ক্রীড়া ডেস্ক

  ১৩ মার্চ, ২০১৯

ফের ইনিংস হার

হোয়াইটওয়াশের মুখে বাংলাদেশ

প্রথম টেস্টে তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সেঞ্চুরির পরও ইনিংস হার ঠেকাতে পারেনি বাংলাদেশ। হ্যামিল্টন চেয়ে ওয়েলিংটনে আরো বড় পরীক্ষা দিতে হবে টাইগারদেরÑ এমনটাই ধারণা করা হচ্ছিল। সফরকারীদের পক্ষে ম্যাচ জয়ের স্বপ্ন দেখাটা ছিল অমূলক। তবে প্রকৃতি মাহমুদউল্লাহদের ড্র করার সুযোগ এনে দিয়েছিল। কিন্তু সেটাও ছাতছাড়া করল বাংলাদেশ। প্রথম দুই দিন বৃষ্টি খেয়ে ফেলার পরও তিন দিনেই হারল টাইগাররা।

সেশনের হিসেব করলে দুই দিনের একটু বেশি। ৭ সেশনেই নিউজিল্যান্ডের কাছে ইনিংস ও ১২ রানের ব্যবধানে হেরে গেছে বাংলাদেশ। পরপর দুটি টেস্টে হেরে অতিথিরা এখন হোয়াইটওয়াশের মুখে। এক ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতে নিল কিউইরা। আগামী ১৬ মার্চ ক্রাইস্টচার্চে তৃতীয় ও শেষ টেস্ট অনুষ্ঠিত হবে।

কাল ভোরে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ গুটিয়ে গেছে ২০৯ রানে। প্রথম ইনিংসের চেয়ে ২ রান কম। পরিণাম আরেকটি বিব্রতকর হার সঙ্গী হলো টাইগারদের। পঞ্চম ও শেষ দিনে নিউজিল্যান্ডকে পুনরায় ব্যাটিংয়ে নামাতে মাহমুদউল্লাহদের করতে হতো ১৪১ রান। ড্র করতে হলো কাটিয়ে দিতে হতো দিনের পুরোটা সময়। কিন্তু দুটির একটিও পারল না বাংলাদেশ। প্রথম সেশনেই গুটিয়ে গেছে তারা। বিব্রতকর হার এড়াতে অতিথিদের সম্বল ছিল ৭ উইকেট। দিনের শুরুতে টাইগারদের ব্যাটিং ভালোই আশা জাগিয়েছিল। প্রথম ৪০ মিনিটে নির্বিঘেœ কাটিয়ে দেন আগের দিন অজেয় থাকা সৌম্য সরকার ও মোহাম্মদ মিঠুন। এরপরই মড়ক লাগে বাংলাদেশের ইনিংসে।

নিল ওয়াগনার ও ট্রেন্ট বোল্টের তোপে সাজঘরে আসা-যাওয়ার মিছিল লেগে যায় মাহদউল্লাহদের। ওয়েলিংটনের সবুজ উইকেটে দাঁড়াতেই পারেনি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। দ্বিতীয় ইনিংসে সর্বোচ্চ ৬৭ রানের ইনিংস খেলে কিছুটা যা লড়াই করেছেন সফরকারী অধিনায়ক। মিঠুন ফিরেছেন ৪৭ রানে। তার সঙ্গী সৌম্য বিদায় নিয়েছেন ২৮ রানে। শর্টস খেলার প্রবণতাই লজ্জার হারের মুখে ঠেলে দিয়েছে বাংলাদেশ। কাল দলের প্রায় সব ব্যাটসম্যান ঝুঁকি নিয়ে নিল ওয়াগনার ও ট্রেন্ট বোল্টকে শর্টস খেলেছেন। আউটও হয়েছেন তারা। এসব আত্মঘাতী সিদ্ধান্তের মাশুল দিয়েছে টাইগাররা। উইকেট বিলিয়ে দেওয়ার উৎসবে ৫ উইকেট নিয়েছেন ওয়াগনার। চারটি শিকার করেছেন বোল্ট। যদিও ম্যাচ সেরা হয়েছেন প্রথম ইনিংসে দ্বিশতক করা রস টেলর।

সোমবার বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৩টায় তিন উইকেটে ৮০ রানে পঞ্চম ও শেষ দিনের খেলা শুরু করে টাইগাররা। সৌম্য ও মিঠুনের চতুর্থ উইকেট জুটি বিচ্ছিন্ন হয় ৫৭ রানে। এই জুটিই বাংলাদেশকে ড্রয়ের আশা দেখিয়েছিল। সেই আশা নিরাশায় পরিণত হতে সময় লাগল না।

নিঃশর্ত এ আত্মসমর্পণে স্বাভাবিকভাবেই হতাশ বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। সিরিজ হারের পর সাংবাদিক বৈঠকে ব্যাটসম্যানদের ওপর দায় চাপিয়েছেন টাইগার কাপ্তান। বলেছেন, ‘নো বলে যেভাবে শুরু করেছিলাম, তামিম ভালো ব্যাটিং করছিল। প্রথম ইনিংসে সাদমান-তামিমের ভালো শুরু হয়েছিল। প্রথম টেস্টেও তাই হয়েছিল। ইনিংসের মাঝে ওয়াগনার যখন তার ওই বাউন্সার-থিওরি কাজে লাগাতে শুরু করলেন কিছুক্ষণ ভালো খেলার পর আর পারিনি। আরেকটু সাহস নিয়ে খেলতে হবে। দ্বিধায় থেকে আমরা অনেক ব্যাটসম্যান এই ভুল করেছি। নিবেদিত থাকছি না বা দোনো মনায় ভুগছি, মারব কি মারব না। এই উইকেটে এটা করা ঠিক না। যদি শট খেলতে চান খেলতে হবে অথবা বাউন্সারের সামনে টিকে থাকতে হবে।’

দুই ম্যাচ হেরে বাংলাদেশ এখন হোয়াইটওয়াশের মুখে। বাংলাদেশ রক্ষা পাবে কি না, তা বলে দেবে সময়। তবে কালকের হারের পর বেশ হতাশ হয়েছেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। তাকিয়ে আছেন শেষ টেস্টের দিকে, ‘পরের টেস্টে এমন উইকেট থাকতে পারে, নাও পারে, ক্রাইস্টচার্চের উইকেট একটু গতিময় আছে। একই কন্ডিশন হয়তো পাব। আমাদের ব্যাটসম্যানদের আরো দায়িত্বশীল হতে হবে। অনভিজ্ঞ বোলিং আক্রমণ, তিনটা নতুন পেসার, ওদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। ব্যাটসম্যানদের দোষই বেশি। আড়াই দিনে আমরা দুবার অলআউট হয়েছি, যেটি খুবই হতাশার।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close