বিউটি হত্যা : মূলহোতা বাবা, খুন করেন চাচা
অপহরণ ও ধর্ষণ করেছে ধর্ষক বাবুল
হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে আলোচিত বিউটি আক্তার হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা ছিলেন তার বাবা সায়েদ আলী স্বয়ং। বিউটির বাবা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। আর বিউটিকে অপহরণ ও ধর্ষণের কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন বাবুল মিয়া। শনিবার সন্ধ্যায় হবিগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) বিধান ত্রিপুরা। তিনি বলেন, বিউটির বাবা শনিবার বিকেলে হবিগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম তৌহিদুল ইসলামের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এর আগে শুক্রবার রাতে একই ঘটনায় জড়িত ময়না মিয়াও আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। রাজসাক্ষী হিসেবে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন নিহত বিউটির নানি ফাতেমা বেগম ও ময়না মিয়ার স্ত্রী আছমা বেগম।
এসপি বলেন, বিউটির বাবা সায়েদ আলীসহ তিনজন হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত। তারা ইউপি সদস্য কলমচান বিবি ও তার ছেলে বাবুল মিয়াকে ফাঁসানোর জন্য বিউটিকে হত্যা করেন। অন্যদিকে গ্রেফতার বাবুল মিয়া বিউটিকে অপহরণ ও ধর্ষণের কথা স্বীকার করে হবিগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম তৌহিদুল ইসলামের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর ইউপি নির্বাচনে ব্রাহ্মণডোরা ইউনিয়নের ২ নম্বর সংরক্ষিত আসনে ময়না মিয়ার স্ত্রী আসমা আক্তার বাবুল মিয়ার মায়ের কাছে পরাজিত হন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বাবুলের পরিবারকে ফাঁসাতে বিউটিকে হত্যা করে লাশ হাওরে ফেলে দেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, গত ২১ জানুয়ারি বিউটিকে অপহরণ ও দুই সপ্তাহ আটকে রেখে ধর্ষণ করেন কলমচান বিবির ছেলে বাবুল মিয়া। এ নিয়ে গ্রামে সালিসি বৈঠক হয়। কিন্তু তাতে কোনো সুরাহা হয়নি। পরে ময়না মিয়া বিউটির বাবা সায়েদ আলীকে বোঝান যে বিউটি নষ্ট হয়ে গেছেন। তাকে বাড়িতে রাখলে সায়েদ আলীর অপর দুই মেয়েকে ভালো জায়গায় বিয়ে দেওয়া যাবে না।
কিন্তু বিউটিকে হত্যা করলে বাবুল ও তার মাকে ফাঁসানো যাবে। এতে বিউটিকে হত্যার প্রস্তাবে রাজি হন তার বাবা। পরে গত ১৬ মার্চ, ময়না মিয়া, সায়েদ আলী ও অপর এক ব্যক্তি বিউটিকে তার নানার বাড়ি থেকে নিয়ে আসেন। লাখাই উপজেলার কোনো একটি স্থানে বিউটিকে হত্যা করা হয় এবং তাঁর লাশ ওই দিন রাতে শায়েস্তাগঞ্জের ছাতাগর্ত হাওরে ফেলে রাখা হয়।
পুলিশ সুপার বিধান ত্রিপুরা বলেন, এ হত্যাকাণ্ডে সায়েদ আলী ও ময়না মিয়া ছাড়াও একজন পেশাদার খুনিকে ১০ হাজার টাকায় ভাড়া করা হয়। বিউটির নানি ফাতেমা বেগম শুক্রবার রাতে আদালতে সাক্ষ্য দেন। তিনি আদালতকে বলেন, সায়েদ আলী, ময়না মিয়া ও অপর এক ব্যক্তি তাঁদের বাড়িতে গিয়ে বিউটিকে নিয়ে আসেন। হত্যাকাণ্ডে ময়না মিয়ার সম্পৃক্ততার কথা জানিয়ে তার স্ত্রী আছমা বেগম শনিবার বিকেলে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
পিডিএসও/তাজ