রায়হান আহমেদ তপাদার

  ০৪ ডিসেম্বর, ২০১৯

প্রথাশিক্ষা বনাম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আমাদের আধুনিক জীবনে এক নতুন বাস্তবতা। গ্রামের চায়ের দোকানে মানুষ তথ্যের জন্য এখন আর পত্রিকার পাতা ঘাঁটাঘাঁটি করে না। তার বদলে এসেছে স্মার্টফোন ও আইফোননির্ভরতা। গণমাধ্যমে তথ্যের বিপণনের সাবেকি প্রথা এখন আর নেই। চারপাশে, দেশ-বিদেশে কী ঘটছে, সেগুলো ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব, গুগলসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে পেয়ে যাচ্ছে সবাই।

শিখন-শিক্ষণ হচ্ছে একটি সামাজিক প্রক্রিয়া। আমরা যদি ইতিহাস দেখি, তাহলে দেখতে পাই ঊনবিংশ শতাব্দী থেকে শিক্ষকের বিকল্প খোঁজার চেষ্টা করা হচ্ছে। অথবা কোনো ভালো কনটেন্ট তৈরি করে সহজ মাধ্যম হিসেবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে ব্যবহারের চেষ্টা করা হচ্ছে। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে শিক্ষার ব্যয় কমানো। এখনো অনেকে শুধু শিক্ষার্থীদের রেখে কীভাবে শিখন-শিক্ষণ পরিচালনা করা যায়, সেই চেষ্টা করছে। তাদের ধারণা, ভালো ভালো শিক্ষকের লেকচার ভিডিও করে বা অনলাইনে দিয়ে দিলেই শিখন-শিক্ষণ হবে। অথবা ভালো কনটেন্ট দিতে পারলে শিখন-শিক্ষণ হবে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, সরাসরি শিক্ষকের উপস্থিতি না থাকলে শিখন-শিক্ষণ সেভাবে হবে না। সে কারণেই আমরা অনেক সময় বলতে চাই, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কি আনুষ্ঠানিক শিক্ষায় ব্যবহৃত হবে? নাকি আনুষ্ঠানিক শিক্ষার সহায়ক হিসেবে ব্যবহৃত হবে? কিন্তু আনুষ্ঠানিক শিক্ষায় শুধু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করা হলে শিখন-শিক্ষণটা সেভাবে হবে না।

শুধু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে আনুষ্ঠানিক শিক্ষা পরিচালিত হলে সেখানে শিক্ষকের উপস্থিতি থাকে না আর শিক্ষকের উপস্থিতি না থাকলে শিখন-শিক্ষণ সেভাবে হয় না। লেকচার ভিডিও করে বা অনলাইনে দিয়ে দিলে হয়তো একজন শিক্ষার্থী সেখান থেকে শিখতে পারবে; কিন্তু ভালোভাবে শিখন-শিক্ষণটা হবে না। কেননা ভিডিও বা শিক্ষা যেহেতু একটি সামাজিক বিষয়; তাই এখানে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীর মিথস্ক্রিয়া, শিক্ষার্থীর সঙ্গে শিক্ষার্থীর মিথস্ক্রিয়া, শিক্ষার্থী এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের মিথস্ক্রিয়ার প্রয়োজন। আর যদি তা করা সম্ভব না হয়, তাহলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আনুষ্ঠানিক শিক্ষা প্রদান করা সহজ হবে না। তবে অবশ্যই আমরা এ মাধ্যমটিকে দক্ষতা উন্নয়নে ব্যবহার করতে পারি তৃতীয় শিল্প বিপ্লবের শেষ প্রান্তে এসে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। শুধু তরুণরাই নয়, বিভিন্ন বয়সির কাছে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে এ মাধ্যম। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের দ্বারা পৃথিবীর যেকোনো স্থানে ঘটে যাওয়া ঘটনা আমরা সঙ্গে সঙ্গে সরাসরি দেখতে পাচ্ছি। বর্তমানে এটি তথ্য আদান-প্রদানের অন্য যেকোনো মাধ্যমের তুলনায় অধিক শক্তিশালী ভূমিকা পালন করছে। এ মাধ্যম ব্যবহার করে মানুষ নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ, জ্ঞানের ভাগাভাগি এবং একটি স্বগতোক্তিকে কথোপকথনে রূপান্তর করছে। এখন সময় এসেছে জনপ্রিয় এ মাধ্যমকে আনুষ্ঠানিক শিক্ষায় কতটুকু উপযোগী করে ব্যবহার করা যায়, সে বিষয়ে ভাবার। বর্তমান বাস্তবতায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য একটি অংশ। এখন এ মাধ্যমকে আর শিক্ষা থেকে বিচ্ছিন্ন করা সম্ভব নয়।

