ক্রীড়া প্রতিবেদক
খেলাঘর-রূপগঞ্জ-অগ্রণী ব্যাংকের জয়
প্রিমিয়ার ডিভিশন ঢাকা ক্রিকেট লিগে অঘটনের শিকার হলো শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। কাল শেখ জামালকে ৬ উইকেটে হারিয়ে দিয়েছে খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতি। মিরপুরে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে শেখ জামালকে মাত্র ১৬৭ রানে গুটিয়ে দেয় খেলাঘর। দলীয় সর্বোচ্চ ৫২ রান করেন তানভির হায়দার।
ম্যাচের শুরুতেই বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয় শেখ জামাল। ৬৯ রানের মধ্যে হারায় ৬টি উইকেট। সপ্তম উইকেট জুটিতে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন আল-আমিন এবং তানভির। কিন্তু ২৭ রানের মধ্যে শেষ ৪ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে শেখ জামাল। খেলাঘরের পক্ষে ৪টি উইকেট নেন তানভির। ৩টি শিকার আনজুমের।
ব্যাট করতে নেমে ৭০ রানে ৩ উইকেট হারায় খেলাঘর। কিন্তু রাফসান আল মাহমুদ ও আল মেনারিয়ার ৯৭ রানের জুটিতে সাময়িক ভয়টা কাটিয়ে ওঠে তারা। দলকে জয়ের সন্নিকটে পৌঁছে দিয়ে ৪৯ রানে আউট হন রাফসান। ৫৮ রানে অজেয় ছিলেন মেনারিয়া। খেলাঘর জিতল ১০ ওভার হাতে রেখেই। এ জয়ের ফলে ৯ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের পাঁচে উঠে গেছে খেলাঘর। পক্ষান্তরে ৮ ম্যাচে ৯ পয়েন্ট শেখ জামালের।
এই রাউন্ডে জয় পেয়েছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জও। কলাবাগান ক্রীড়া চক্রকে ২৬ রানে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলের দুই নম্বরেও উঠে এসেছে তারা। ৯ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট রূপগঞ্জের। ১৪ পয়েন্ট নিয়ে সবার ওপরে আবাহনী। সমান ম্যাচে সপ্তম পরাজয়ের স্বাদ পেল কলাবাগান।
রূপগঞ্জের দারুণ জয়ের রূপকার সালাউদ্দিন পাপ্পু। তার দুর্দান্ত সেঞ্চুরির ওপর দাঁড়িয়ে ৫ উইকেটে ৩১৪ রানের পাহাড় গড়ে রূপগঞ্জ। জবাব দিতে নেমে ইনিংসের এক বল বাকি থাকতে ২৮৮ রানে থেমে যায় কলাবাগানের ইনিংস।
বিকেএসপিতে দ্বিতীয় উইকেটে মোহাম্মদ নাইমের সঙ্গে পাপ্পুর ১৫০ রানের জুটি দলকে বড় সংগ্রহের ভিতটা গড়ে দেয়। পাপ্পু ফিরেছেন ১২৫ রানের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসে। ৯৫ বলের ইনিংসে ১২টি চার ও ৮টি ছক্কা হাঁকান তিনি। অধিনায়ক নাঈম ৫৩ বলে ৬১ রানে অপরাজিত ছিলেন। কঠিন লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শ্রীভাটস গোস্বামী ও মোহাম্মদ আশরাফুল এগিয়ে নেন কলাবাগানকে। লিগে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা ভারতীয় ওপেনার গোসামি ৭টি চারে ৭৫ রান করেন। আশরাফুল ফেরেন ৬৭ বলে ৬৪ রান করে। কিন্তু এ দুজনের বিদায়ের পর পরিস্থিতির দাবি মিটিয়ে ব্যাট চালাতে পারেননি কলবাগানের অন্য ব্যাটসম্যানরা।
পাপ্পুর শতক কাজে লাগলেও ম্লান হয়ে গেছে মিজানুর রহমানের সেঞ্চুরিটা। কাল জুনায়েদ সিদ্দিকির সঙ্গে ২০০ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়ে দলকে বড় সংগ্রহের ভিতটাও এনে দিয়েছিলেন মিজানুর। কিন্তু ৩০০ রান করতে পারেনি ব্রাদার্স ইউনিয়ন। অগ্রণী ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে ৬ উইকেটে ২৮৬ রান তুলতে সক্ষম হয় তারা। জবাব দিতে নেমে চার ফিফটিতে পাঁচ বল বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় অগ্রণী ব্যাংক। টানা পাঁচ ম্যাচ হারের পর অবশেষে জয়ে ফিরল আবদুর রাজ্জাকের দল।
১২০ বলে ৯টি চার ও তিনটি ছক্কায় ১০২ রান করা মিজানুরকে ফিরিয়ে উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন শফিউল ইসলাম। ডানহাতি এই পেসার সেঞ্চুরির আগেই থামান জুনায়েদকে। বাঁ-হাতি এই ওপেনার ১০৩ বলে করেন ৯২ রান। দেবব্রত দাস, অলক কাপালী ও ইয়াসির আলী চৌধুরী ফিরেন দ্রুত। শেষের দিকে ২৩ বলে মাইশুকুর রহমানের অপরাজিত ৩৭ রানে ৩০০ রানের কাছাকাছি যায় ব্রাদার্সের সংগ্রহ। ৪৮ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন শফিউল।
রান তাড়ায় ইনিংসের প্রথম বলে শাহরিয়ার নাফীসকে হারায় অগ্রণী ব্যাংক। সালমান হোসেনের সঙ্গে আরেক ওপেনার আজমির আহমেদ টানেন দলকে। ৬২ বলে তিনি করেন ৬৫ রান। সালমানের সঙ্গে ৫০ রানের জুটি গড়ে ফিরে যান ধীমান ঘোষ। ৮৯ বলে ৭টি চারে ৬৩ রান করা সালমানকে ফিরিয়ে ব্রাদার্সের আশা জাগান খালেদ আহমেদ। তবে পঞ্চম উইকেটে জাভেদের সঙ্গে ১০৭ রানের দারুণ জুটিতে ম্যাচ পুরোপুরি অগ্রণী ব্যাংকের দিকে ঘুরিয়ে দেন ধাওয়ান। ভারতীয় অলরাউন্ডার ৫৯ বলে করেন ৭০ রান। দুটি করে চার-ছক্কায় ৫৫ রানে বিদায় নেন জাভেদ।
"