আন্তর্জাতিক ডেস্ক
হ্যালোউইন বুঝি! কটূক্তি বোরকা পরা মুসলিম তরুণীকে
শুধু চোখ দুটো দেখা যাচ্ছিল। পরনে বোরখা। নেকাবে মুখ ঢাকা। ক্যালিফোর্নিয়ার রিভারসাইডে এক কফিশপের পেস্ট্রি কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন ক্যাথলিন আমিনা ডিডি। প্রত্যাশা করেননি আচমকা ধেয়ে আসা প্রশ্ন। Ñ ‘হ্যালোউইন না অন্য কিছু?’
চমকে ওঠেন তরুণী। তার দিকে ঝুঁকে পড়ে আগন্তুক কী বলতে চাইছেন? ততক্ষণে কফিশপের দুই কর্মীরও নজর লোকটার দিকে। শান্ত গলাতেই প্রশ্ন করেন ডিডি, ‘এ কথা কেন বলছেন?’ মুঠোফোনে অবশ্য ভিডিও রেকর্ডিং শুরু করেছিলেন। ডিডির প্রশ্নের জবাবে লোকটি বললেন, ‘কেন বলব না?’ ডিডি আবার জিজ্ঞাসা করেন, ‘কেন বলবেন?’ -‘আমার ইচ্ছে তাই।’
-‘কেন? আমার ভুলটা কোথায়? আপনি বুঝতে পারছেন না, আমি মুসলিম?’
লোকটি এবার ঘুরে তাকিয়ে তীক্ষè স্বরে জবাব দিলেন, ‘হ্যাঁ, জানি।’
গোটাটাই রেকর্ড হচ্ছে ফোনে। সেইসঙ্গে কফিশপে উপস্থিত সবার নজরবন্দিও হচ্ছে সবটা। ওই কফিশপের পরিচিত খরিদ্দার বেরি ল্যানডাউ জানান, মেয়েটিকে তিনি আগেও দেখেছেন। বেশিরভাগ সময়েই বই হাতে। জানালেন, তরুণী ডাক্তারি পড়ছেন সম্ভবত। আগন্তুকের পরিচয় অবশ্য জানা যায়নি। ল্যানডাউ বলেন, ‘যারা ঘৃণা ছড়ায়, তাদের দেখে ভয় লাগে, কষ্ট হয়।’ ডিডি তখনো রেকর্ড করে চলেছেন। আর লোকটিও বলে চলেছেন, ‘আমি তোমাদের পছন্দ করি না। তোমাদের ধর্মকে পছন্দ করি না। তোমাদের ধর্ম তো বলে মানুষ খুন করতে। আমি তোমার হাতে খুন হতে চাই না।’ দাঁতমুখ খিঁচিয়ে বলেই চলেন লোকটি। ভিডিও হতে থাকে সবটা।
ততক্ষণে কফিশপের কর্মীরা এগিয়ে এসেছেন। ভিডিওতে দেখা যায়, শেষে ল্যানডাউও ডিডি-র পাশে দাঁড়িয়ে বলতে থাকেন, ‘বেরিয়ে যান এখান থেকে।’
কফিশপের কর্মীরাও ডিডি-র পাশে দাঁড়ান। লোকটিকে খাবার পরিবেশনও করেননি তারা। শেষে তিনি খাবার প্যাক করিয়ে নিয়ে যান। ডিডি তখনো রেকর্ড করে যাচ্ছিলেন। বললেন, ‘আপনারা ওকে খাবার পরিবেশন করবেন না?’ তরুণী কর্মীর ততক্ষণাৎ জবাব, ‘না। উনি গণপরিসরে বিশৃঙ্খলা তৈরি করছেন। আর জাতিবিদ্বেষ ছড়াচ্ছেন।’
ডিডি-র সেই ভিডিও টুইটারে ২০ লাখ মানুষ দেখে ফেলেছেন। খবর হয়ে গেছে বিভিন্ন সংবাদপত্রে। ডিডির ভিডিওর শেষ দৃশ্যে ফের ব্যস্তসমস্ত কাউন্টার। যে যার কাজে মন দিয়েছেন। ‘ধন্যবাদ’ বলে শেষ করলেন তরুণী।
তবে অনেকেরই বক্তব্য, দেশের প্রেসিডেন্ট যদি এ ধরনের কথা বলেন, তা হলে আর সাধারণ নাগরিক বাদ যাবে কেন? নির্বাচনের আগে প্রচারের সময়ে যে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রকাশ্যে মন্তব্য করেছিলেন, ‘ইসলাম আমাদের ঘৃণা করে।’
"