একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা আগামী ২৬ এপ্রিল সপরিবারে যাবেন গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহে। আগাম টিকিট কেটেছেন, তা-ও দিন সাতেক আগে। ছুটি কাটিয়ে রাজধানীতে ফিরবেন ৩ মে। কারণ, ২৬ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকালে অফিস করে তিনি ঢাকা ছাড়বেন। পরের দুদিন ২৭ ও ২৮ এপ্রিল শুক্র-শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি। ২৯ এপ্রিল রোববার বুদ্ধপূর্ণিমার ছুটি। ৩০ এপ্রিল সোমবার এক দিনের ছুটি নিয়েছেন তিনি। ১ মে মঙ্গলবার মহান মে দিবস। পরদিন ২ মে বুধবার রয়েছে শবে বরাতের ছুটি। তাই ২৬ এপ্রিলের পর ৬ মে রোববারের আগে নগরজীবন পুরনো রূপে ফিরছে না। এদিকে ছুটির ফাঁদের কারণে বাস, ট্রেন, লঞ্চ, এমনকি আকাশপথে উড়োজাহাজের টিকিট নিয়েও কাড়াকাড়ি শুরু হয়ে গেছে। ভ্রমণপিপাসুরা গ্রামের আপন ঠিকানার পাশাপাশি কক্সবাজার, কুয়াকাটা, সিলেটের মতো পর্যটন এলাকায় পাড়ি দেবেন। তাই এসব এলাকার টিকিটের চাহিদা বেশি।

হানিফ এন্টারপ্রাইজের মহাব্যবস্থাপক মোশাররফ হোসেন বলেন, ২৬ এপ্রিলের সব টিকিট বিক্রি শেষ হয়ে গেছে। অনেকে দল বেঁধে বাস রিজার্ভ করে কক্সবাজারও যাচ্ছেন। তবে মহাসড়কগুলোতে যানজট রয়েছে। এ কারণে বাড়তি ট্রিপ দেওয়া যাবে না।

চাহিদার মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় ২৬ এপ্রিলের টিকিট ১৭ এপ্রিল বিক্রি করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। কমলাপুর রেলস্টেশনের ম্যানেজার সীতাংশু চক্রবর্তী বলেন, ২৬ ও ২৭ এপ্রিলের টিকিটের বেশ চাহিদা রয়েছে। এ ছাড়া ৩০ এপ্রিলও যাত্রীর চাপ থাকবে। তূর্ণা-নিশিথা, সুবর্ণ ও সোনার বাংলার টিকিট প্রায় শেষ। চাহিদার বিষয়টি চিন্তা করে বেশকিছু আন্তঃনগর ট্রেনে অতিরিক্ত কোচ (বগি) দেওয়া হবে।

নৌপথেও টিকিটের চাহিদা বেড়ে গেছে। তবে পটুয়াখালীতে যাত্রীর চাপ বেশি। সুন্দরবন গ্রুপের পরিচালক মো. ঝন্টু বলেন, ২৫ এপ্রিল থেকে টিকিটের চাহিদা রয়েছে ঢাকা-পটুয়াখালী রুটে। কারণ যাত্রীরা সেখান থেকে চলে যাবেন কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতে। বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের অন্যান্য রুটে চাপ রয়েছে।

দীর্ঘ ছুটির কারণে বাস, ট্রেন ও লঞ্চের চেয়ে উড়োজাহাজের টিকিটের চাহিদা যেন আরো বেশি। অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন রুটে ২৬ এপ্রিলের টিকিট বহু আগেই বিক্রি হয়ে গেছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) শাকিল মেরাজ বলেন, দেশের ভেতর চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেটে মানুষ বেশি বেড়াতে যাচ্ছে। টানা ছুটিতে এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে প্রচুর যাত্রী আন্তর্জাতিক পাঁচটি রুট কলকাতা, কাঠমান্ডু, ব্যাংকক, কুয়ালালামপুর ও সিঙ্গাপুরে যাচ্ছেন। বৈশাখে লম্বা ছুটিতে আবহাওয়া খুব একটা বাগড়া দেবে না। সকাল-দুপুর ভ্যাপসা গরম পড়লেও বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে বয়ে যেতে পারে কালবৈশাখীÑএমন পূর্বাভাস রয়েছে আবহাওয়া অধিদফতরের।

আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস বলেন, এপ্রিলের শেষে টানা বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। এ সময় কালবৈশাখীর মাত্রা বাড়তে পারে। দিনের বেলা ভ্যাপসা গরমে অস্বস্তি বোধ হবে। বিকেল থেকে সন্ধ্যা ও রাতের বেলা কালবৈশাখীসহ শিলাবৃষ্টিও হতে পারে। এ ধরনের ঝড় দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্ব ও মধ্যাঞ্চলে বেশি হয়ে থাকে।

"