খুলনা ব্যুরো

  ১৯ আগস্ট, ২০১৯

অজ্ঞান পার্টির দৌরাত্ম্য খুমেক হাসপাতালে

খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে গত শনিবার সকালে ছেলেকে দেখতে আসেন গৃহবধূ শ্যামলী। হাসপাতালের সিঁড়ি দিয়ে ওঠার সময় দুজন নারী তাকে ডাক দেন। তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে সামনে যান তিনি। এ সময় একজন বলেন, আপা আপনার নাকে ময়লা, বলেই একটা সাদা কাগজ তার নাকের সামনে ধরে। এতে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। কিছুক্ষণ পর জ্ঞান ফিরলে তিনি দেখেন তার গলার দেড় ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইনটি নেই।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার রানী নামে অপর এক গৃহবধূ ওই হাসপাতালে অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়েন। তার কাছ থেকে নগদ ৪০ হাজার টাকা, কানের দুল ও গলার চেইন ছিনিয়ে নেয় অজ্ঞান পার্টি। বাবা মোহাম্মদ আলীকে হাসপাতালে দেখতে এসে অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়ে তিনিই এখন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। ভুক্তভোগীরা এ প্রতিবেদককে জানান, ওই অজ্ঞান পার্টি একই গ্রুপের সদস্য।

খুমেক হাসপাতালের পরিচালক ডা. এ টি এম মঞ্জুর মোর্শেদ প্রতিবেদককে বলেন, ‘জরুরি বিভাগ ও বহির্বিভাগে বিভিন্ন সচেতনতামূলক তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। তারপরও রোগীরা ওই চক্রের খপ্পরে পড়লে কী করার আছে, আগে নিজেদের সচেতন হতে হবে।’ তিনি বলেন, আরো সিসি ক্যামেরা বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের ডেপুটি কমিশনার বি এম নূরুজ্জামান প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীর স্বজনরা অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়ার ঘটনা জানতে পেরে গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম হাসপাতালে ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলেছেন। আমাদের নগর গোয়েন্দা টিম ওই চক্রটি ধরতে মাঠে সক্রিয় রয়েছে। হাসপাতালে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে।

খুমেকের আবাসিক ফিজিসিয়ান (মেডিসিন বিভাগ) ডা. শৈলান্দ্রনাথ বিশ্বাস প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, বেশি মাত্রায় ঘুমের ওষুধ খাওয়ানো বা চেতননাশক স্প্রে করার কারণে ভুক্তভোগীরা অজ্ঞান হয়েছেন। এর ফলে আক্রান্ত ব্যক্তি ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অচেতন থাকেন। রোগী যদি আগে থেকেই মস্তিষ্ক, হৃদরোগ, কিডনি কিংবা লিভারের রোগে আক্রান্ত থাকেন, তাহলে তার মৃত্যুও হতে পারে।

খুমেক হাসপাতাল সূত্র জানায়, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রায়ই রোগীর স্বজনদের মোবাইল ফোন ও টাকা-পয়সা চুরির ঘটনা ঘটছে। এছাড়া এ হাসপাতালে রোগী দেখতে এসে স্বজনরা অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়ছেন। গত দেড় মাসে মোবাইল ফোন চুরি, স্বর্ণালঙ্কার চুরিসহ অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ছেন ২০ থেকে ২৫ জন। অজ্ঞান পার্টির প্রধান টার্গেট সাধারণ নিরীহ মানুষ, বয়স্ক পুরুষ ও নারী এবং মফস্বল থেকে আসা ব্যবসায়ীরা।

ভুক্তভোগী খুমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীর রানী বেগম জানান, তিনি অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়ে পুরো এক দিন অচেতন অবস্থায় ছিলেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close