সম্পাদকীয়

  ০৬ জুন, ২০২০

সাধারণের কল্যাণেই হোক এবারের বাজেট

করোনায় বিপর্যস্ত পৃথিবী। আমরাও এর বাইরে নই। এই বিপর্যয়কে সঙ্গে নিয়েই চলতে হচ্ছে এবং হবে। এই চিন্তাকে মাথায় রেখে সরকার তার বাজেট পরিকল্পনা করেছে। বাজেটের আকার ছোট হয়নি। বাজেট পেশ করা হবে আগামী ১১ জুন। বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে এবারের বাজেটে থাকছে বাড়তি খরচের চাপ। আর সে কারণেই বিপর্যস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের রূপরেখা থাকছে এবারের বাজেটে।

আসন্ন বাজেটের আকার হতে পারে ৫ লাখ ৫৬ হাজার ৯৭৮ কোটি টাকার; যা চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটের তুলনায় প্রায় ৩৩ হাজার ৭৭৮ কোটি টাকা বেশি। চলতি অর্থবছরের বাজেটের আকার ছিল ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। তবে সংশোধিত বাজেটে কিছুটা কাটছাঁট করে করা হয়েছে ৫ লাখ ১ হাজার ৫৭৭ কোটি টাকা।

তথ্যমতে, এবারের বাজেটের মূল বিষয়গুলোর মধ্যে থাকছে বিপর্যস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের রূপরেখা। জিডিপির প্রবৃদ্ধি লক্ষ্য ৮ দশমিক ২ শতাংশ। মূল্যস্ফীতি ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ। করমুক্ত আয়সীমা বাড়ছে না। কমানো হচ্ছে না করপোরেট করহার। বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতা বাড়ানো হতে পারে। এবারের বাজেট বক্তৃতায় থাকছে অর্থনীতিতে কোভিড-১৯-এর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারের সার্বিক পরিকল্পনা। দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি, কৃষি, শিল্প, এসএমইসহ সামগ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্য রক্ষায় বাজেটে থাকবে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা। থাকবে কোভিড-১৯ পরবর্তী কর্মসংস্থান, বিনিয়োগ, খাদ্য ও সামাজিক নিরাপত্তা এবং দেশের মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়াদি। সামাজিক সুরক্ষার আওতা ব্যাপকভাবে বাড়ানোর প্রস্তাবও বিবেচনা করা হবে। নতুন করে করহার না বাড়িয়ে করজাল বিস্তৃতির মাধ্যমে রাজস্ব আদায়ের পরিকল্পনা থাকবে বাজেটে।

আগামী অর্থবছরের মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা। এরমধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা আয় আসবে। এনবিআরবহির্ভূত আয় ধরা হচ্ছে ৩৩ হাজার কোটি টাকা এবং করবহির্ভূত রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ১৫ হাজার কোটি টাকা। আসন্ন ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি ধরা হচ্ছে ১ লাখ ৭৮ হাজার ৯৭৮ কোটি টাকা। এবারই প্রথম বাজেট ঘাটতি জিডিপির ৫ শতাংশ ছাড়িয়ে যাচ্ছে। ঘাটতি পূরণের জন্য অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। আর বিদেশি উৎস থেকে সংগ্রহ করা হবে ৭৭ হাজার কোটি টাকা।

এতো গেল আসন্ন বাজেটের একটি চিত্রকল্প। সংসদে আগামী ১১ জুন উত্থাপিত হতে যাচ্ছে এ বাজেট। আপাতদৃষ্টিতে মনে হয়, এই বাজেট সাধারণ মানুষের ওপর তেমন একটা বোঝা হয়ে আবির্ভূত হবে না। তবে বিশ্ব অর্থনীতির নেতিবাচক চাপ মোকাবিলার উপায় কী হবে, তা নির্ভর করছে সরকারের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনার ওপর। এ ক্ষেত্রে বিষয়টি গুরুত্বসহ বিশেষ বিবেচনায় নিতে হবে সরকারকে এবং সরকার তা আন্তরিকতার সঙ্গে নেবে বলেই আমাদের বিশ্বাস।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বাজেট,২০১৯-২০ অর্থবছর,সম্পাদকীয়
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close