মো. রাজু খান, ঝালকাঠি
ঝালকাঠির অভ্যন্তরীণ সড়কগুলো বেহাল
ঝালকাঠি শহরের অন্যতম ‘নতুন কলেজ রোড’ সড়কে প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তায় রয়েছে ডজনখানেক গর্ত। একই অবস্থা শহর থেকে নলছিটিতে প্রবেশের একমাত্র পথ বারইকরণ-নলছিটি সড়কটি। অপরদিকে, বরিশাল থেকে নলছিটি উপজেলা শহরে প্রবেশের অন্যতম মাধ্যম নলছিটি-দপদপিয়া সড়কটিও বেহাল। ঈদ সমানে রেখে এই রাস্তাগুলো মানুষের চলাচল বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে দুর্ভোগ।
ঝালকাঠি শহরের অন্যতম একটি ব্যস্ত সড়ক নতুন কলেজ রোড। প্রায় ১ কিলোমিটার এ সড়কে খানাখন্দ রয়েছে এক ডজনেরও বেশি। পৌর কর্তৃপক্ষ এই খানাখন্দে ইটের সুরকি ফেলে জনদুর্ভোগ লাঘবের চেষ্টা করেছে। গত কয়েকদিনের বৃষ্টি এবং যানবাহন চলাচলের কারণে সুরকিগুলো আবার উঠে যাচ্ছে। ফলে পুনরায় বেরিয়ে আসছে গর্তগুলো।
সরেজমিনে শহরের কামারপট্টি চৌমাথা থেকে সরকারি বালিকা বিদ্যালয়, মহিলা কলেজ, শিল্পকলা একাডেমি, সরকারি বালক বিদ্যালয়, পুরাতন কলেজ খেয়াঘাট, জেলেপাড়া, পূর্ব চাঁদকাঠি চৌমাথা, বিআইপি সামনের সড়ক হয়ে ব্র্যাক মোড় পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার সড়ক শতাধিক খানাখন্দ দেখা যায়।
পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মুহা. আবু হানিফ জানান, পৌরসভার পক্ষ থেকে এ রাস্তা দুটি সংস্কারের উদ্যোগ অনেক আগেই নেওয়া হয়েছে। প্রাক্কলন তৈরি করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ না থাকায় কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। বরাদ্দ এলে টেন্ডার দিয়ে আগামী ১ মাসের মধ্যেই কাজ শুরু করা হবে বলেও জানান তিনি।
সড়ক পথে বরিশাল থেকে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলা শহরে প্রবেশে গুরুত্বপূর্ণ নলছিটি-দপদপিয়া সড়ক দীর্ঘদিন মেরামত না করায় বেহাল। কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে সড়কটি প্রায় যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। কুমারখালী, কাঠেরপুল, শংকরপাশা, সারদল, ব্র্যাক কার্যালয়ের সামনেসহ বেশ কয়েকটি স্থান খানাখন্দে ভরে গেছে। বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই বৃষ্টির পানিতে গর্তগুলোতে পানি জমে পথচারীদের ভোগান্তি বেড়েছে।
একই অবস্থা জেলা শহর থেকে নলছিটিতে প্রবেশের একমাত্র পথ বারইকরণ-নলছিটি সড়কটির। সাত কিলোমিটার সড়কটির দুই কিলোমিটার সম্প্রতি সংস্কার করা হলেও ঝুঁকিপূর্ণ পাঁচ কিলোমিটারে জনদুর্ভোগ রয়েই গেছে। পাঁচ কিলোমিটারে শতাধিক স্থানে বড় বড় গতের সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টিতে গর্তে পানি জমে কর্দমাক্ত হয়ে যায়। এতে যানবাহন চলাচল বিঘœ হচ্ছে। যাত্রীরা ঝুঁকি নিয়ে এ সড়ক দিয়ে টেম্পো, অটোরিকশা, ভাড়ার মোটরসাইকেল ও ভ্যানগাড়িতে করে যাতায়াত করছে।
এ বিষয়ে দপদপিয়া এলাকার বাসিন্দা মনির হোসেন বলেন, নলছিটি-দপদপিয়া সড়কটি সংস্কার করা হয়েছে এক বছর আগে। কিন্তু সঠিকভাবে সংস্কার না করায় কিছুদিন যেতে না যেতেই সড়কের বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে।
নলছিটি শহরের সবুজবাগ এলাকার বাসিন্দা প্রদীপ কুমার বলেন, বারইকরণ-নলছিটি সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ঝালকাঠি শহরে যাতায়াত করছি। সড়কটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এ সড়ক দিয়ে কোনো যানবাহনে চলাচল নিরাপদ নয়। খানাখন্দের কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।
মোটরসাইকেল চালক ইকবাল হোসেন বলেন, বারইকরণ থেকে দুই কিলোমিটার সড়ক কোনোমতে মেরামত করা হয়েছে। নিম্নমানের কাজ হওয়ায় যেকোনো সময় পিচ উঠে যাবে।
নলছিটি উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ হেল বাকি চৌধুরী বলেন, ‘সড়কে খানাখন্দের বিষয় সম্পর্কে আমরা অবগত আছি। বরাদ্দ এলে সড়কগুলো সংস্কার করা হবে।’
অপরদিকে, রাজাপুর বাঘড়ি সেতুর পর থেকে থানার সামনে হয়ে ডাক বাংলো মোড়, উপজেলা পরিষদ সামনের রাস্তা থেকে বাইপাস পর্যন্ত এবং বাজার রাস্তা হয়ে বিশ্বরোড আদর্শপাড়া সংযোগ সড়ক ও রাজাপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে থেকে টিএন্ড টি হয়ে বাইপাস সংযোগ সড়কে প্রায় ৫ কিলোমিটারের অবস্থাও বেহাল। এ ছাড়া কাঁঠালিয়া বাসস্ট্যান্ডের পর থেকে আমুয়া বাজার পর্যন্ত ১০ কিলোমিটারের বেশি সড়কের শতাধিক স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। গর্তে বৃষ্টির পানি জমে কর্দমাক্ত হয়ে যায়। এতে যানবাহন চলাচলে বিঘœ ঘটছে। যাত্রীরা ঝুঁকি নিয়ে এ সড়ক দিয়ে রিকশা, টেম্পো, অটোরিকশা, ভাড়ার মোটরসাইকেল ও ভ্যানগাড়িতে করে যাতায়াত করছে।