গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি

  ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

করতোয়া-বাঙ্গালী নদী

গোবিন্দগঞ্জে থামছেই না অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, হুমকিতে স্থাপনা

ছবি: প্রতিদিনের সংবাদ

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে করতোয়া-বাঙ্গালী নদী থেকে চলছে বালুখেকোদের অবৈধ বালু উত্তোলনের মহোৎসব। আইন ও কর্মকর্তাদের নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রাজনৈতিক নেতার ছত্রছায়ায় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা ভারী মেশিন দিয়ে দীর্ঘদিন বালু উত্তোলন অব্যাহত রেখেছে।

মাঝেমধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে মেশিন পুড়িয়ে দেওয়া ও শাস্তি প্রদান করা হলেও কয়েকদিন পর আবার যা- তাই। যেন থামছেই না এ অবৈধ বালু উত্তোলন। এতে বাঁধে ভাঙন, তীরবর্তী এলাকা কাঁচা-পাকা সড়ক, আবাদি জমিতে ফাটল দেখা দিয়েছে।

জানা যায়, করতোয়ার প্রায় ৭০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে প্রায় অর্ধশতাধিক পয়েন্ট থেকে বালু তুলে বিক্রি করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে বালুদস্যুরা। অন্যদিকে গুরুত্বপূর্ণ হাইওয়েসহ বিভিন্ন সড়ক ও বড় স্থাপনা হুমকির মুখে।

গোবিন্দগঞ্জ পুরাতন বন্দর স্লুইস গেট এলাকায় করতোয়া থেকে আনান মিয়া দীর্ঘদিন অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করে আসছে। বালু বহনে বড় বড় ট্রাক্টর ও পাওয়ার টিলার বেপরোয়া গতিতে পুরাতন বন্দর আবাসিক এলাকার মধ্য দিয়ে ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলাচল করায় সেখানকার মানুষের সমস্যা হচ্ছে বলে অভিযোগ তাদের।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই এলাকায় করতোয়া নদীর বাঁধেও ধস ও ভাঙন দেখা দিয়েছে। করতোয়া নদীর তীরবর্তী সাপমারা ইউনিয়নের চক রহিমাপুর উত্তরপাড়া ও চক রহিমাপুর এলাকায় চলছে অবাধে বালু উত্তোলন। এলাকার স্লুইসগেট ইতোমধ্যে নদীতে বিলীন হয়েছে।


  • করতোয়ার প্রায় ৭০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে প্রায় অর্ধশতাধিক পয়েন্ট থেকে বালু তুলে বিক্রির অভিযোগ।
  • বাঁধে ভাঙন, তীরবর্তী এলাকা কাঁচা-পাকা সড়ক, আবাদি জমিতে ফাটল।

এ বিষয়ে সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘শুধু আমি বালু উত্তোলন করছি না। অনেকেই তুলছেন। সবার বন্ধ হলে আমারটাও হবে।’

সাহেবগঞ্জ মেরী ও চক রহিমাপুর উত্তরপাড়ার শহিদুল ইসলাম, মিঠু মিয়া, সানোয়ার হোসেন, আয়তালসহ একটি চক্র বালু উত্তোলন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বেড়িবাঁধ এলাকায় বালু উত্তোলনের ফলে নদীতে বিলীন হতে পারে বলে শঙ্কা স্থানীয় বাসিন্দাদের। ঘরবাড়িও ভাঙনের কবলে পড়তে পারে। এতে শত শত পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বালু উত্তোলন করতে গেলে শুধু আপনারা (সাংবাদিক) ঝামেলা বাধান। প্রশাসন তো কখনো অভিযানে আসে না।’

রাখাল বুরুজ ইউনিয়নের ধর্মপুর ও কাজীপাড়ায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলছে। আবাদি জমিসহ বসতবাড়ি হুমকিতে থাকলেও উত্তোলন বন্ধ হয়নি। এলাকাবাসী প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করলেও কাজ হয়নি।

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাসেল মিয়া বলেন, বালু উত্তোলন বন্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

পরিবেশ আন্দোলন গাইবান্ধা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক জনি বলেন, ভূগর্ভস্থ বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে পরিবেশ-প্রতিবেশের ওপর বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক বলেন, বিষয়টি জেনে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পিডিএস/জেডকে

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
গাইবান্ধা,গোবিন্দগঞ্জ,বালু,উত্তোলন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close