reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ৩১ মার্চ, ২০১৯

‘এ সময় সৎ ভাই আমার হাত চেপে ধরে’

পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী সেতু প্রতিদিনই নানা ছুতোয় সৎ মার হাতে নির্যাতনের শিকার হতো। কিন্তু এসব খেয়াল রাখার সময় বাবা রিয়াজ শিকদারের ছিল না। তিনি ঘুম থেকে উঠে স্থানীয় বাজারে তার ভাঙ্গারীর দোকানে চলে যেতেন। ফিরতেন রাতে।

গত ২৪ মার্চ সামান্য কারণে ছোট এই শিশুর কোমল শরীরের ১৩টি স্থানে গরম খুন্তি দিয়ে ছ্যাঁকা দিয়ে দগ্ধ করেছেন তার সৎ মা সাবিনা বেগম। আর তাকে এ কাজে সাহায্য করেসন সৎ ভাই ছাব্বির (১৭)। কিন্তু শিশুটি মাথার ওপরের ছাদ হারানোর ভয়ে কাউকেই কিছু জানায়নি। এমনকি বাবাকেও না। দগদগে ঘা নিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছে।

মর্মস্পর্শী এ ঘটনাটি ঘটেছে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার উত্তর সীমান্তে কবিরাজপুর ইউনিয়নের পান্থাপাড়া গ্রামে। এ ঘটনায় পুলিশ রোববার শিশুটির সৎ মা সাবিনা বেগম ও ভাই ছাব্বিরকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে।

ভুক্তভোগী সেতু বলে, ‘প্রায় ৯ বছর আগে আমার মা রেহানা বেগম মারা যায়। মা জীবিত থাকতেই বাবা সৎ মা সাবিনা বেগমকে বিয়ে করে। এরপরেই আমাদের ওপর নির্যাতন শুরু হয়। বাবার এ ঘরে আমার এক ভাই ও এক বোন আছে।’

সেদিনের ওই ঘটনা সম্পর্কে সেতু বলে, ‘আমার সৎ ভাই ছাব্বির ও সৎ নানির প্ররোচনায় সৎ মা সাবিনা গরম খুন্তি দিয়ে আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানের ছ্যাঁকা দেয়। আমি যন্ত্রণায় চিৎকার করলেও তাদের মায়া হয়নি। এ সময় সৎ ভাই আমার হাত চেপে ধরে রাখে। আমাকে চিকিৎসা পর্যন্ত দেয়নি। আমি কারও কাছে অভিযোগ করলে আমাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিলে কে আমাকে আশ্রয় দেবে? এ ভয়ে কাউকেই জানাইনি।’

রাজৈর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) খান মো. জোবায়ের বলেন, ‘খবর পেয়ে আজ আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই শিশুকে উদ্ধার করে রাজৈর হাসপাতালে ভর্তি করি। তার সৎ ভাই ছাব্বির ও সৎ মা সাবিনাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসি।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহানা নাসরিন বলেন, ‘ওই শিশুকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য রাজৈর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার পুনর্বাসনের যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

পিডিএসও/রি.মা

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
সৎ ভাই,হাত,চেপে ধরে
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close