reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৩ মে, ২০১৭

হোটেলে মদ কীভাবে এলো জানেন না রেইনট্রির মালিক

বহুল আলোচিত রাজধানীর বনানীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ ছাত্রীকে অস্ত্রের মুখে ধর্ষণের ঘঠনাস্থল রেইনট্রি হোটেলে কীভাবে মদ এসেছে তা জানা নেই বলে দাবি করেছেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শাহ মো. আদনান হারুন। আজ মঙ্গলবার শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরে আদনান হারুনকে জিজ্ঞাসাবাদকালে তিনি এই দাবি করেন। প্রসঙ্গত রেইনট্রি হোটেলে গত ২৮ মার্চ রাত ৯টা থেকে পরদিন ২৯ মার্চ সকাল ১০টা পর্যন্ত আটকে রেখে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ ছাত্রীকে মদপান করিয়ে ধর্ষণ করা হয়। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে হোটেলটিতে অভিযান চালিয়ে বিদেশি মদ উদ্ধার করে শুল্ক গোয়েন্দা। এরপর শুল্ক গোয়েন্দারা এমডি আদনানকে তলব করে রেইনট্রি হোটেলে অবৈধভাবে মদ রাখা এবং ভ্যাট ও শুল্ক ফাঁকির অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা জানতে চান।

অসুস্থতার কথা বলে নির্ধারিত ১৭ মে শুল্ক গোয়েন্দায় হাজির হননি আদনান। এরপর গতকাল সোমবার হাইকোর্টে শুল্ক গোয়েন্দার তলবের আদেশের কার্যকারিতা স্থগিতের আবেদন করেন তিনি। হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ জারি করলেও আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত এ স্থগিতাদেশ স্থগিত করেন। এরপর বাধ্য হয়ে আজ মঙ্গলবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে শুল্ক গোয়েন্দা কার্যালয়ে উপস্থিত হন রেইনট্রির এমডি আদনান। এই সময় তার সঙ্গে তার ফুপা আকবর হোসেন মঞ্জু ও চাচা মুজিবুল হক কামাল উপস্থিত ছিলেন। শুল্ক গোয়েন্দা কার্যালয়ে উপস্থিত হওয়ার কিছুক্ষণ পর থেকে দুপুর পৌনে ৩টা পর্যন্ত আদনানকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন অধিদফতরের কর্মকর্তারা।

প্রসঙ্গত রেইনট্রি হোটেলে আটকে রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় গত ৬ মে রাজধানীর বনানী থানায় একটি মামলা করা হয়। এতে আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ সেলিমের ছেলে সাফাত আহমেদ, তেজগাঁও লিংক রোডে অবস্থিত রেহনাম রেগনাম সেন্টারের মালিক মোহাম্মদ হোসেন জনির ছেলে সাদমান সাকিফ, সিরাজগঞ্জের হাসান মোহাম্মদ হালিম ওরফে নাঈম আশরাফ, সাফাতের গাড়ি চালক বিল্লাল ও সাফাতের দেহরক্ষী রহমত আলীকে আসামি করা হয়।

মামলার এজাহারে এক তরুণী অভিযোগ করেন, ২৮ মার্চ রাতে তার এক বান্ধবী ও দুই ছেলে বন্ধুকে রেইনট্রি নামের একটি হোটেলে অস্ত্রের মুখে আটকে রাখা হয়। একপর্যায়ে তাকে ও তার বান্ধবীকে আসামিরা জোর করে হোটেলের রুমে নিয়ে যায়। সেখানে তাদের মদ পান করানোর পর এক নম্বর আসামি সাফাত আহমেদ তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। এ সময় তার সঙ্গে থাকা অপর বান্ধবীকেও একাধিকবার ধর্ষণ করে দুই নম্বর আসামি নাঈম আশরাফ।

ধর্ষণের ঘটনাস্থল রেইনট্রি হোটেলের মালিক আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য বি এইচ হারুনের পরিবারের সদস্যরা। হোটেলের চেয়ারম্যান হলেন বি এইচ হারুনের ছেলে শাহ মো. নাহিয়ান হারুন এবং এমডি আরেক ছেলে শাহ মো. আদনান হারুন। এছাড়া হারুনের স্ত্রী মনিরা হারুন, ছেলে মাহির হারুন এবং মেয়ে হোমায়রা হারুন হোটেলটির পরিচালক পদে রয়েছেন। ধর্ষণ মামলা আলোচিত হওয়ার প্রেক্ষিতে ১৪ মে শুল্ক গোয়েন্দারা রেইনট্রি হোটেলে অভিযান চালায়। এ সময় হোটেলের ১০১ নম্বর কক্ষে ১০ বোতল মদ পাওয়া যায়।

এছাড়া গত জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে ভ্যাট নিবন্ধন নিলেও কোনো অর্থ পরিশোধ না করে ওই হোটেল কর্তৃপক্ষ আট লাখ ১৫ হাজার টাকা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে বলেও শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের অভিযোগ। কিন্তু বারের লাইসেন্স ছাড়াই অবৈধভাবে মদ বিক্রির অভিযোগ অস্বীকার করে রেইনট্রি কর্তৃপক্ষ। তারা সংবাদ সম্মেলন করে জব্দকৃত মদকে জুস দাবি করে। এর প্রেক্ষিতে অবৈধ মদ ও ভ্যাট ফাঁকির ঘটনা ব্যাখ্যা করতে রেইনট্রির এমডি আদনানকে তলব করে শুল্ক গোয়েন্দা।

পিডিএসও/মুস্তাফিজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
রেইনট্রি,হোটেলে মদ কীভাবে এলো জানেন না
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist