ক্রীড়া প্রতিবেদক
রাজ্জাক ঘূর্ণিতে খুলনার বড় জয়
তার ক্যারিয়ারের শেষটা অনেক আগেই দেখে ফেলেছিলেন নিন্দুকেরা। কিন্তু জাতীয় দলকে এখনো কিছু দেওয়ার বাকি আছে আবদুুর রাজ্জাকের। কাল জাতীয় ক্রিকেট লিগে দ্যুতি ছড়িয়ে সেটা আরো একবার প্রমাণ করলেন এই স্পিনার। তার দুর্দান্ত ঘূর্ণি জাদুতে বরিশাল বিভাগকে ২৩৯ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে খুলনা বিভাগ।
প্রথম স্তরের ম্যাচে সোমবার কাল শেষ দিনে বরিশালের চ্যালেঞ্জ ছিল ৯০ ওভার টিকে থাকার। কিন্তু টিকতে পারল না তারা ৫০ ওভারও। গুটিয়ে গেছে ১৬৩ রানেই। খুলনা জিতল হেসেখেলেই। জাতীয় লিগের দ্বিতীয় রাউন্ডে জয় পাওয়া একমাত্র দল মাশরাফি-রাজ্জাকের দলই।
১৭ ওভার বোলিং করে ৩২ রানে ৫ উইকেট নিয়েছেন রাজ্জাক। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এটি তার ২৯তম ৫ উইকেট। বাংলাদেশের স্পিনারদের মধ্যে ৩০ বার ৫ উইকেট নিয়ে ওপরে আছেন কেবল এনামুল হক জুনিয়র। বরিশাল দিন শুরু করেছিল বিনা উইকেটে ৩২ রান নিয়ে। শেষ দিনে উদ্বোধনী জুটি টিকে যায় আরো কিছুক্ষণ।
রাফসান আল মাহমুদকে ফিরিয়ে ৫৮ রানের জুটি ভাঙেন মইনুল ইসলাম। বাঁহাতি স্পিনার এরপর দ্রুত নেন আরো দুটি উইকেট। সেই ধাক্কা আর সামাল দিতে পারেনি বরিশাল। বাকি সময়টুকুতে তাদের ভোগান খুলনা অধিনায়ক রাজ্জাক।
বরিশালের হয়ে লড়াই করেছেন কেবল ওপেনার ফজলে মাহমুদ রাব্বি। বাঁহাতি ওপেনার এগিয়ে যাচ্ছিলেন সেঞ্চুরির দিকে। কিন্তু একের পর এক সঙ্গী হারিয়ে দিশাহারা তিনি। শেষ পর্যন্ত শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হলেন ৮৮ রানে। তাকে স্টাম্পড করেই রাজ্জাক পূর্ণ করলেন ৫ উইকেট। প্রথম ইনিংসের চারটিসহ ম্যাচে ৯ উইকেট রাজ্জাকের। তবে প্রথম ইনিংসে ১৭৭ রানের পাশাপাশি দুটি উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা মেহেদি হাসান।
ঢাকা-বিভাগ ও রংপুর বিভাগের ম্যাচটি অনুমিতভাবেই ড্র হয়েছে। তবে ম্যাচের ফল ছাপিয়ে এদিন পাদপ্রদীপে উঠে এলেন নাসির হোসেন। সাদা পোশাকে ব্যাট হাতে তুললেন ঝড়। ড্রয়ের পথে এগোতে থাকা ম্যাচটা যা একটু উত্তেজনা ছড়াল নাসিরের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়েই। কাল মাত্র ২৬ বলে হাফসেঞ্চুরি করলেন রংপুরের এই ব্যাটসম্যান। আউট হন ৩৭ বলে ৫২ রান করে।
জাতীয় লিগের দ্বিতীয় স্তরের এই ম্যাচে সোমবার প্রথম ইনিংসে রাজশাহী অলআউট ৪১৫ রানে। চট্টগ্রাম তুলেছিল ৪৩২। দ্বিতীয় ইনিংসে চট্টগ্রাম ১ ওভার ব্যাট করার পরই ম্যাচ ড্র। ১১৩ বলে ৬০ রান করেন আরেক অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান ফরহাদ। নিচের দিকে ফরহাদ রেজা ও মুক্তার আলির ছোট দুটি ইনিংসে রাজশাহী পার হয় ৪০০। ম্যাচ নিরুত্তাপ ড্র। ড্র হয়েছে দ্বিতীয় স্তরে ঢাকা মেট্রো ও সিলেটের ম্যাচও। বৃষ্টি আর ভেজা আউটফিল্ড মিলিয়ে কক্সবাজারের ম্যাচটিতে চারদিনে খেলা হয়নি একটি বলও।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
খুলনা বিভাগ-বরিশাল বিভাগ
খুলনা প্রথম ইনিংস : ৪৪৪
বরিশাল প্রথম ইনিংস : ২৫৮
খুলনা দ্বিতীয় ইনিংস : ২১৬/৭ (ডি.)
বরিশাল ২য় ইনিংস : (লক্ষ্য ৪০৩) ৬১ ওভার, ১৬৩ (ফজলে রাব্বি ৮৮, রাফসান ২৭, শামসুল ১, সালমান ৩, আল আমিন ১০, সোহাগ ২, নুরুজ্জামান ১৬, আবু সায়েম ০. রাব্বি ০, মনির ৮, তানভির ১*; মাশরাফি ০/১৪, মেহেদি ১/৭২, আল আমিন ০/৬, রাজ্জাক ৫/৩২, রবি ০/৫, জিয়াউর ০/১১, মইনুল ৩/১৯)।
ফল : খুলনা ২৩৯ রানে জয়ী
রংপুর বিভাগ-ঢাকা বিভাগ
রংপুর প্রথম ইনিংস : ৫২.৩ ওভার, ২৩৭/২ (ডি.) (সায়মন ৬৩ আহত অবসর, জাভেদ ৫৩ আহত অবসর, শুভ ৫৬*, নাঈম ১১, নাসির ৫২; শাহাদাত ০/১৩, সবুজ ১/৪৬, অপু ০/৫৮, শুভাগত ০/১৬, তাইবুর ০/২৫, মজিদ ০/৩২, জয়রাজ ০/৩০,
রনি ০/১৫)।
ঢাকা প্রথম ইনিংস : ৪৪ ওভারে ১৫০/৩ (মজিদ ৩, রনি ৬০, জয়রাজ ৪৫, রকিবুল ৮*, জাহিদুজ্জামান ২১*; সাজেদুল ০/১৮, সাদ্দাম ১/১৬, আরিফুল ০/১৫, নাসির ০/৫, তানবীর ০/৪৪, শুভ ২/২৮, মাহমুদুল ০/১৯)।
ফল : ম্যাচ ড্র
চট্টগ্রাম বিভাগ-রাজশাহী বিভাগ
চট্টগ্রাম প্রথম ইনিংস : ৪৩২
রাজশাহী প্রথম ইনিংস : ১১৮.৩ ওভারে ৪১৫ (আগের দিন ১৪৭/১) (মাইশুকুর ৩৬, জহুরুল ৭৯, শান্ত ৩৮, জুনায়েদ ৭৭, ফরহাদ ৬০, হামিদুল ১, ফরহাদ রেজা ২৯, সানজামুল ১১, মুক্তার ৩১, সাকলাইন ১১*, শরিফুল ৭ ; সাইফুদ্দিন ৩/৯১, রানা ২/৭০, বেলাল ১/৫৯, ইমরুল ১/৫৫, রনি ২/৮০, কাজি কামরুল ১/৩২, তাসামুল ০/৮)।
চট্টগ্রাম দ্বিতীয় ইনিংস : ১ ওভার, ১/০
ফল : ম্যাচ ড্র
"