কক্সবাজার প্রতিনিধি

  ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

ইয়াবা গডফাদারদের আত্মসমর্পণ কাল

কক্সবাজারের শীর্ষ ইয়াবা গডফাদারসহ মাদক কারবারিরা আত্মসমর্পণ করবে কাল শনিবার। এজন্য গত বুধবার থেকে শুরু হয়েছে মঞ্চ নির্মাণের কাজ। মঞ্চ তৈরির কাজ পরিদর্শন করেছেন কক্সবাজার জেলা পুলিশের উচ্চপর্যায়ের একটি দল। টেকনাফ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে গতকাল বৃহস্পতিবারও ওই মঞ্চের নির্মাণের কাজ করতে দেখা গেছে। ইয়াবা কারবারিদের আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি ও বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।

কারা কারা আত্মসমর্পণ করবে, পুলিশের পক্ষে থেকে সে ব্যাপারে পরিষ্কারভাবে কিছু বলা হয়নি। তবে কাল শনিবার টেকনাফ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এ অনুষ্ঠান হওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সকাল থেকে চারটি সিএনজি নিয়ে টেকনাফ উপজেলা বিভিন্ন ইউনিয়নে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের আত্মসমর্পণের প্রচারণায় মাইকিং করা হচ্ছে পুলিশের পক্ষ থেকে। আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি, বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় সংসদ সদস্য, জনপ্রতিনিধি ও সুশীল সমাজের নেতারা উপস্থিতি থাকবেন বলে মাইকিংয়ে বলা হচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে সীমান্তের সব জনসাধারণকে উপস্থিত থাকতে অনুরোধ জানানো হয়।

এদিকে সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেৃছিলেন, ইয়াবা কারবারিরা স্বাভাবিক জীবনে না এলে মামলা চলবে। আর স্বাভাবিক জীবনে এলে এদের মামলা আমরা দেখব। ইয়াবা পাচার করে বিপুল অর্থের মালিক হওয়া ব্যক্তিরা আত্মসমর্পণ করলে তাদের অবৈধ সম্পদ বৈধতা পাবে কি না, সে প্রশ্নের সরাসরি উত্তর না দিয়ে তিনি বলেছিলেন, সম্পদের বিষয় এটা দুদক বা এনবিআর দেখবে।

পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে প্রতীকীভাবে ইয়াবা ট্যাবলেট জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করবে প্রায় ১২০ জন ইয়াবা ব্যবসায়ী। তাদের মধ্যে অন্তত ৩৫ জন গডফাদার। আত্মসমর্পণের জন্য এরই মধ্যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার জিম্মায় এসেছে তারা।

ওই সূত্র আরো জানায়, আত্মসমর্পণকারীদের মধ্যে রয়েছেন টেকনাফের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির তিন ভাই আবদুল আমিন, মো. সফিক ও মো. ফয়সাল, ভাগিনা সাহেদুর রহমান নিপু এবং বেয়াই শাহেদ কামাল রয়েছেন। আরো আছেন টেকনাফ সদরের এনামুল হক মেম্বার, ছৈয়দ হোসেন মেম্বার, শাহ আলম, আবদুর রহমান, মোজাম্মেল হক, জোবাইর হোসেন, নূরল বশর নুরশাদ, কামরুল হাসান রাসেল, জিয়াউর রহমান, মো. নুরুল কবির, মারুফ বিন খলিল ওরফে বাবু, মো. ইউনুছ, ছৈয়দ আহমদ, রেজাউল করিম, নুরুল হুদা মেম্বার, দিদার মিয়া, জামাল হোসেন মেম্বার ও মো. শামসুসহ অনেকে।

সংশ্লিষ্ট তথ্যমতে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকায় কক্সবাজার জেলায় ১ হাজার ১৫১ জন ইয়াবা ব্যবসায়ী রয়েছে। এদের বেশির ভাগ সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের। ভয়াবহ মাদক ইয়াবার বিরুদ্ধে গত বছরের ৪ মে থেকে শুরু হয়েছে বিশেষ অভিযান। এ পর্যন্ত সীমান্তে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছে ৪২ কারবারি। এর মধ্যে ৩৭ জনই টেকনাফের। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ৭৩ জন গডফাদারের মধ্যে মাত্র চারজন ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছে।

টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাস বলেন, যেকোনো মূল্যেই ইয়াবা বন্ধ করা হবে। এখনো যেসব ইয়াবাকারবারি আত্মসমর্পণ করেনি তাদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কতজন ইয়াবা ব্যবসায়ী আত্মসমর্পণ করবেÑ জানতে চাইলে বলতে রাজি হয়নি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close