তহিদুল ইসলাম, জাবি প্রতিনিধি

  ২৩ জানুয়ারি, ২০১৮

জাবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে নৈতিক স্খলনের’ অভিযোগ দ্বিতীয় স্ত্রী’র

নিজেকে ‘তালাকপ্রাপ্ত দ্বিতীয় স্ত্রী’ দাবি করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের এক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ‘নৈতিক স্খলন ও অসদাচরণের’ অভিযোগ এনেছেন একই বিভাগের সাবেক এক ছাত্রী। অভিযোগকারী বর্তমানে একটি সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি বর্তমানে ওই অধ্যাপকের অধীনে পিএইচডি গবেষণা করছেন। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম বরাবর লিখিত অভিযোগপত্রে ওই ছাত্রী অভিযুক্ত অধ্যাপকের বিরুদ্ধে গর্ভপাতে বাধ্য করা, সন্তানকে অস্বীকার ও হত্যার হুমকির অভিযোগ এনেছেন। অভিযোগপত্রে ওই ছাত্রী তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তের যথাযথ শাস্তি দাবি করেছেন।

গত ১৭ জানুয়ারি দেওয়া অভিযোগপত্রে ওই ছাত্রী বলেন, স্নাতক সম্মান প্রথমবর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষায় কলা ও মানবিক অনুষদে প্রথম স্থান অর্জন করলে সে (অভিযুক্ত অধ্যাপক) আমাকে খুঁজে বের করে পরিচিত হয়। স্নাতক সম্মানে ভালো রেজাল্ট করলে সে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করার চেষ্টা করে এবং ধীরে ধীরে সুসম্পর্ক গড়ে তোলে। ধারণা দেয় আমি তার প্রিয় শিক্ষার্থীদের একজন। তার স্ত্রীর সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই জানিয়ে সে আমার কাছে ব্যক্তিগত জীবনের বিভিন্ন হতাশার কথা শেয়ার করে। তার অসহায়ত্বের কথা জেনে একসময় তার প্রতি আমার একধরণের মায়া জন্মায়। আর সেই মায়াকে কাজে লাগিয়ে সে আমাকে ইমোশনালি ব্ল্যাকমেইল করে একপর্যায়ে প্রণয়ের সম্পর্ক স্থাপন করে। ২০১৫ সালের ২৪ নভেম্বর ইসলামী শরিয়ত মতে সে আমাকে বিয়ে করে।

তিনি বলেন, আগের স্ত্রীর কাছ থেকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হওয়ার আশঙ্কায় সে বিষয়টি গোপন রাখার অনুরোধ করে। পরে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অন্তঃসত্ত্বা হলে সে আমার গর্ভের সন্তানটি প্রতিবন্ধী হতে পারে এরকম কথা বলে জোরপূর্বক গর্ভপাত করায়। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে দ্বিতীয়বার অন্তঃসত্ত্বা হলে সে আমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আগে সে আমাকে বলেছে যে সে কিছুতেই এ বাচ্চা জন্মাতে দেবে না। যদি জন্মায়ও, আমি যদি ডিএনএ টেস্ট করাই তাহলেও তার ক্ষমতাবলে ডিএনএ টেস্টের রিপোর্ট মিথ্যা বলে প্রমাণ করবে। এমনকি আমার সঙ্গে বিয়েটাও মিথ্যে প্রমাণ করে দেবে। অতঃপর আমাকে ও আমার গর্ভের সন্তানকে হত্যার হুমকিও দেয়। প্রাণভয়ে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় আমি আত্মগোপন করে থাকতে বাধ্য হই। এরপর আত্মীয়-পরিজনহীন অনিরাপদ পরিবেশে ২০১৭ সালের ২২ সেপ্টেম্বর আমার একটি পুত্র সন্তান জন্মলাভ করে। এর ঠিক দুই দিন পর ২৫ সেপ্টেম্বর সে আমাকে তালাকের নোটিশ পাঠায়।

অভিযোগকারী ছাত্রী বলেন, তার প্রথম স্ত্রী এবং জামাতা আত্মীয়দের জোর দেখিয়ে আমাকে গুম করে ফেলবে, খুন করে ফেলবে, পুরো পরিবারকে জঙ্গি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা হবে বলে হুমকি দেয়। এছাড়া অভিযোগকারীর বোনের ছেলে-মেয়েকে ধরে নিয়ে যাবে, বোনের মেয়েকে পুলিশের কাস্টডিতে ধর্ষণ করাবে, পরিবারের চাকরিত সদস্যদের চাকরিচ্যুত করবে, অভিযোগকারীকেও চাকরিচ্যুত করাবে এবং কিছুতেই যদি কাজ না হয় তাহলে তার সাথে অভিযোগকারীর ভিডিও ওই জামাতা ইন্টারনেটে প্রকাশ করে দেয়ার হুমকি দেন বলে অভিযোগকারী অভিযোগ করেন।

অভিযোগের সত্যতা জানতে চেয়ে অভিযুক্ত অধ্যাপককে ফোন করা হলেও রিসিভ করেননি। উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে ‘অভিযোগটি যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেলে হস্তান্তর করা হয়েছে’ বলে জানান।

এ বিষয়ে যৌন নিপীড়ন সেলের প্রধান অধ্যাপক রাশেদা আখতার বলেন, অভিযোগপত্র পেয়েছি। আমাদের অভিযোগের বিষয়ে কিছু প্রশ্ন আছে। আমরা উভয় পক্ষের সাথে বসবো। আমাদের কিছু সময় লাগবে।

পিডিএসও/রিহাব

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
জাবি শিক্ষক,নৈতিক স্খলণ,অভিযোগ
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist