হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি

  ৩১ জানুয়ারি, ২০২৪

মানিকগঞ্জের হরিরামপুর

তিন ফসলি জমির মাটি অবৈধ ইটভাটায়

ছবি: প্রতিদিনের সংবাদ

মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে তিন ফসলি জমির মাটি কেটে অবৈধ ইটভাটায় নিয়ে যাওয়ার কারণে দিন দিন কমে যাচ্ছে ফসলি জমি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রবিবার (২৮ জানুয়ারি) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) সহকারি কমিশনার (ভূমি) বরাবর এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেন ৫৬ জন ভুক্তভোগী।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পিপুলিয়া গ্রামে স্বাধীন ব্রিকস ফিল্ডের অংশীদার সজিব, রতন ও শীতল চৌধুরী দীর্ঘদিন যাবত দানিস্তপুর চকের নানা তিন ফসলি জমির মাটি ভ্যেকু দিয়ে কেটে ইটভাটায় নিয়ে যাচ্ছেন। এতে করে দিন দিন আবাদযোগ্য জমির অভাব দেখা দিচ্ছে। গত কয়েক বছরে শুধু বলড়া ইউনিয়নেই কমেছে অন্তত ১০ একরেরও বেশি তিন ফসলি জমি। এসব মাটি কেটে ইটভাটার কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। ভাটা তিনটির কোনোটিরই পরিবেশ ছাড়পত্রসহ প্রয়োজনীয় বৈধ কাগজপত্র না থাকার পরেও চলছে বছরের পর বছর। মাঝে-মধ্যে জরিমানা করা হলেও বন্ধ হয় না এসব ইটভাটা বলেও অভিযোগে জানা গেছে।


  • গত কয়েক বছরে শুধু বলড়া ইউনিয়নেই কমেছে ১০ একরেরও বেশি তিন ফসলি জমি।
  • ফসলের উৎপাদনও কমেছে উপজেলায়

উল্লেখ্য, হরিরামপুর উপজেলার বলড়া ইউনিয়নেই রয়েছে স্বাধীন ব্রিকস, সততা ব্রিকস ও আমিন ব্রিকস নামে তিনটি ইটভাটা।

সরেজমিনে জানা গেছে, এসব ইটভাটা নির্মাণের পর থেকে ফসলের উৎপাদন কমে গেছে। ফসলি জমির মাটি দিয়েই ভাটায় ইট প্রস্তুত করা হয়। ইট পোড়ানো ধোঁয়ার গন্ধে শ্বাসকষ্ট হওয়ায় অনেক সময় জমিতে কাজ করতেও সমস্যা হয় কৃষকদের। মাটি কাটার কারণে স্বাধীন পার্শ্ববর্তী লতিফ মোল্লা, মোশারফ ও মোতালেবের জমির বেশকিছু অংশ ধ্বসে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক লতিফ মোল্লা জানান, গত বছর তার ৬ শতাংশ জমির পাশের জমি থেকে মাটি কাটার কারণে তার জমির কিছু অংশ ধ্বসে পড়েছিল। পরে ইটভাটার অংশীদার সজিব বলেছিল জমির মাটি ভরাট করে দিবে কিন্তু এখন পর্যন্ত দেয়নি। এবছর আবার মাটি কাটার জন্য আমার জমি ধ্বসে পড়েছে বলেও জানান তিনি।

ধ্বসে পড়া আরেক জমির মালিক মোশাররফ বলেন, ‘আমার ২০ শতাংশ জমির একাংশ ধ্বসে পড়েছে। রাতে ইচ্ছাকৃতভাবে এমনভাবে মাটি কাটে যাতে পাশের জমির মাটি ধ্বসে পড়ে। এরপর জমির মালিকরা যাতে তাদের কাছেই জমি বিক্রি করতে বাধ্য হন।’

স্থানীয় আরেক কৃষক সাহেব আলী বলেন, ‘ইটভাটার জন্য বছর বছর জমির পরিমাণ কমছে। ফসলের উৎপাদন কমে গেছে। ভাটার ধোঁয়ার গন্ধে জমিতে কাজ করতেও সমস্যা হয়।’ এ বিষয়ে জানতে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে স্বাধীন ব্রিকসের একাংশের মালিক শীতল চৌধুরী বলেন, ‘আমি ঢাকা আছি এ অভিযোগের বিষয়ে অবগত নই। তবে এ বিষয়ে জেনে পরে কথা বলব।’

মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক রেহেনা আকতার এ বিষয়ে জানান, বিষয়টি তিনি অবগত আছেন। এ বিষয়ে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে বলে জানান তিনি।

পিডিএস/আরডি

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
মানিকগঞ্জ,হরিরামপুর
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close