প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ২৮ এপ্রিল, ২০১৯

তীব্র গরমে বিভিন্ন স্থানে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব

হবিগঞ্জের সদর উপজেলা, সুমানমগঞ্জের ধর্মপাশার সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের নয়টি গ্রাম ও পাবনার সুজানগরে ডায়রিয়ার মারাত্মক প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠান খবর:

হবিগঞ্জ : হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল কর্তপক্ষ জানায়, গত দুই থেকে তিন দিনে হাসপাতালে শুধু ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে প্রায় ৩০ জন শিশু। এছাড়াও নিউমুনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে আরো ২০ জন শিশু। শুধু শিশুরাই নয় গরমের কারণে ডায়রিয়াসহ আরো বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন আরো অর্ধশতাধিক রোগী। এমতাবস্থায় সকলকে সচেতন হওয়ার জন্য বলছেন তারা।

হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মিঠুন রায় জানান, হঠাৎ করে ডায়রিয়া বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ হল আবহাওয়ার পরিবর্তন। তীব্র এ গরমে দূষিত পানি পানের কারণে ডায়রিয়া বাড়ছে। এছাড়াও ডায়রিয়া থেকে রক্ষায় সকলকে পানি ফুটিয়ে অথবা বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। অন্যদিকে রাস্তার পাশে বিক্রি করা খোলা খাবার ও শরবত পান না করতেও বলেন তিনি।

ধর্মপাশা (সুনামগঞ্জ) : সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের রহমতপুর, দয়ালপুর, তাহিরপুর, মাহমুদনগর, রংপুর হাটি, আগলাহাটি, দক্ষিণ হাটি, নয়াহটি ও গাজীনগর এই নয়টি গ্রামে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। গত ৮-১০দিন ধরে এসব গ্রাম গুলোতে ডায়রিয়ায় শতাধিক নারী, শিশু ও পুরুষ আক্রান্ত হয়েছে। এদের মধ্যে পাঁচবছরের নীচে শিশু ও ১৮বছরের নীচের বয়সের রোগীর সংখ্যাই বেশি। এর মধ্যে ডায়রিয়ার আক্রান্ত হয়ে ওই ইউনিয়নের রহমতপুর গ্রামের খাইরুল ইসলাম (৫০) নামের এক কৃষক গত বুধ্বার দুপুরে মারা গেছেন।

ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, এই হাসপাতালে বহিঃবির্ভাগে গড়ে ২৫০ রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এর মধ্যে গত এক সপ্তাহে দৈনিক গড়ে ১০-১৫ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীকে ওষুধ ও চিকিসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়াও উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা যাওয়া করার জন্য সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল না থাকায় ওই ইউনিয়নের মানুষজন যথাসময়ে এসে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে পারছে না। তাই স্থানীয়ভাবে তারা চিকিৎসা নিচ্ছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. সাদবীর জামান বলেন, অতিরিক্ত গরমে ভাইরাস ও ভ্যাকটেরিয়ার উৎপাদন বেড়ে গেছে। পাশাপাশি সংক্রমনও বেড়ে যাচ্ছে। ডায়রিয়ার রোগীদের জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ হাসপাতালে সরববরাহ নেই। তবে আমরা যথাসাধ্য সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আবদুল মালেক বলেন, এ উপজেলায় সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা অন্যান্য ইউনিয়নের তুলনায় একটু বেশি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে মেডিকেল টিম গঠন করে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার ব্যপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সুজানগর (পাবনা) : গত বছরের তুলনায় এবার ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে সুজানগর হাসপাতালে। আক্রান্তদের মধ্যে দিনমজুর, স্কুলের শিক্ষার্থী ও শিশুর সংখ্যাই বেশি। এদিকে ডায়রিয়া আক্রান্তদের অনেকে আমাশয়, টাইফয়েডেও আক্রান্ত হচ্ছেন।

সুজানগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা. মো. রফিকুল হাসান জানান, বর্তমানে এই হাসপাতালে ৭ জন মেডিকেল অফিসার সাধ্যমত চেষ্টা করছেন সঠিক চিকিৎসাসেবা দিতে। শুধু সুজানগর হাসাপাতালেই নয় এই উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে অবস্থিত ৫০টি কমিউনিটি ক্লিনিক এর মাধ্যমেও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রুগীদের চিকিৎসাপত্র সহ প্রয়োজনীয় ঔষধ প্রদান করা হচ্ছে।

মেডিকেল অফিসার সাদি হাসনাইন রকি বলেন, এবারে সুজানগর হাসপাতালে গরমের কারণে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে যে পরিমাণ রুগী হাসাপাতালে আসছে গত ৪ বছরের মধ্যে আমার চাকরি জীবনে এর আগে কখনোই দেখিনি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close