মুসা বিন শমসেরের গাড়ি জব্দ
কিতর্কিত ব্যবসায়ী মুসা বিন শমসেরের রেঞ্জ রোভার গাড়িটি জব্দ করেছে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর। নানা নাটকীয়তার পর আজ মঙ্গলবার ওই গাড়িটি জব্দ করা হয়েছে। রঙ বদলসহ নানা চেষ্টা করে রাস্তায় চালানোর পরও শুল্ক গোয়েন্দাদের চোখ ফাঁকি দিতে পারেননি তিনি। অবশেষে গাড়িটি লুকিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। কিন্তু তার পরও গাড়িটি লুকিয়ে রাখতে পারলেন না তিনি। জানা যায়, শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আনা এবং ব্যবহার করা এই গাড়িটি জব্দ করা হয়েছে। এর আগে আজ সকাল থেকে চালানো অভিযানের পর বিকালে গাড়িটি ধানম-ির একটি বাড়ি থেকে জব্দ করা হয় বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন শুল্ক গোয়েন্দা অধিপ্তরের মহাপরিচালক মইনুল খান।
এদিকে আজ সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ জানায়, গাড়িটির বিষয়ে মুসা বিন শমসেরকে তলব করা হবে এবং তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এই বিষয়ে মুসার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ধানম-িতে কার বাড়িতে মুসা গাড়িটি রেখেছিলেন, তাও জানা যায়নি। অবশ্য গাড়িটি মুসা বিন শমসের ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার করেছিলেন বলে প্রমাণ পেয়েছেন শুল্ক গোয়েন্দারা।
অবশ্য মুসার গুলশানের বাড়িতে এই গাড়িটি থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর অভিযান শুরু করেন শুল্ক গোয়েন্দারা। অবৈধ গাড়িটি জমা দিতে সকাল ৮টায় নোটিস দেওয়া হয় তাকে। তখন তিনি বাড়ি থেকে গাড়িটি সরিয়ে ফেলেছিলেন জানিয়ে মইনুল খান বলেন, গুলশান ২ নম্বর সেকশনের ১০৪ নম্বর রোডের মুসার বাড়িতে গাড়িটি থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায় বাড়ির সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ দেখে। কিন্তু এই ফাঁকে গাড়িটি অন্য স্থানে সরিয়ে ফেলেন তিনি। তার পরও শুল্ক গোয়েন্দারাও হাল না ছেড়ে গাড়ির পেছনে লেগে থাকেন।
মইনুল খান বলেন, গাড়িটিতে করে সকালে নাতিকে ধানম-ির স্কুলে পাঠান মুসা। দুপুরে শুল্ক গোয়েন্দারা বাড়িতে অভিযান চালানোর পর গাড়িটি আর বাড়িতে আনা হয়নি। নাতিকে অন্য একটি গাড়িতে করে বাসায় আনা হয়। শুল্ক গোয়েন্দার দল গাড়ির খোঁজ করতে করতে ধানম-ির ৬ নম্বর সড়কের ৫১ নম্বর বাড়িতে রাখা অবস্থায় গাড়িটি পান বলে মইনুল খান জানান। ওই বাড়ি থেকে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে গাড়িটি জব্দ করা হয়। তবে গাড়িটি যখন উদ্ধার করা হয় তখন এটি ছিল কালো রঙের। তবে নথিপত্র দেখে এর রঙ সাদা ছিল বলে শুল্ক গোয়েন্দারা নিশ্চিত হন।
শুল্ক গোয়েন্দারা বলেন, ভুয়া আমদানি দলিল দিয়ে গাড়িটির নিবন্ধন করা হয়েছিল। এক কর্মকর্তা বলেন, কাগজপত্র যাচাই করে দেখা যায়, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের বিল অব এন্ট্রি ১০৪৫৯১১ তারিখ ১৩/১২/২০১১ এ ১৩০% শুল্ক প্রদান করে ভোলা থেকে রেজিস্ট্রেশন গ্রহণ করা হয়েছে। কাস্টম হাউসের নথি যাচাই করে এই বিল অব এন্ট্রি ভুয়া হিসেবে প্রমাণ পাওয়া গেছে। ভোলার বিআরটিএ কার্যালয় থেকে শুল্ক গোয়েন্দাদের জানানো হয়, এই গাড়িটি পাবনার ফারুকুজ্জামান নামে এক ব্যক্তির নামে নিবন্ধন নেওয়া হয়।পিডিএসও/মুস্তাফিজ