বর্তমানে আমাদের প্রধান কাজ হওয়া উচিত শিক্ষায় একে আমরা কতভাবে কাজে লাগাতে পারি তার নতুন পথের সন্ধান করা। কারণ আমাদের তরুণ প্রজন্ম এ মাধ্যমে এতটাই আসক্ত যে, তারা এর বাইরে চিন্তাও করতে পারছে না। ধরে নেন, একজন শিক্ষার্থী স্কুলে না গিয়ে শুধু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সব শিক্ষাগ্রহণ করবে, তাহলে তা সম্ভব কি? অথবা একজন শিক্ষার্থী প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাগ্রহণ করছে; কিন্তু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমও তার সঙ্গে আছে, তাহলে সে এ মাধ্যম থেকে আনুষ্ঠানিক শিক্ষায় কতটুকু সহায়তা পাবে? আর যদি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বিকল্প হিসেবে এ মাধ্যমকে ব্যবহার করা যায়, তাহলে সে এখান থেকে কতটুকু উপকৃত হবে? যেহেতু সামাজিক সংযোগগুলো আমাদের জীবনের অনেকগুলো দিককে প্রভাবিত করছে, সেহেতু এগুলোকে আনুষ্ঠানিক শিখন-শিক্ষণে প্রয়োগের দিকে ধাবিত হচ্ছে বিশ্ব। অনেকে বলছে, এ মাধ্যম শিখন-শিক্ষণে প্রয়োগ করাটা ভালো হবে, আবার অনেকে বলছে, ব্যবহার করার আগে সতর্কতা অর্জন করা জরুরি। আনুষ্ঠানিক শিক্ষায় একদিক থেকে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে এবং অন্যদিক থেকে শিক্ষার্থী ও দৈনন্দিন জীবনের ইভেন্টগুলোর মধ্যে প্রতিদিনের সামাজিক মিথস্ক্রিয়া প্রয়োজন। যখন শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীর মধ্যে একটা সামাজিক বন্ধন থাকবে, তখনই সত্যিকারের শিখন-শিক্ষণ হবে। আমাদের ক্লাসরুম এবং বাস্তব বিশ্বের মধ্যে যে ফারাক রয়েছে, তার সেতুবন্ধন তৈরি করতে হবে। শিখন-শিক্ষণের একটি তাৎপর্য আছে, এটি বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্কিত। কিন্তু অনলাইনে তা ঘটার সম্ভাবনা কম। অনলাইনে একজন মানুষ যখন আপনাকে কোনো তথ্য দিল, তখন আপনি জানেন না তথ্যটি সত্য কি না।

কারণ যখন কোনো ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো তথ্য দিচ্ছে, এটা তার নিজের তৈরি করা কনটেন্ট। যেহেতু এ মাধ্যমটিতে তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের সুযোগ নেই; তাই এ তথ্যটি সত্য কি না, বাকিরা তা জানতে পারছেন না। সে কারণে তথ্যদাতার প্রতি ব্যবহারকারীদের আস্থা থাকে না, কারণ তারা তাকে চিনে না। আমরা যদি দেড়শ বছরের পুরোনো ক্লাসরুমগুলো দেখি, তাহলে দেখব শিক্ষক ক্লাসে আছে এবং শিক্ষার্থীরা তার সামনে বসে আছে। আজকের ক্লাসরুমগুলোও মোটাদাগে একই অবস্থা। শিক্ষক সামনে আছে, শিক্ষার্থী বসে আছে হয়তো ভিন্নভাবে। হ্যাঁ, আমরা এখানে প্রযুক্তির পার্থক্য দেখতে পাচ্ছি। ক্লাসরুমে স্মার্ট বোর্ড সংযুক্ত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের হাতে হাতে ল্যাপটপ পৌঁছে গেছে। এ ছাড়া আর কোনো পার্থক্য হয়নি। ব্লেন্ডেড লার্নিংয়ে কিছুটা পরিবর্তন হলেও অন্যান্য ক্ষেত্রে পরিবর্তন না-ও হতে পারে। তবে প্রথম যখন রেডিও আবিষ্কার হয়, তখন বলা হয়েছিল, শিক্ষকের বিকল্প আমরা পেয়ে গেছি। এখন আমাদের আর এত শিক্ষক লাগবে না। আমরা লেকচার তৈরি করে রেডিওতে দিয়ে দেব। সেখান থেকেই শিখন-শিক্ষণ হবে। এ চেষ্টা করা হয়েছে অনেক দিন। এরপর এলো সম্প্রচার মাধ্যম। এটি আরেকটি সামাজিক মাধ্যম। এখন সম্প্রচার মাধ্যমে আমরা অনেক কিছু শুনতে পাচ্ছি; কিন্তু রেডিও বা সম্প্রচার মাধ্যম শিক্ষকদের বিকল্প হতে পারেনি। আফ্রিকায় রেডিও দিয়ে শিক্ষকতা করার চেষ্টা করা হয়েছে। তারা রেডিওর সামনে লিসেনিং ও বাউডাউন পদ্ধতির মাধ্যমে চেষ্টা করেছে। কিন্তু দেখা গেছে, মানুষ সেভাবে শিখছে না। যেহেতু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সবার জন্য উন্মুক্ত এখানে কোনো ধরনের যাচাই-বাছাই নেই; তাই এ মাধ্যমে অনুপযুক্ত ছবি, সংবাদ এবং ঘটনা সরবরাহ করতে পারে।

