কক্সবাজারের (চকরিয়া) প্রতিনিধি

  ২১ জুলাই, ২০১৭

‘বাধা দেওয়ার অধিকার কারো নেই’

ডুলাহাজরার সাফারি পার্ক সড়কে লবণাক্ত বালির স্তূপ

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক সড়কে অবৈধ বালুর স্তুপের ফলে যানবাহন ও জনসাধারণ চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। বালিবাহী ট্রাকের যাতায়াতে ভেঙে যাচ্ছে সড়ক, ঘটছে দুর্ঘটনা। লবণাক্ততার প্রভাবে নষ্ট হচ্ছে ডুলাহাজারা কলেজে লাগানো চারা গাছ। অভিযোগ আছে, পার্কের এক বিট কর্মকর্তার যোগসাজোসের স্থানীয় প্রভাবশালী বালুরচর এলাকার মোঃ তজু মিয়ার পুত্র মোঃ ইউনুছের নেতৃত্বে একটি চক্র এই লবণাক্ত বালি স্তুপ করে বাণিজ্য চালিয়ে আসছে। জানা যায়, ডুলহাজারা কলেজ গেইট সংলগ্ন চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক থেকে সোজা পূর্ব দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক সড়ক। সাফারি পার্ক সীমানা প্রাচীরের অভ্যন্তরে পাহাড়ি ছড়ার বয়ে যাওয়া অবস্থানটি লবণাক্ত পানির সাথে মিলিত হয়। এই ছড়া থেকে কথিত প্রভাবশালী চক্র বালি উত্তোলন করে কলেজের খেলার মাঠ সংলগ্ন সড়কের উপর দীর্ঘদিন যাবত লবণাক্ত বালির স্তুপ করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে এই সড়ক দিয়ে পার্কে আগত দর্শনার্থী সহ শতশত শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের চলাচল চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। লবণাক্ততায় নষ্ট হচ্ছে ডুলাহাজারা কলেজে লাগানো চারা গাছ। দখল-দূষণের পাশাপাশি পরিবেশ ভারসাম্য হুমকির মুখে।

এছাড়া মহাসড়ক থেকে বালির লুডিং পয়েন্টে বড় ডাম্পার (পি-কাপ) প্রতিনিয়ত আসা যাওয়া করায় সড়কটির অনেকাংশ ভেঙ্গে গেছে, ক্ষত তৈরি হয়েছে সড়ক জুরে। এমনিতেই বর্ষাকালীন বৃষ্টিতে সড়কটি দিয়ে সাধারণ মানুষের পায়ে হেঁটে চলাচল সম্পূর্ণ অকেজ হয়ে পড়ে। বালি উঠানামা করতে কয়েকটি বড় ট্রাক কলেজ গেইটে অবস্থান করায় আসা-যাওয়া করতে হিমশিমে খেতে হচ্ছে ডুলাহাজারা কলেজের শিক্ষার্থীসহ জনসাধারণের। আর বালির কারণে উল্লেখিত স্থানে সড়ক দুর্ঘটনা যেন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা।

স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, ডুলাহাজারা ইউনিয়নের কাটাখালী লবণাক্ত খাল থেকে উত্তোলন হচ্ছে প্রতিদিন কয়েকশত ট্রাক বালি। স্থানীয় বালুরচর এলাকার মোঃ তজু মিয়ার পুত্র মোঃ ইউনুছের নেতৃত্বে একটি চক্র ট্রাক যোগে লবণাক্ত বালিগুলো প্রথমে সাফারি পার্কের সড়কে জমা করে। পরে তা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সরবরাহ করা হয়। অনুমোদন বিহীন কাটাখালী খাল থেকে উত্তোলন করা বালুর ডাম্পার চলাচলে চরম ভাবে নষ্ট হচ্ছে শান্তিরঘাট-ডাকবাংলা সড়ক। গ্রামের অভ্যন্তরীণ সড়কটি রক্ষা করতে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ কামনা করেন এলাকার জনসাধারণ। ডুলাহাজারা কলেজের অধ্যক্ষ আলহাজ্ব ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী জানান, ‘কলেজ গেইট ও কলেজের দক্ষিণ পার্শ্বে এই বালুর স্তুপে কয়েকটি দুর্ঘটনা সংঘটিত সহ চরমভাবে বিনষ্ট কচ্ছে কলেজের পরিবেশ। কলেজ সীমানা ঘেঁষে লবণাক্ত বালু রাখায় চারাগাছগুলো ঠিকমত বাড়তে সমস্যা হচ্ছে। কলেজ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে তাদের নিষেধ করলেও কর্ণপাত করে নি। ফলে বাধ্য হয়ে চকরিয়ার ইউএনও মহোদয়কে অবগত করা হয়েছিল। তিনি জরুরিভাবে অভিযান পরিচালনা করায় কিছুদিন বন্ধ থাকেলেও সম্প্রতি আরো বেশি বেপরোয়া হয়ে পড়ছে।’

বালু বিক্রি চক্রের প্রধান ইউনুছের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘সবদিক ম্যানেজ করে নগদ টাকা দিয়ে আমরা এ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছি। এখানে বাধা দেওয়ার অধিকার কারো নেই।’

গোপন সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের বিট কর্মকর্তা মাজাহারুল ইসলামকে মোটা অংকে ম্যানেজ করে চলছে এই বালু চক্র। এ বিষয়ে ওই বিট কর্মকর্তার ব্যক্তিগত মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন। এ ব্যাপারে ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের রেঞ্জ কর্মকর্তা মোর্শেদুল আলম জানান, ‘সড়ক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে বালুর ব্যবসা পরিচালনা করার কোন অনুমতি কাউকে দেওয়া হয়নি। তবে ওখানে বালুর ব্যবসা পরিচালনার ব্যপারে উপজেলা প্রশাসনের অনুমোদন আছে কিনা আমি জানি না।’

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শাহেদুল ইসলাম বলেন, ‘চলাচল সড়কে বালু রাখার জন্য উপজেলা প্রশাসন থেকে কোন অনুমোদন দেওয়া নাই। বিষয়টি অভিযোগের প্রেক্ষিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist