ক্রীড়া ডেস্ক

  ১৫ জুলাই, ২০২০

মরগানের স্মৃতিচারণ

অবিস্মরণীয় ফাইনালের এক বছর

করোনার কারণে বিশ্ব ক্রিকেটে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। পাল্টে গেছে অনেক নিয়ম। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অনেক ক্রিকেটার। একজন অবশ্য এ সময়ে বেশ লাভবান হয়েছেন। তিনি ইয়ন মরগান, ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক। লকডাউনে ঘরে বসে বসে ২০১৯ বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে উত্তেজনার সেই ফাইনাল বেশ কয়েকবার দেখার সুযোগ মিলেছে তার। গতকাল আবার সেই অবিস্মরণীয় ফাইনালের অর্থাৎ ইংলিশদের বিশ্ব জয়ের এক বছর পূর্তি হয়েছে।

২০১৫ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের কাছে হেরে গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায় নেওয়ার পর চার বছরের জন্য কঠিন এক চ্যালেঞ্জ নিয়েছিল ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)। চার বছর আগের বিশ্বকাপে মরগান ব্যর্থ হলেও তাকেই অধিনায়ক করে পুরো দলের আবহটা পরিবর্তন করে ফেলে ইংলিশরা। টি-টোয়েন্টি আর ওয়ানডে ক্রিকেটের দারুণ মিশেলে মরগানের হাত ধরে পাল্টে যায় দলটির চেহারা। সেই পরিবর্তনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন সাবেক আইরিশ ব্যাটসম্যান, ইংলিশদের দিয়েছেন প্রথম ওয়ানডে বিশ্বকাপের স্বাদ।

মরগানকে পেয়ে পাল্টে গেছে ক্রিকেট নিয়ে ইংলিশদের ধ্যানধারণাও। লকডাউনে প্রায় সময়ই ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপ ফাইনাল টিভিতে প্রচারিত হয়েছে। খেলাটা দেখেছেন এখন পর্যন্ত ৮০ লাখেরও বেশি মানুষ। ২০০৫ অ্যাশেজের পর এটাই কোনো ম্যাচ, যা এত বেশি দর্শক পেয়েছে। সেই ৮০ লাখের একজন নিয়মিত দর্শক হলেন মরগান। ফাইনালের প্রতিটা মুহূর্ত খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেছেন বার বার।

শিরোপা জয়ের পর পাল্টে গেছে মরগানের জীবনের গতিও। ইংলিশ ফুটবলারদের পাশাপাশি ক্রিকেটার হয়েও তিনি রীতিমতো একজন মহাতারকা। যেখানেই যাচ্ছেন মানুষ ছুটে আসছে কথা বলার জন্য, আবদার করছে সেলফি তোলার। এই তারকা খ্যাতিটা বেশ উপভোগ করছেন বলেই ইএসপিএন ক্রিকইনফোকে জানিয়েছেন ইংলিশ দলপতি, ‘আমার মনে হয় খেলাটা মানুষের মনে বেশ জায়গা করে নিতে পেরেছে। ক্যাফে কিংবা পানশালা, যেখানেই যাচ্ছি মানুষজন আমাদের দেখে ছুটে আসছে। শুধু দেশেই নয়, ছুটি কাটাতে গিয়ে টেনিস কোর্ট কিংবা গ্রাঁ প্রি দেখতে যেয়ে অবাক হয়ে শুনছি মানুষ চিৎকার করে বলছে তারা খেলাটা দেখেছে। এটাই খেলার মজা যে আপনি শিরোপা জিতলে মানুষ আপনাকে ভালোবাসবেই। ক্রিকেট হঠাৎ করেই যেন শীর্ষ পর্যায়ে উঠে গেছে, আর আমার জীবনও পাল্টে গেছে। মানুষ এখন আমাকে আরো বেশি করে জানে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আপনি যখন বিশ্বকাপ কিংবা জীবনকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য পরিশ্রম করবেন, তখন নিজ থেকেই ভালো লাগবে। এটাই মানুষের প্রকৃতি, পরিশ্রম করলে নিজ থেকেই একটা ভালো লাগা চলে আসে। কিন্তু সেই ফাইনালটা যেন হঠাৎই নাটকীয় হয়ে উঠেছে। ব্রিটিশ ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি দেখানো খেলাগুলোর এটি একটি।’

যতবারই ম্যাচটা দেখেন, ততবারই রুদ্ধশ্বাস পরিস্থিতি তৈরি হয় মরগানের মাঝে। বেন স্টোকস সেদিন রুখে না দাঁড়ালে হয়তো বিশ্বকাপ জেতাই হতো না ইংলিশদের। একদম শেষদিকে স্টোকস যখন বল আকাশে উড়িয়ে দিয়েছিলেন, সেই বল ধরেও ট্রেন্ট বোল্ট বাউন্ডারি লাইন ছোঁয়ায় ছক্কা হয়ে গিয়েছিল, সেই মুহূর্ত ভাবলে এখনো গা শিউরে ওঠে মরগানের, ‘কেবল এই একটা মুহূর্ত মনে হয় মাত্র ১ সেকেন্ড দেখেছি। জিমি নিশাম বেন স্টোকসকে বল করছিল, সে সেøা বল করেছিল। স্টোকস বলটা লংঅন দিয়ে বাউন্ডারি পার করতে চেয়েছিল। আমার মনে হচ্ছিল বলটা ১ মিনিট ধরে আকাশে ভাসছে। যখন আপনি লম্বা বাউন্ডারি দিয়ে মারবেন, আপনাকে নিশ্চিত হয়েই মারতে হবে যে বলটা সীমানা পার হবে। আমার মনে হচ্ছিল বেন বুঝি এবার আউট, আমাদের তখনো ১৫ রান লাগবে। তখন ১ সেকেন্ডের জন্য আমার মনে হয়েছিল সব শেষ, আমরা মৃত এবং কবর হয়ে গেছে!’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close