গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

  ১৮ জানুয়ারি, ২০১৭

নূর হোসেন তারেক সাঈদরা কেমন আছেন

নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুনের মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেন, র‌্যাবের সাবেক কর্মকর্তা তারেক সাঈদ মোহাম্মদসহ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত পাঁচ আসামিকে রাখা হয়েছে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেম সেলে।

সর্বোচ্চ সাজার আদেশ পাওয়া বাকি ১২ আসামিকে সাজাপ্রাপ্ত বন্দির পোশাকে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের ফাঁসির কক্ষে রাখা হয়েছে বলে কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। এছাড়া এ মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে সাজার আদেশ পাওয়া আরো ছয় আসামিকে রাখা হয়েছে নারায়ণগঞ্জ কারাগারে। তিন বছর আগের ওই হত?্যাকা-ের দায়ে আদালত গত সোমবার মোট ৩৫ জনের সাজার আদেশ দিলেও তাদের মধে?্য ১২ জন পলাতক রয়েছেন।

২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণের পর হত?্যা করে পেট চিড়ে লাশ ডুবিয়ে দেওয়া হয় শীতলক্ষ?্যা নদীতে। নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেন গত সোমবার এ মামলার রায়ে ২৬ জনকে মৃত্যুদ- ও ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদ- দেন।

রায় ঘোষণার পর ওই দিনই নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন, র‌্যাব-১১ এর সাবেক অধিনায়ক চাকরিচ?্যুত লেফটেন?্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, র‌্যাবের ক্যাম্প কমান্ডার চাকরি?চ?্যুত মেজর আরিফ হোসেন, ক্যাম্প কমান্ডার চাকরিচ্যুত লেফটেন?্যান্ট কমান্ডার মাসুদ রানা ও ল্যান্সনায়েক বেলাল হোসেনকে প্রিজনভ?্যানে করে নিয়ে যাওয়া হয় গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে। কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর জেলার নাশির আহমেদ জানান, কারাগারে পৌঁছানোর পরপরই মৃত্যুদ-ের পাঁচ আসামিকে সাদা-কালো ডোরা কাটা বন্দির পোশাক পরানো হয়। তিনি বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী রাতেই তাদের ফাঁসির আসামিদের জন?্য নির্ধারিত কক্ষ- কনডেম সেলে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় তাদের বেশ চিন্তিত বলে মনে হয়েছে।’

কারা কর্মকর্তারা জানান, গতকাল দুপুরে এক আসামির ভাই কারাগারে এসে দেখা করে গেছেন। তবে নূর হোসেন বা তারেক সাঈদের কেউ আসেননি।

নারায়ণগঞ্জ কারাগারে এ মামলার মৃত্যুদ-প্রাপ্ত যে ১২ আসামিকে রাখা হয়েছে, তাদের মধ্যে সাতজন সাবেক র‌্যাব সদস?্য, বাকিরা সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি নূর হোসেনের সহযোগী। নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারের জেলার মো. আসাদুর রহমান জানান, তার কারাগারে ফাঁসির আসামিদের সেল রয়েছে ১৫টি। জায়গা না থাকায় সাত খুনের মামলায় মৃত্যুদ-প্রাপ্ত ১২ আসামিকে আলাদা সেলে রাখা যায়নি। এক সেলে রাখা হয়েছে তিনজন করে। তিনি বলেন, ‘তাদেরকে সাজাপ্রাপ্ত বন্দির পোশাক পরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ কারাগারে আরো ১২ জন ফাঁসির আসামি আছেন। তারা যেভাবে রয়েছেন, নতুনদেরও সেভাবে রাখা হয়েছে।’ আসাদুর রহমান বলেন, ‘কনডেম সেলে নেওয়ার পর এই ফাঁসির আসামিদের রাতে সবজি, ডাল, ভাত ও মাছ খেতে দেওয়া হয়। আজ (গতকাল) সকালে দেওয়া হয় রুটি আর গুড়। তারা তা খেয়েছেন।’

মৃত্যুদ-প্রাপ্ত আসামিদের মধে?্য এসআই পূর্ণেন্দু বালা, হাবিলদার এমদাদুল হক, কনস্টেবল শিহাব উদ্দিন, আরওজি-১ আরিফ হোসেন, ল্যান্সনায়েক হীরা মিয়া, সিপাহি আবু তৈয়ব, আসাদুজ্জামান নূর, নূর হোসেনের সহযোগী মোর্তুজা জামান চার্চিল, আলী মোহাম্মদ, মিজানুর রহমান দীপু, রহম আলী ও আবুল বাশারকে নারায়ণগঞ্জ কারাগারে রাখা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত কনস্টেবল বাবুল হাসান, কর্পোরাল রুহুল আমিন, সৈনিক নুরুজ্জামান, আবুল কালাম আজাদ, এএসআই বজলুর রহমান ও হাবিলদার নাসির উদ্দিনও আছেন এ কারাগারে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, ল্যান্সনায়েক বেলাল হোসেন এর আগে একবার আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছিলেন। এ কারণে তাকে প্রধান চার আসামির সঙ্গে কাশিমপুর কারাগারে রাখা হয়েছে।

এ মামলায় মৃত্যুদ-প্রাপ্ত নূর হোসেনের সহযোগী সেলিম বর্তমানে ভারতের কারাগারে বন্দি। এছাড়া সানা উল্লাহ ওরফে সানা, নূর হোসেনের ম্যানেজার শাহজাহান, জামাল উদ্দিন, সার্জেন্ট এনামুল কবীর, সৈনিক মহিউদ্দিন মুন্সী, সৈনিক আল আমিন শরীফ, সৈনিক তাজুল ইসলাম ও সৈনিক আব্দুল আলিম পলাতক। এছাড়া পলাতক তিন আসামি কর্পোরাল মোখলেছুর রহমান, কনস্টেবল হাবিবুর রহমান ও এএসআই কামাল হোসেনেরও কারাদ-ের রায় এসেছে আদালতে।

নিয়ম অনুযায়ী, নিম্ন আদালতের মৃত্যুদ-ের রায় অনুমোদনের জন?্য হাইকোর্টে যাবে। আসামিরাও আপিলের সুযোগ পাবেন। হাইকোর্টের রায়ের পর আপিল বিভাগেও যাওযার সুযোগ থাকবে। এই বিচারিক প্রক্রিয়া শেষ হলেই মৃত্যুদ-প্রাপ্ত আসামিদের সাজা কার্যকর করা যাবে।

পিডিএসও/মুস্তাফিজ

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist