ক্রীড়া ডেস্ক
কঠিন চ্যালেঞ্জ পিএসজির
শেষ হাসিটা কে হাসবে? এ নিয়ে শুরু হয়ে গেছে ম্যাচ পূর্ববর্তী জল্পনা-কল্পনা। লড়াইটা যদি রিয়াল মাদ্রিদ বনাম পিএসজির হয় তখন মাঠের বাইরে এমন কথার তুড়ি তো ফুটবেই। তবে প্যারিসের এই যুদ্ধে নেই নেইমার। তারউপর প্রথম লেগে ৩-১ গোলে পিছিয়ে থাকা। আজ ফিরতি লেগে চ্যাম্পিয়নস লিগে যে কঠিন পরীক্ষাই দিতে হবে পিএসজিকে।
কদিন আগে ফ্রেঞ্চ লিগ ওয়ানে মার্শেইয়ের বিপক্ষে খেলতে গিয়ে পায়ের ইনজুরিতে পড়ে মাঠের বাইরে চলে গেছেন নেইমার। তার বিশ্বকাপ খেলা নিয়েও দেখা দিয়েছিল সংশয়। কিন্তু অস্ত্রোপচারের পর আশার বাণীই শুনিয়েছেন ব্রাজিলের চিকিৎসকরা। প্রাণভোমরা নেইমারের পুনর্বাসন শুরু হয়ে গেছে কাল থেকে। বেলো হরিজন্তে থেকে একশ কিলোমিটার দূরে থেকে টেলিভিশনের পর্দায় মহারণটা দেখবেন নেইমার।
পিএসজি কোচ উনাই এমেরির প্রধান অস্ত্র নেইমার মাঠের বাইরে। তার জায়গায় কোচ ভাবছেন অ্যাঙ্গেল ডি মারিয়াকে। সম্প্রতি দারুণ ছন্দে আছেন আর্জেন্টাইন উইঙ্গারও। শেষ চার ম্যাচে করেছেন চার গোল। সবশেষ ম্যাচেও পিএসজিকে জিতিয়ে ডি মারিয়া প্রমাণ করেছেন সাবেক ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে খেলতে প্রস্তুত আছেন তিনি।
পিএসজিও টানা ২ ম্যাচ জিতে নিজেদের চ্যাম্পিয়ন লিগ মহা গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচের জন্য নিজেদের ঝালিয়ে নিয়েছে। তবে এমন হাইভোল্টেজ ম্যাচে নেইমার জুনিয়রবিহীন পিএসজি বেশে চাপেই আছে। কারণ প্রতিপক্ষ রিয়াল মাদ্রিদ এগিয়ে আছে ২ গোলে। গত মাচের ফল এবং প্রাণভোমরা নেইমারের অনুপস্থিতি ভোগাতে পারে ফ্রেঞ্চ ফুটবলের রাজাদের।
তবে পিএসজি রাইট ব্যাক ড্যানি আলভেজ ভাবছেন জেতার কথা। নেইমার ছাড়াও পিএসজি চ্যাম্পিয়ন লিগের ফিরতি ম্যাচ জিতবে। আক্রমণভাগে এডিসন কাভানি, ডি মারিয়ার উপর বিশ্বাস রাখছেন তিনি। বিশ্বাস রাখছে ম্যানেজার এমিরেও। কিন্তু সমর্থকরা? প্রতিপক্ষ যেখনে রয়েছে বিশ্বের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। দারুণ ছন্দে আছেন তিনিও। এই তো দুদিন আগে জোড়া গোল করেছেন পর্তুগিজ যুবরাজ।
এছাড়া করিম বেনজেমা, বেলের মতো খেলোয়াড়রাও আছেন। আছে জিনেদিন জিদানের মতো ম্যানেজার। তবে পিএসজির আশার কথা, রিয়াল মাদ্রিদেরও বর্তমান অবস্থা তেমন সুবিধার নয়। প্লে মেকার লুকা মডরিচ এবং টনি ক্রুজের মতো খেলোয়াড় ইনজুরির কারণে নামতে পারবে কিনা তাও নিয়ে রয়েছে প্রবল সংশয় আছে। তবে রিয়াল মাদ্রিদ হতাশ নয়।
ম্যাচের ফলাফল তৈরি করার জন্য তাদের হাতে যথেষ্ট অস্ত্র রয়েছে। গত ম্যাচে বানার্ব্যুতে ফার্স্ট লেগে ৩-১ গোলের জয় সামনের অ্যাওয়ে ম্যাচ জেতার স্বপ্ন দেখাচ্ছে রিয়ালকে। সেমিফাইনালে ওঠার জন্য এ্যাওয়ে ম্যাচে রিয়ালকে ড্র বা জিতলেই চলবে। কিন্তু পিএসজিকে জিততে হবে ২-০ গোলে। কিন্তু গোল হজম করলেই বিপদ।
রিয়ালের সামনে সমস্যা বলতে মডরিচ, টনি ক্রুজের ইনজুরি ও প্রতিপক্ষ মাঠ। আর পিএসজির সামনে কঠিন সমীকরণ। কোনো গোল হজম না করে জিততে হবে দুই গোলের ব্যবধানে। এজন্য তারা সমর্থন পাবে নিজ মাঠ ও দর্শকদের। তবে তাও কি যথেষ্ট? যেখানে নেইমারের মতো পিএসজির সুপারস্টার মাঠের বাইরে। নেইমারের ইনজুরি নিশ্চিত পিএসজির মনোবলে চিড় ধরিয়েছে। তবে তাদের লড়াকু মনোভাব এখনও অক্ষুণœ। শেষ বাজি বাজার পূর্ব পর্যন্ত লড়ে যেতে চান কাভানি, মারিয়া ও আলভেজরা।
চ্যাম্পিয়ন লিগ জেতার জন্য পিএসজিকে ঢেলে সাজিয়েছিল ক্লাব কর্তৃপক্ষ। রেকর্ড ট্রান্সফার ফি’তে কিনে নিয়েছিল নেইমারকে। দলে ভিড়িয়েছিল তারকা ফুটবলারদের। কিন্তু লিগ ওয়ান কাপ জিতলেও অধরা রয়ে গেছে ইউরোপ সেরা চ্যাম্পিয়ন লিগ ট্রফি। আর রিয়াল মাদ্রিদ চ্যাম্পিয়ন লিগের ১০ বারের চ্যাম্পিয়ন। সবচেয়ে বেশিবারের ফাইনালিস্টও তারা। চ্যাম্পিয়ন লিগ মানেই অন্য ধরণের ফুটবল রিয়ালের। যুদ্ধটা যেখানে ছিল ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো বনাম নেইমার। সেখানে অ্যাওয়ে ম্যাচটা হবে রিয়ালের অভিজ্ঞতা বনাম নব্য শক্তি পিএসজির। পিএসজির কখনো চ্যাম্পিয়ন লিগ কোয়ার্টার ফাইনাল উৎড়ানো হয়নি অতীতে। তবে তারা নিজেদের লিগে জয়ের ধারা অব্যাহত রেখেছে। লিগে তাদের অবস্থানও শীর্ষে।
"