তাই এ মাধ্যমে হতাশা, গুজব, ব্ল্যাকমেইলিং, ভুয়া পরিচয়, আসক্তি ব্যাধির মতো ঝুঁকিসহ অন্যান্য ঝুঁকি রয়েছে। এ ঝুঁকির কারণ শিক্ষার্থীদের যারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে তাদের অধিকাংশের পক্ষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ছাড়া বসবাস করা সম্ভব নয়। এ কারণে তাদের স্বাস্থ্য মারাত্মকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। কারণ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উদ্বেগ, চাপ, হতাশায় ভোগা, ব্রেন ওয়াশিং, বিবাহবিচ্ছেদ, ট্রলিং, সাইবার-বুলিং, গোপনীয়তা লঙ্ঘন, অনলাইন উইচ হান্টের মতো উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি করে। এ কারণে তারা মানসিক এবং শারীরিকভাবে ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ছে এবং খারাপ ফলাফলসহ খিটখিটে আচরণ করছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের অনেকেই মনে করে থাকেন তার অর্জিত জ্ঞান সে অন্যদের সঙ্গে ভাগাভাগি করবে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একজন শিক্ষার্থী শিখবে; তবে সে যদি আরেকটু অতিরিক্ত শিখতে বা জানতে চায়, তা-ও সম্ভব। কারণ সে যেকোনো বিষয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাগাভাগি করলে তার ফলাবর্তন পাবে। সেখানে সহপাঠী এবং বিশেষজ্ঞদের মতামত নিতে পারবে, শিক্ষক এবং সহপাঠীদের কাছ থেকে প্রতিক্রিয়া গ্রহণের ক্ষমতা এবং আদান-প্রদান হওয়া বার্তাগুলোর প্রতিফলনের সুযোগ থাকে। চিন্তাভাবনার বহিঃপ্রকাশ, আলোচনা করা এবং অন্যের আইডিয়াকে চ্যালেঞ্জ করা এবং প্রদত্ত সমস্যার একটি গ্রুপ সমাধানের জন্য একসঙ্গে কাজ করা যায়। সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনার দক্ষতা বিকাশ করার পাশাপাশি নিজের প্রতিফলিত, জ্ঞান ও অর্থের সহনির্মাণ করার দক্ষতা অর্জন করা যায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে কোলাবোরেটিভ উপায়ে সমস্যা সমাধানের সর্বোচ্চ মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এটা সম্ভব। শিখন-শিক্ষণের ক্ষেত্রে এ পদ্ধতি কিছুটা হলেও ঘটতে পারে। কোলাবোরেশন, যোগাযোগের ফলাবর্তন এবং সমালোচনামূলক চিন্তাধারার দক্ষতা আনুষ্ঠানিক শিক্ষায় সেভাবে কাজে আসে না, যদি শিক্ষক দ্বারা সরাসরি শিক্ষা দেওয়া না যায়। কারণ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কাজ হচ্ছে যেকোনো তথ্য সঙ্গে সঙ্গে সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া। তার জন্য প্রয়োজন সমালোচনামূলক চিন্তাধারার। যদি তথ্য কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে আসে এবং শিক্ষক এ তথ্যটা সব শিক্ষার্থীর মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারে, সেক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। অর্থাৎ একজন শিক্ষক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের মাঝে সঠিক তথ্য সরবরাহ করতে পারেন। শিক্ষক যদি চান তার ১০ শিক্ষার্থী বা অনেক শিক্ষার্থী একসঙ্গে একটা বিষয়ের ওপর একসঙ্গে কাজ করবে, তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্ভব। কারণ এখানে কোনো বিষয় শেয়ার করে শিক্ষক সঙ্গে সঙ্গে একটি প্রতিক্রিয়া পাবেন, যা অন্য কোথাও সম্ভব নয়। এগুলো শিক্ষায় যখন শিক্ষার্থীরা পাবে, তখনি শিক্ষা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সহযোগী হিসেবে কাজে আসবে। শিক্ষা হঠাৎ করে হয় না। শিক্ষা হচ্ছে একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। এখানে কিছু আগে পড়তে হয়, কিছু পরে পড়তে হয়। এ ধারাবাহিকতা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেভাবে পাওয়া যায় না। আমরা যদি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে শুধু আনুষ্ঠানিক শিক্ষায় ব্যবহার করে শিক্ষককে বাদ দেওয়ার চেষ্টা করি, তাহলে শিখন-শিক্ষণটা সেভাবে হবে না।

শিক্ষা যেহেতু সামাজিকতার সঙ্গে জড়িত; তাই শিক্ষকের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ থাকতে হবে। তা না হলে শিক্ষার্থী সমাজের সঙ্গে চলতে পারবে না। কারণ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম শুধু জ্ঞান দিতে পারবে; কিন্তু শিক্ষার্থীদের মানবিক ও সামাজিক করে তুলতে পারবে না। যদি কনটেন্টটা আমি আস্থাশীল জায়গা থেকে আনতে পারি, এটা শিক্ষায় সহযোগী হিসেবে কাজে লাগানো যাবে। তাই শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীর মধ্যে একটি সামাজিক দায়বদ্ধতা প্রয়োজন। শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীর মধ্যে যখন সামাজিক দায়বদ্ধতা থাকবে, তখন যথাযথ শিখন-শিক্ষণ হবে। আমরা যদি ইতিহাস দেখি, তাহলে দেখা যাবে বারবার শিক্ষকের বিকল্প খোঁজা হয়েছে শিক্ষার ইনপুট খরচ কমানোর জন্য।

লেখক : গবেষক ও কলামিস্ট [email protected]

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম,প্রথাশিক্ষা,কলাম
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close