চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার সূচীপাড়া উত্তর ইউনিয়নের ধামরা আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম ও অর্থ লেনদেনের অভিযোগ করেছেন নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেওয়া প্রার্থীরা। এ বিষয়ে মুঈনুল সরকার নামের এক শিক্ষক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) রফিকুল ইসলামের (বীর উত্তম) কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন তারা।

জানা যায়, ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মোতালেব মজুমদারের অবসরের পর সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. ইদ্রিস ২০২০ সালের ডিসেম্বরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নেন।

গত ৩০ নভেম্বর একটি পত্রিকায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। এতে ১২ জন শিক্ষক আবেদন করলে গত ২৪ জানুয়ারির নিয়োগ পরীক্ষায় ৭ জন শিক্ষক অংশগ্রহণ করেন। এতে কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার রাজাপুর উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিন প্রথম হন বলে অভিযোগ তার। কিন্তু গোপন সমঝোতায় মোটা অঙ্কের আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে আগেই ঠিক করে রাখা প্রার্থীকে প্রথম করা হয়েছে বলে অভিযোগ অন্য প্রার্থীদের।

নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেওয়া মুঈনুল সরকার জানান, বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মিজানুর রহমান পাটোয়ারী, বিদ্যুৎসাহী সদস্য মজিবুর রহমান ও অভিভাবক সদস্য বাবুল মেম্বার ৫ লাখ টাকা নেওয়ার মাধ্যমে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করেছেন। তিনি আরো জানান, গত ২১ জানুয়ারি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের এক পরিপত্রে জানানো হয়, জাতীয়করণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যেসব প্রধান শিক্ষকের চাকরি এখনো স্থায়ী হয়নি তাদের মাউশির মহাপরিচালকের প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ বোর্ডে মনোনীত করা যাবে না। কিন্তু তা সত্ত্বেও নিয়োগ পরীক্ষায় শাহরাস্তি সরকারি বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ঈমাম হোসেনকে মহাপরিচালকের প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ বোর্ডে রাখা হয়েছে।

• এমপির কাছে লিখিত অভিযোগ ভুক্তভোগী প্রার্থীদের
• গত বছরের ৩০ নভেম্বর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। গত ২৪ জানুয়ারি পরীক্ষায় অংশ নেন ৭ শিক্ষক
• নিয়োগ পরীক্ষায় কোনো অনিয়ম হয়নি, বলছেন বিদ্যোৎসাহী সদস্য মজিবুর রহমান
• নিয়োগ পরীক্ষায় অর্থিক সুবিধা নেওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়, বলছেন ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মিজানুর রহমান

এলাকাবাসীর অভিযোগ, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মিজানুর রহমান পাটোয়ারী, বিদ্যুৎসাহী সদস্য মজিবুর রহমান ও অভিভাবক সদস্য বাবুল মেম্বার আগে থেকে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন নিয়োগ বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত। এ সিন্ডিকেট গত বছর একজন অফিস সহায়ক ও একজন নিরাপত্তা কর্মী নিয়োগ দিয়ে ৬ লাখ টাকা উৎকোচ নিয়েছে। এছাড়া মজিবুর রহমান গত বছর জুনে ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্ত ব্যতীত বিদ্যালয়ের গাছ বিক্রি করেছেন। যার সংবাদ স্থানীয় কয়েকটি পত্রিকায় প্রকাশিত হলে পরবর্তীতে বিষয়টি রেজুলেশন ভুক্ত করা হয়েছে।

মজিবুর রহমান জানান, নিয়োগ পরীক্ষায় অর্থিক লেনদেনের বিষয়টি মিথ্যা ও বানোয়াট। মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও মাউশির ডিজির প্রতিনিধি পরীক্ষা নিয়েছেন। এখানে কোনো অনিয়ম হয়নি।

ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মিজানুর রহমান পাটোয়ারী জানান, নিয়োগ পরীক্ষায় অর্থিক সুবিধা নেওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়। পূর্বে ৪ বার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেয়া যায়নি। সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় প্রার্থী বাছাই করা হয়েছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী রুহুল আমিন জানান, মাউশির মহাপরিচালকের প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ বোর্ডে রাখা শাহরাস্তি সরকারি বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ঈমাম হোসেনের চাকরি স্থায়ী কি না তা তার জানা নেই। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে তাকে নিয়োগ পরীক্ষায় রাখা হয়েছে।

পিডিএস/জেডকে