ইজ্জতের দাম ৬০ হাজার, ক্ষোভে আত্মহত্যা ছাত্রীর
হবিগঞ্জ শহর সংলগ্ন রিচি গ্রামে সালিশ বৈঠকে মাদ্রাসা ছাত্রীর ইজ্জতের মূল্য ৬০ হাজার টাকা নির্ধারণ করায় অপমানে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে স্বপ্না আক্তার (১৭) নামে এক মাদ্রাসা ছাত্রী। শুক্রবার দুপুরে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে। স্বপ্না ওই গ্রামের রিকশাচালক আব্দুল মতলিবের মেয়ে এবং স্থানীয় মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রিচি গ্রামের রিকশাচালক আব্দুল মতলিবের মেয়ে স্বপ্না বেগমের সাথে একই গ্রামের সাবেক মেম্বার স্বপন আহমেদের ছেলে দোকান কর্মচারী নয়ন আহমেদ শান্তর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বৃহস্পতিবার রাতে স্বপ্নাকে বাড়িতে না পেয়ে তার বাবা আব্দুল মতলিব বিষয়টি স্থানীয় মুরুব্বিদের জানান। শুক্রবার সকালে গ্রামের লোকজন শান্ত মিয়া যে দোকানে চাকরি করে সেই দোকানের তালা খুলে ভেতরে স্বপ্নাকে পান। শুক্রবার দুপুর ১২টায় স্থানীয় মেম্বার সাজু মিয়াসহ এ ব্যাপারে সালিশ বৈঠক করে।
সালিশ বৈঠকে ছেলে ও মেয়ের বয়স কম থাকায় বিয়ে না দিয়ে সালিশ বিচারকরা নয়ন আহমেদ শান্তকে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। সালিশের পর স্বপ্না বেগম ক্ষোভে-অভিমানে বাড়িতে গিয়ে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে।
স্থানীয় লোকজন পুলিশকে খবর দিলে হবিগঞ্জ সদর থানার ওসি ডালিম আহমেদ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে হবিগঞ্জ জেলা সদর আধুনিক হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন।
এ ব্যাপারে মেম্বার সাজু মিয়ার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।
হবিগঞ্জ সদর থানার ওসি (তদন্ত) ডালিম আহমেদ জানান, সালিশ বৈঠকের বিষয়টি শুনেছি। যারা সালিশ করেছেন তারা এ ব্যাপারে তাদের ব্যাখা দিতে থানায় আসবেন। মেয়ের মা ও বাবা খুবই গরিব। তারাও থানায় আসবে অভিযোগ দিতে। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পিডিএসও/রিহাব