বহুল আলোচিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে মন্দিরে হামলা ও ভাংচুরের এক মামলায় ২২৮ জনকে আসামি করে আদালতে চর্জশীট দিয়েছে পুলিশ। আজ সোমবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক ফারজানা আহমেদের কাছে এই চর্জশীট জমা দেওয়া হয়েছে। আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. মাহাবুবুর রহমান গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নাসিরনগর গৌরমন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্মল চৌধুরী বাদী হয়ে ২ থেকে আড়াই হাজার অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে এই মামলাটি দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. শওকত হোসেন ২২৮ জনের নাম উল্লেখ করে এই অভিযোগপত্র দেন বলে জানান তিনি।

আসামিদের মধ্যে নাসিরনগর সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ প্রচার সম্পাদক মো. আবুল হাসেম, হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাময়িক বরখাস্ত চেয়ারম্যান দেওয়ান আতিকুর রহমান আঁখি, হরিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ফারুক মিয়া, চাপরতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি সুরুজ আলী, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল হান্নান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম চকদার, হরিপুর ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি মো. জামাল, হরিপুর গ্রামের কাপ্তান মিয়া, বিল্লাল হোসেন ও মো. জাহাঙ্গীর আলমের নাম রয়েছে।

এর মধ্যে আবুল হাসেম ও আব্দুল হান্নান ছাড়া বাকিরা গ্রেপ্তার হওয়ার পর আদালত থেকে জামিন নিয়ে বের হয়েছেন। মাহাবুবুর রহমান বলেন, রোববার অভিযোগপত্রের কপি পাওয়া গেলেও বিভিন্ন ত্রুটি থাকায় অভিযোগপত্রটি আদালতে দাখিল করা হয়নি। ত্রুটি সংশোধন এবং অভিযোগপত্রের ব্রিফ তৈরি করে সোমবার দুপুরে বিচারকের কাছে দাখিল করা হয়েছে। নাসিরনগর উপজেলার হরিণবেড় গ্রামের রসরাজ দাস নামে এক জেলে ফেইসবুকে ধর্ম অবমাননাকর ছবি পোস্ট করেছে অভিযোগ তুলে ২০১৬ সালের ২৯ অক্টোবর তাকে পিটিয়ে পুলিশে দেয় একদল যুবক।

পরদিন (৩০ অক্টোবর) এলাকায় মাইকিং করে উপজেলা সদরে পৃথক দুইটি সমাবেশ থেকে ১৫টি মন্দির, শতাধিক ঘরবাড়িতে ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এরপর ৪ নভেম্বর ভোরে ও ১৩ নভেম্বর ভোরে আবার উপজেলা সদরে হিন্দুদের অন্তত ছয়টি ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। এসব ঘটনায় নাসিরনগর থানায় মোট ৮টি মামলা দায়ের করা হয়। বাকি ৭টি মামলার তদন্ত এখনও চলছে।

পিডিএসও/মুস্তাফিজ