এস এইচ এম তরিকুল, রাজশাহী

  ২৩ অক্টোবর, ২০১৯

মশায় অতিষ্ঠ রাজশাহীবাসী

আশ্বাসের বেড়াজালে রাসিক

রাজশাহী মহানগরীতে মশার উৎপাত মারাত্মক বেড়েছে। শুধু রাত নয়, দিনেও মানুষকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে এ মশা। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন নামাজি ও কোমলমতি শিশুরা। আর শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি নগরবাসীদের কাজে ব্যাঘাত ঘটছে। রাস্তা সংস্কারের মতো মশা নিধনেও একের পর এক অজুহাত এবং আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছে রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক)। কিন্তু এসব অজুহাতের কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে গেছে নগরবাসী।

মহানগরীর বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষরা জানান, মশার উৎপাতে মসজিদে অথবা বাড়িতে ঠিকমতো নামাজ আদায় করা কষ্টসাধ্য। ব্যাঘাত ঘটছে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায়। আর মশার কামড়ে কোমলমতি শিশুদের শরীর ক্ষত হচ্ছে। তখন ক্ষত স্থানে চুলকানোর কারণে চর্ম রোগের মতো দেখা যাচ্ছে। এ ছাড়াও ব্যাঘাত ঘটছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের। আর বর্তমানে ডেঙ্গু জ্বরে সে আক্রান্ত না হলেও আতঙ্ক এখনো কাটেনি নগরবাসীর। তাই কয়েল ও মশারি টাঙিয়েও যেন এ ক্ষুদ্র প্রাণীটির কাছ থেকে রক্ষা পাওয়া দায়। দিনের বেলাতেও বাড়িতে কয়েল অথবা মশারি টাঙানো লাগছে। আর সন্ধ্যা হলেই তো বোঁ বোঁ শব্দে জানান দিয়ে পুরোপুরি আক্রমণ। এজন্য মহানগরীর অপরিচ্ছন্ন ড্রেন ও যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা জমে থাকাকেই বেশি দায়ি করছেন নগরবাসী। একই সঙ্গে দীর্ঘদিন থেকে মশার প্রজনন বন্ধে সিটি করপোরেশন থেকে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়াকে দায়ী করা হয়েছে।

মহানগরীর মিঠুর মোড় এলাকার বাসিন্দা জিয়া বলেন, এ মোড় থেকে হার্ট ফাউন্ডেশন রোডের ড্রেন কত দিন থেকে ভালোভাবে পরিষ্কার করা হয়নি তা আল্লাহতায়ালাই ভালো জানেন। এ ড্রেন দিয়ে মানুষের মলও দেখা যায়। তবে কিছুদিন পরপর পরিচ্ছন্নতাকর্মী এসে আলগা করে ঘেটে ওপর থেকে শুধু কিছু ময়লা তোলেন। যে ময়লাগুলো রাস্তার পাশেই রেখে চলে যায়। ফলে মশারাও তাদের প্রজননের জায়গা বেশি পায়।

বাকির মোড় ঈদগাহ মাঠ এলাকার সিনিয়র আইনজীবী মমতাজ উদ্দিন আহম্মেদ বাবু বলেন, পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের অনিয়মিতভাবে আসা ও দীর্ঘদিন ধরে মশা নিধনের ওষুধ স্প্রে না করায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এলাকাবাসী। বাড়ির ছেলেমেয়েরাও স্থিরভাবে পড়ালেখা করতে পারছে না। তবে লোক দেখানো দুই-এক দিন স্প্রে করেই লোটাপ করা হয় লাখ লাখ টাকা। করপোরেশনের স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রোগী অভিভাবক ও স্টাফরা জানান, দুর্গন্ধের কারণে হাসপাতালে থাকায় যেন দায়। কয়েল জ্বালালে মশা থেকে পুরোপুরি রক্ষা না মিললেও দুর্গন্ধ থেকে অনেকটাই মুক্তি মেলে। তারা বলেন, যদিও প্রতিদিনই পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের দেখা মেলে। তবে কখনো হাসপাতালে ভিআইপি পরিদর্শনে আসলে রোগী-অভিভাবক বা কারোরই অভিযোগ থাকে না বলেও জানান একাধিক কর্মকর্তারা।

চিকিৎসকদের মতে, অ্যানোফিলিস মশা ম্যালেরিয়ার বিস্তার ঘটায়। এখন মশার উৎপাত দিনে দিনে বেড়ে যাচ্ছে। এতে মশাবাহিত রোগের প্রকোপ বাড়বে। বিশেষ করে, ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ বাড়তে পারে। এজন্য প্রয়োজনে দিনের বেলাও মশারি ব্যবহার করতে হবে। শিশুদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সাবধান থাকতে হবে বলেও জানানো হয়েছে।

সার্বিক বিষয়ে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা শেখ মো. মামুন ডলার প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, ‘মশক নিধনের জন্য এরই মধ্যে টেন্ডার কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। এতে বাজেট ধরা হয়েছে ৪০ লাখ টাকা। ওষুধ পাওয়া মাত্রই কার্যক্রম শুরু করা হবে। আশাকরি আগামি ১৫ দিনের মধ্যেই ওষুধ হাতে পেয়ে যাব।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close