কে. এম. রুবেল, ফরিদপুর
হাসছেন ফরিদপুরের পেঁয়াজ চাষিরা
ফরিদপুরে চলতি মৌসুমে পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে পেঁয়াজের ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। এই সময় ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি না করার দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। আর পেঁয়াজ আবাদে কৃষকদের সবধরনের সহযোগিতা করার কথা জানাল কৃষি বিভাগ।
ফরিদপুর জেলার মাটি ও আবহাওয়া পেঁয়াজ চাষের উপযোগী হওয়ায় এ জেলায় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে পেঁয়াজের আবাদ। ভালো মানের পেঁয়াজ উৎপাদনে ফরিদপুর জেলার সুনাম রয়েছে। এই জেলায় মুড়িকাটা পেঁয়াজ, দানা পেঁয়াজ এবং হালি পেঁয়াজের আবাদ করা হয়ে থাকে। জেলার নগরকান্দা ও সালথা উপজেলায় সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন হয়ে থাকে। এছাড়াও জেলার অন্যান্য উপজেলাতেও পেঁয়াজের আবাদ হয়ে থাকে। বর্তমানে কৃষকরা হালি পেঁয়াজ ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বসে নেই কৃষানিরাও। তারাও ব্যস্ত আছেন পেঁয়াজ ঘরে তোলার কাজে। এই জেলায় উৎপাদিত পেঁয়াজ স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়ে থাকে। বর্তমানে এক মণ পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার টাকা থেকে এক হাজার ১০০ টাকায়।
সদর উপজেলার চরমাধবদিয়া ইউনিয়নের কৃষক জুয়ের মল্লিক বলেন, পেঁয়াজের ফলন ভালো হয়েছে। বাজারে পেঁয়াজের দামও ভালো। এক মণ পেঁয়াজ উৎপাদন করতে খরচ হয়েছে ৮০০-৯০০ টাকা। বিক্রি করছি এক হাজার ১০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকায়।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, চলতি বছর পেঁয়াজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩৫ হাজার ৪৫ হেক্টর জমিতে। আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৩৬ হাজার ১৭০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করা হয়েছে। উৎপাদন চার লাখ ৩৪ হাজার ৪০ মেট্রিক টন। সদর উপজেলা কৃষি অফিসার আবুল বাসার মিয়া বলেন, পেঁয়াজের বাম্পার ফলনের পাশাপাশি ভালো দামও পেয়েছে কৃষকরা। চলতি মৌসুমে কৃষকরা কেজি মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি করছে ৮০-১০০ টাকায়। তবে কিছু দিন পেঁয়াজ ঘরে রাখতে পারলে কৃষক আরো বেশি দাম পাবে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পক্ষ থেকে কৃষকদের সবধরনের সহযোগিতা দেওয়ার কথাও জানান তিনি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর, ফরিদপুরের উপপরিচালক কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, সারা দেশের মধ্যে ফরিদপুর জেলায় বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। পেঁয়াজ আবাদের শুরু থেকেই আমরা কৃষকদের প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে থাকি। পেঁয়াজের ফলন ভালো হয়েছে। সরকারি সহযোগিতা, সার-কীটনাশকের দাম কম ও পেঁয়াজের সঠিক মূল্য পেলে আগামীতে আরো বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন করতে পারবে ফরিদপুর অঞ্চলের কৃষকরা।
"