অন্যত্র একটি মাত্র আইসোলেশন সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হয় যেন সকল হাসপাতাল এবং চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের সংক্রমণের ঝুঁকি হ্রাস করা যায়।

সভায় হুইপের অর্থায়নে আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সরকারী মজিবর রহমান কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোকছেদ আলীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে সেফ অতিথিশালা নামে প্রথম সেন্টার চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

পরবর্তীতে একই ক্যাম্পাসে করোনা পজিটিভ রোগী ও সন্দেহভাজন রোগীকে রাখা নিরাপদ নয় বিবেচনা করে জেলায় আরো ৩ টি প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারান্টাইন সেন্টার চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়। যার ব্যয়ভার হুইপ ও জেলা প্রশাসন যৌথভাবে বহন করার সিদ্ধান্ত হয়। সে মোতাবেক জেলা শহরের পার্শ্বে টিটিসিতে একটি প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারান্টাইন সেন্টার চালু করা হয়। অপর দুইটি কোয়ারান্টাইন সেন্টারের প্রস্তুতির কাজ চলমান।

জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বগুড়ার মোহাম্মদ আলী হাসপাতাল, জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ এবং জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলা হাসপাতাল, ক্ষেতলাল উপজেলা হাসপাতাল, কালাই উপজেলা হাসপাতাল পরিদর্শন করে হাসপাতালসমূহ পরিচ্ছন্ন ও ডিজইনফেকশন করার উদ্যোগ নেন।

এছাড়াও তিনি সমগ্র জেলার জনসমাগমের স্থান ও প্রধান প্রধান সড়কে ব্লিচিং পাউডার মিশ্রিত পানি ছিটানোর ব্যবস্থা করেছেন। জেলার আড়াই লক্ষ পরিবারকে উচ্চ ক্ষার যুক্ত সাবান উপহার ও সচেতন করার পাশাপাশি কোয়ারান্টাইনে থাকা পরিবারকে ব্যক্তিগত ত্রাণ সহায়তা প্রদান, আইসোলেশন ও কোয়ারান্টাইন সেন্টারে থাকা সকলের খাবারের সিংহভাগ ব্যয় বহন করছেন হুইপ স্বপন।

জয়পুরহাট সিভিল সার্জন ডা. সেলিম মিয়া বলেন, আমাদের ৭১ জন রোগী আইসোলেশনে ছিল, সেখান থেকে বর্তমানে ৫৬ জন রোগী আছেন। ৫টি মোবাইল টিমের মাধ্যমে স্যাম্পল কালেকশন করা হচ্ছে।

পাঁচবিবি পৌর মেয়র মো. হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, আমাদের আইসোলেশন সেন্টার জয়পুরহাট টিটিসিতে যা এখন চিকিৎসা কেন্দ্র হিসেবে কাজ করছে। ভেন্টিলেশন সাপোর্ট বা অভিজ্ঞ ডাক্তার না থাকা স্বত্তেও যারা শনাক্ত হয়েছে তাদেরকে ষেখানে রাখা হয়েছে। এছাগা একটি ইউনিয়নের তিনটি পয়েন্টে স্যাম্পল কালেকশন করার জন্য ভ্রাম্যমাণ গাড়ি পাঠানো হচ্ছে। হুইপ মহোদয়ের নিজস্ব তত্ত্বাবধানে এসব কাজ করা হচ্ছে।

পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
জয়পুরহাট,করোনা মোকাবিলা,আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন,উদ্যোগ
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close