ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৮

রাজ্জাকের ৭ উইকেট

বিসিএলে সেঞ্চুরি মিসের মহড়া

বহু দিন ধরে জাতীয় দলের বাইরে আছেন আবদুর রাজ্জাক। সীমিত ওভারের দুই ফরমেট থেকে আনুষ্ঠানিক বিদায় নিতে না পারলেও সাদা বলের ক্রিকেটে যে তার ক্যারিয়ার শেষ সেটা একরকম নিশ্চিত। রাজ্জাকের নজরে শুধুই লাল বলের ক্রিকেট। এখনো টেস্ট দলে ফেরার স্বপ্ন দেখে যাচ্ছেন তিনি। নিয়মিতই আলো ছড়াচ্ছেন ঘরোয়া ক্রিকেটে। তবু নির্বাচকদের কাছে উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছেন বাঁ-হাতি এই স্পিনার।

রাজ্জাক অবশ্য নিজের কাজটা ঠিকঠাক করে যাচ্ছেন। আবারো বুড়ো হাড়ের ভেলকি দেখালেন জাতীয় দলের বাইরে থাকা এই ক্রিকেটার। কাল বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের (বিসিএল) ষষ্ঠ ও শেষ রাউন্ডের প্রথম দিনেই জ্বলে উঠেছেন রাজ্জাক। কাল চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে তুলে নিয়েছেন ৭ উইকেট। অধিনায়কের দুর্দান্ত বোলিং তোপে উত্তরাঞ্চলকে ২৯৩ রানে গুটিয়ে দিয়েছে দক্ষিণাঞ্চল। জবাব দিতে নেমে ১ উইকেটে ২১ রানে প্রথম দিনের খেলা শেষ করেছে দক্ষিণাঞ্চল। আজ দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করবেন এনামুল হক (৭*) এবং ফজলে মাহমুদ রাব্বি (৮*)। মাত্র ১ রান করে সানজামুল ইসলামের এলবির শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে গেছেন ওপেনার শাহরিয়ার নাফীস।

টস জিতে আগে ব্যাট করতে নামা উত্তরাঞ্চলের শুরুটা ভালোই হয়েছিল। উদ্বোধনী জুটিতে তারা করে ৬০ রান। ২৯ রান করা মিজানুর রহমানকে সাজঘরে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন রাজ্জাক। তার সঙ্গী জুনায়েদ খানকে ৪৪ রানে আউট করেছেন মেহেদি হাসান। অথচ ১ উইকেটে ৯৬ রান করা উত্তরাঞ্চল বড় সংগ্রহেরই আভাস দিচ্ছিল। কিন্তু মাত্র ১৩ রানের ব্যবধানে ৪ উইকেট খুইয়ে বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয় তারা। কোনোরকম দুই অঙ্ক ছুঁয়ে বিদায় নেন ধীমান ঘোষ। পরে সপ্তম উইকেটে জিয়াউর রহমান ও আরিফুল ১৩৫ রানের জুটি গড়ে প্রতিরোধ গড়েন। জুটি বিচ্ছিন্ন হয় ৬৯ রানে জিয়া আউট হলে। ফেরার আগে ১০৩ বলে ৭টি চার ও দুটি ছক্কা মেরেছিলেন তিনি।

জিয়া আউট হতেই আরেক দফা ছন্দপতন হয় উত্তরাঞ্চলের। ২২ রানে শেষ ৪ উইকেট হারিয়ে ২৯৩ রানে গুটিয়ে যায় তারা। উত্তরাঞ্চলের লোয়ার অর্ডারেও ধস নামান রাজ্জাক। তার কারণেই সেঞ্চুরি পাননি আরিফুল। সঙ্গীর অভাবে সেঞ্চুরি হাতছাড়া করতে চাননি তিনি। চড়াও হন দক্ষিণাঞ্চলের বোলারদের ওপর। সেটাই কাল হয়ে তার জন্য। শতকের খুব কাছ থেকে ফিরে এসেছেন আরিফুল। তার আফসোস মাত্র ২ রানের। ব্যক্তিগত ৯৮ রানে রাজ্জাকের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে যান তিনি। ১৫১ বলে ৬ চার ও ৩ ছক্কায় ইনিংসটা সাজিয়েছিলেন এলবিডব্লিউর ফাঁদে পা দেওয়া আরিফুল।

আরিফুলের মতো আক্ষেপ নিয়ে উইকেট ছেড়ে গেছেন জাতীয় দলের বাইরে থাকা দুই ক্রিকেটার মুমিনুল হক, ইমরুল কায়েসও। আশা জাগিয়েও সেঞ্চুরি পাননি এই দুজন। ইমরুল ৭৮ এবং মুমিনুল ৮২ রানে সাজঘরে ফিরে গেছেন। জাকির হোসেন আউট

হয়েছেন ৫৭ রানে। তবে সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়ে রেখেছেন মাহমুদুল ইসলাম। ৭৪ রানে অপরাজিত থেকে প্রথম দিনের খেলা শেষ করেছেন তিনি। সিলেট আন্তর্জাতিক

ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এই চারজনের

হাফসেঞ্চুরির ওপর দাঁড়িয়ে প্রথম ইনিংসে বড় সংগ্রহ করেছে পূর্বাঞ্চল। দিন শেষে ৮

উইকেটে ৩৮০ রান করেছে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নামা দলটি।

যদিও মধ্যাঞ্চলের বিপক্ষে শুরুটা ভালো হয়নি পূর্বাঞ্চলের। রনি তালুকদার ফিরে যান সাতসকালেই। পরে দলকে এগিয়ে নিয়ে যায় ইমরুল ও মুমিনুলের ১৩৬ রানের জুটি। আগের ম্যাচে ব্যাট ঝড় তোলা মোহাম্মদ আশরাফুল এদিন মাত্র ১৩ রানে ফিরে গেছেন। টপাটপ কয়েকটা উইকেট হারানোর পর চাপে পড়ে পূর্বাঞ্চল। সেই চাপটা সামলে নেন জাকির ও মাহমুদুল ১০০ রানের জুটি গড়ে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

উত্তরাঞ্চল-দক্ষিণাঞ্চল

উত্তরাঞ্চল ১ম ইনিংস : ৮৩.৪ ওভার, ২৯৩

(মিজানুর ২৯, জুনায়েদ ৪৪, ফরহাদ ২৪, আরিফুল ৯৮, জিয়া ৬৯; শফিউল ১/৭৩, মেহেদি ১/৪৭, রাজ্জাক ৭/৬৯, নাহিদুল ১/৩৫)

দক্ষিণাঞ্চল ১ম ইনিংস : ৬ ওভার, ২১/১

(এনামুল ৭*, মাহমুদ ৮*; সানজামুল ১/৭)

পূর্বাঞ্চল-মধ্যাঞ্চল

পূর্বাঞ্চল ১ম ইনিংস : ওভার, ৩৮০/৮

(ইমরুল ৭৮, মুমিনুল ৮২, ইয়াসির ৩৯, মাহমুদুল ৭৪*, জাকির ৫৭, তাইজুল ৩২; তাসকিন ২/৭৮, আবু হায়দার ২/৬৯, মোসাদ্দেক ২/৯৭, মোশাররফ ২/৮৪)

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close