reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১১ জুলাই, ২০২০

ফাইভ পাস মাছ ব্যবসায়ী নিজের ক্লিনিকে করতেন অপারেশন

মাছের ব্যবসা আছে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া পৌর শহরে। নিজ মালিকানাধীন একটি প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারও রয়েছে তার।পড়াশুনা শুধা ফাইভ পাস। মাধ্যমিক পর্যন্ত পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।

পিলে চমকানোর মতো বিষয় হলো চিকিৎসক পরিচয়ে ওই ক্লিনিকে নিজেই প্রসূতি মায়েদের সিজার অপারেশন করতেন মাছ ব্যবসায়ী মোস্তফা কামাল (৩৬)।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত বৃহস্পতিবার মোস্তাফা কামালের মালিকানাধীন মহিমা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়গনস্টিক সেন্টারে যৌথ অভিযান চালায় জেলা প্রশাসন ও র‌্যাব-৮। এরপর অভিযোগের সত্যতা পেয়ে ওই ক্লিনিক মালিককে চিকিৎসক সেজে মানুষের সঙ্গে প্রতারণার অপরাধে ৩ মাসের কারাদণ্ড ও ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

পিরোজপুর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পীযুষ কুমার চৌধুরী বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘ওই ক্লিনিকের মালিক নিজেকে চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছেন। এমনকি তিনি নিজে প্রসূতি মায়ের সিজার অপারেশন করতেন। এ ছাড়া ভুয়া চিকিৎসক দ্বারা পরিচালিত হতো ক্লিনিকটি।’

পীযুষ কুমার চৌধুরী আরও বলেন, ‘ক্লিনিকের অপারেশন থিয়েটারটি নামমাত্র। সেটি বসবাসের জায়গা হিসেবে ব্যবহার হতো। অভিযান চালিয়ে সেখানে বিপুল পরিমাণ মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধও পাওয়া গেছে।’

এদিকে মাছ ব্যবসায়ী মোস্তফা কামালের বিষয়ে প্রশাসনকে তথ্য দেন অপর ভুয়া চিকিৎসক আমির হোসেন ভূইয়া। কামালের আগে তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে র‌্যাব। তার দেওয়া তথ্য মতে, মহিমা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়গনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালায় র‌্যাব।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পীযুষ কুমার চৌধুরী জানান, স্থানীয়দের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রথমে মঠবাড়িয়া উপজেলার সাফা বন্দরে হাজী আবদুর রাজ্জাক সার্জিক্যাল ক্লিনিকে অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকে ভুয়া চিকিৎসক আমিন হোসেন ভূইয়াকে আটক করা হয়। ভুয়া সনদপত্র দেখিয়ে ওই হাসপাতালে মেডিকেল অফিসার পদে চাকরি নিয়েছিল নোয়াখালী জেলার শাহাজাদপুর উপজেলার আবুল খায়ের মিয়ার ছেলে আমির হোসেন।

তিনি আরও জানান, এএইচ ভূইয়া (সুজন) নাম ধারণ করে আমিন হোসেন ভূইয়া গাইনোকোলজিস্ট হিসেবে রোগী দেখার পাশাপাশি সিজারসহ বিভিন্ন অপারেশন করে আসছিলেন। পাশাপাশি মঠবাড়িয়া উপজেলার বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে ‘অন কল’ চিকিৎসক হিসেবে অপারেশন করতেন তিনি। এই ভুয়া চিকিৎসককে আটকের পর তার দেওয়া তথ্য মতে মহিমা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়গনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালিয়ে মোস্তফা কামালকে আটক করা হয়।

এদিকে অপরাধ স্বীকার করে নেওয়ায় আমির হোসেনকে ৬ মাসের কারাদণ্ড ও হাজী আবদুর রাজ্জাক সার্জিক্যাল ক্লিনিককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে বলেও জানান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পীযুষ কুমার।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ফাইভ পাস,মাছ ব্যবসায়ী,ক্লিনিক,অপারেশন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close