জাবি প্রতিনিধি
জাবিতে ‘লাঞ্ছনা’র পাল্টাপাল্টি অভিযোগ
শিক্ষার্থীদের শাস্তি দাবি ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন
জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়ে (জাবি) গাড়ি পার্কিংকে কেন্দ্র করে দুই শিক্ষিকাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী লাঞ্ছিত করেছেন, এমন অভিযোগে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ। আজ সোমবার থেকে আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের কথা গতকাল রোববার বিভাগের এক জরুরি সভা থেকে জানানো হয়।
গত শুক্রবার বিশ^বিদ্যালয়ের বটতলার রাস্তার পাশে ব্যক্তিগত গাড়ি পার্কিং করাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের সাথে ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাহরিন ইসলাম খানের বাকবিত-া হয়। ওইদিন নাহরিন ইসলাম খান ও একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক উম্মে সায়কা দুই শিক্ষার্থী কর্তৃক ‘লাঞ্ছিত’ হন দাবি করে প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে ওইদিন রাতে ওই শিক্ষিকাদের বিরুদ্ধে অসদাচরণ, শারীরিক লাঞ্ছনা ও হুমকির অভিযোগ তুলে প্রক্টর বরাবর পাল্টা অভিযোগ দেন অভিযুক্তদের একজন আইন ও বিচার বিভাগের ৪৩ ব্যাচের ছাত্র আরমানুল ইসলাম। প্রক্টর বরাবর অভিযোগপত্রে ওই দুই শিক্ষিকা উল্লেখ করেন, আমরা দুপুরের খাবারের জন্য বটতলায় যাই। সংস্কার কাজের কারণে রাস্তা বন্ধ থাকায় গাড়ীটি রাস্তার একপাশে রাখি। তখন আরমান নামের এক শিক্ষার্থী আমার ড্রাইভারের সাথে খারাপ ব্যবহার করে, আমাদের সঙ্গেও খুবই উদ্ধত আচরণ করেন।
অন্যদিকে পাল্টা অভিযোগপত্রে আরমানুল ইসলাম খান উল্লেখ করেন, নাহরিন ইসলাম খান বটতলায় অবৈধভাবে গাড়ি রাখলে প্রথমে সেখানে নিয়োজিত গার্ড ও আনসাররা তাকে গাড়ি রাখতে নিষেধ করে। তখন তিনি গার্ডের কথা না শুনে জোর করে গাড়িটি সেখানে রাখলে আমি সহ কয়েকজন শিক্ষার্থী তাকে গাড়িটি সরিয়ে নিতে অনুরোধ করি। তিনি অনুরোধ না শুনে উল্টো তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ‘চড় দিয়ে দাঁত ফেলে’ দেবেন বলে হুমকি দেন।
এদিকে এ ঘটনায় ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের এক জরুরী সভায় আরমানুল ইসলাম ও সানাউল হকের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি করা হয়। সভায় সহকর্মীদের প্রতি সহমর্মিতা প্রদর্শন স্বরুপ আজ (সোমবার) থেকে আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। তবে পূর্বনির্ধারিত পরীক্ষাগুলো অনুষ্ঠিত হবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মো. শাহেদুর রশিদকে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তপন কুমার সাহা বলেন, ছাত্র ও শিক্ষকের ভিন্ন দুটি অভিযোগ পেয়েছি। তবে শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রক্টরিয়াল বডির তদন্ত করার এখতিয়ার না থাকায় উপাচার্যকে অভিযোগপত্রটি পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত ছাত্রের কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব পেয়েছি। অন্যজন সাবেক শিক্ষার্থী হওয়ায় শৃঙ্খলাবিধির ১২ ধারা অনুযায়ী তার বক্তব্যও রেকর্ড করা হয়েছে। দুই শিক্ষকের বক্তব্য রেকর্ড করে দ্রুত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।
"