ক্রীড়া ডেস্ক

  ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

তবু জয়ের আশায় বাংলাদেশ

অনেক স্বপ্ন নিয়ে রাগবির দেশে পাড়ি জমিয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। সেই স্বপ্ন ক্রমেই দিবাস্বপ্ন হয়ে উঠেছে। এক ম্যাচ বাকি থাকতেই নিউজিল্যান্ডের কাছে ওয়ানডে সিরিজ হেরেছে টাইগাররা। প্রথম দুই ওয়ানডে ম্যাচে ৮ উইকেটে হেরে মাশরাফির এখন হোয়াইটওয়াশের মুখে। আজ ভোরে কিউইদের বিরুদ্ধে ধবলধোলাই ঠেকানোর লড়াইয়ে নেমেছে বাংলাদেশ।

পরজায় খেলারই একটা অংশ। কিন্তু মাশরাফিদের হারের ধরণটা ভয়ঙ্কর। প্রথম দুই ম্যাচেই দুই-একজন ছাড়া কেউ-ই দাঁড়াতে পারেননি নিউজিল্যান্ডের দুর্দান্ত পেস বিভাগের সামনে। ব্যাটিংয়ের দৈন্যদশা বোলিং বিভাগেও আছে। দুই ম্যাচের একটিতেও কিউই ব্যাটসম্যানদের পরীক্ষায় ফেলতে পারেননি মুস্তাফিজ-মাশরাফিরা। তাদের ওপর ছড়িয়ে ঘুরিয়ে ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন মার্টিন গাপটিল। আজও টাইগারদের সামনে বড় প্রতিপক্ষ হয়ে উঠতে পারেন বিধ্বংসী এই স্বাগতিক ওপেনার।

আগেরবার নিউজিল্যান্ড সফরে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল বাংলাদেশ দল। সেবার অবশ্য সীমিত ওভারের প্রায়সব ম্যাচেই নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলেছিল টাইগাররা। লড়াকু মনোভাবের সেই আশা থেকেই জয়ের স্বপ্ন দেখছিল বাংলাদেশ। কিন্তু জয় তো ঢের দূরের পথ, এবার উইলিয়ামসন-গাপটিলদের সামনে দাঁড়াতেই পারছে না টাইগাররা। তবু শেষ ম্যাচে জয়ের আশা করছে বাংলাদেশ। এ জন্য অতীত থেকে অনুপ্রেরণা নিচ্ছে টাইগাররা।

কাল ম্যাচ পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে সফরকারী অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা বলেছেন, ‘গত বছর আয়ারল্যান্ডে আমরা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেছিলাম। আমরা কিন্তু ম্যাচটা জিতেছি। আবার আয়ারল্যান্ড থেকে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে গিয়েও আমরা নিউজিল্যান্ডকে হারিয়েছিলাম। অবুভূতিটা অসাধারণ ছিল। আমরা আবারও এটাই করতে চাই। কিন্তু সব সময়ই যেটি বলি, নিউজিল্যান্ডের মাটিতে নিউজিল্যান্ডকে হারানোটা সব সময়ই কঠিন। তবে ভালো লাগছে যে উইকেট কিন্তু বেশ ভালো। আশা করছি, কাল (আজ) আমরা এখানে ভালো খেলব।’ নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টানা ১২ ম্যাচ হারার পর জয়ের স্বপ্ন দেখাটা সত্যিই অভাবনীয় কিছুর আশা।

কাজটা অবশ্যই কঠিন। এবারের নিউজিল্যান্ড সফরে এখন পর্যন্ত ব্যাটিংটা খুব ভালো হয়নি। দুই ম্যাচে যিনি রান করেছেন, সেই মোহাম্মদ মিঠুন ডানেডিনে খেলতে পারবেন না হ্যামস্ট্রিংয়ের ইনজুরির কারণে। তামিম ইকবাল দুই ম্যাচেই ব্যর্থ। বোলাররা এবারের সিরিজে এখনো পর্যন্ত যে বোলিং করেছেন, সাম্প্রতিক ইতিহাসে এত নির্বিষ বোলিং বাংলাদেশি বোলারদের কাছ থেকে আর দেখা যায়নি। মাশরাফি এক কিছুর পরেও কীভাবে জয়ের আশা করেন সেটার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন, ‘আমি অবশ্যই জয়ের কথা বলব। ২০১৭ সালে আমরা আয়ারল্যান্ডে শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়েছিলাম। আসলে সব সময় যেটি আশা করা হয়, সেটি কিন্তু হয় না। এ দেশের মাটিতে ম্যাচ জেতাটা অনেক কঠিন হয়তো, সেটি আমরা জানি। তারপরও আমরা জিততে চাই।’

প্রথম দুই ওয়ানডে থেকে বাংলাদেশের প্রাপ্তি বলতে মিঠুনের দুটি হাফসেঞ্চুরি। এর বাইরে সফরের শুরুটা টাইগারদের জন্য নেতিবাচকই। তবে এমনটা মানতে নারাজ টাইগার দলপতি। কাল তিনি বলেছেন, ‘এই সিরিজে আমরা যেভাবে খেলতে চেয়েছিলাম। সেটি খেলতে পারিনি। অনেক পরিকল্পনাই আমরা বাস্তবায়ন করতে পারিনি। এর মানে এই না যে সামনে এগোনোর সুযোগ নেই। এই সফরে অনেক দুর্বল দিকগুলো বেরিয়ে এসেছে। বিশ্বকাপের ১০০ দিন (৯৯ দিনি) বাকি আছে। এই দুর্বল দিকগুলো নিয়ে তো কাজ করার অনেক সুযোগ থাকছে।’

অবশ্য মিঠুন খেলতে না পারলেও মুশফিকুর রহিমের চোট গুরুতর নয়। আজ মাঠে নামার কথা রয়েছে এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যানের। মিঠুনের ইনজুরির কারণে ডানেডিনের শেষ ম্যাচে মুমিনুল হককে ডাকা হয়েছে। মিঠুনের চোটের পরপরই স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে দলে ব্যাটসম্যানের অভাব। মাশরাফি পুরো ব্যাপারটিরই ব্যাখ্যা দিলেন, ‘দলে অতিরিক্ত একজন ব্যাটসম্যান থাকলে ভালো হতো। সাকিবকে ধরলে কিন্তু অতিরিক্ত ব্যাটসম্যান ছিল। মিঠুন ছিল, সাব্বির ছিল। সাকিবের চোটের পর অতিরিক্ত ব্যাটসম্যান আনা হয়নি। দ্বিধায় ছিলাম একজন বাঁ-হাতি স্পিনার আনা হবে কি না, সে শেষ মুহূর্তে চোটে পড়ায় বদলি আনা সম্ভব হয়নি।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close