মেধা তালিকায় নিয়োগ...
অনেক দেরিতে হলেও কুম্ভকর্ণের যেন ঘুম ভাঙল। আর এই ঘুম ভাঙার মধ্য দিয়ে সৃষ্টি হলো নতুন করে বাঁচার এক সম্ভাবনা। যে সম্ভাবনার মাঝে থাকবে মেধার এক সুস্থ প্রতিযোগিতা। আর এই প্রতিযোগিতা মেধাবীদের যোগ্য করে গড়ে তোলার অনুপ্রেরণা জোগাবে। আমরা এমন একটি সুসংবাদকে স্বাগত জানাতেই পারি। সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সরাসরি নিয়োগে কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে মেধা তালিকায় থাকা প্রার্থীদের মধ্য থেকে ওইসব পদ পূরণ করা হবে। এ ক্ষেত্রে বলতেই হয়, ‘নাই মামার চেয়ে কানা মামা থাকাটাই ভালো’। সরকার আমাদের একজন ভালো মামা দিতে না পারলেও যেটুকু দিয়েছে সেটুকুইবা কজনা দেন। সমাজে বসবাসকারী সব সদস্যেরই কিছু না কিছু সীমাবদ্ধতা থাকে। সরকারেরও থাকবেÑএটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে দেশব্যাপী শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে সরকারের এ সিদ্ধান্তকে অনেকটা ইতিবাচক বলা চলে। বর্তমানে দেশে ৫ শতাংশ কোটা রাখা হয়েছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য। প্রতিবন্ধী ১ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ এবং নারী ও জেলা কোটায় রয়েছে ১০ শতাংশ। সব মিলিয়ে কোটার জন্য বরাদ্দ ৫৬ শতাংশ।
নির্দেশনায় বলা হয়, সিনিয়র স্টাফ নার্সের চার হাজার ও মিডওয়াইফের ৬০০টি পদ পূরণের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ২০১০ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি সার্কুলারে উল্লিখিত মুক্তিযোদ্ধা কোটা অনুসরণ-সংক্রান্ত নির্দেশনা শিথিল করে এই পদে জাতীয় মেধা তালিকার শীর্ষে অবস্থানকারী প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া হবে এবং যা এককালীন ব্যবস্থা হিসেবে গণ্য না হয়ে সব সময়ের জন্য প্রযোজ্য হবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান ও গবেষণা সেলের ২০১৬ সালের সর্বশেষ পরিসংখ্যান বলছে, সরকারি চাকরিতে শূন্য পদের সংখ্যা তিন লাখ ৫৯ হাজার ২৬১টি।
আমরা মনে করি, সিনিয়র স্টাফ নার্স নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকার মেধাকে যেভাবে অগ্রাধিকার দিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে; আগামীতে প্রতিটি নিয়োগ যেন এই নীতি অনুসরণ করেই করা হয়। সম্ভবত এটাই দেশের বেশির ভাগ মানুষের প্রত্যাশা। আমরা আরো মনে করি, দেশের বেশির ভাগ মানুষের ন্যায্য প্রত্যাশা পূরণই একটি গণতান্ত্রিক সরকারের নৈতিক দায়িত্ব। বর্তমান সরকার একটি গণতান্ত্রিক সরকার বিধায় আমরা তার কাছে প্রত্যাশা পূরণের দাবি করতেই পারি।
"