আব্দুল বাতেন, ঈশ্বরদী (পাবনা)

  ৩১ জানুয়ারি, ২০২৪

পাবনার ঈশ্বরদী

পরিচালনার অনুমতির সুযোগে রিসোর্ট দখলের চেষ্টা, অভিযোগ

ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশীতে গড়ে ওঠা দৃষ্টিনন্দন ‘পাকশী রিসোর্ট’। ছবি: প্রতিদিনের সংবাদ

পাবনার ঈশ্বরদীতে পরিচালনার মোখিক অনুমতির সুযোগে একটি রিসোর্টে দখলের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় শনিবার (২৭ জানুয়ারি) ঈশ্বরদী থানা ও পাকশী ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী মোনাজ্জামা মুশতারী তানিয়া। দখল চেষ্টায় অভিযুক্ত আহসান আলী খান আরজু সম্পর্কে ভুক্তভোগীর ভাশুর। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে বিষয়টি পারিবারিক বলে দাবি করেছেন তিনি।

প্রায় দেড় যুগ আগে রেলের জায়গা লিজ নিয়ে উপজেলার পাকশীতে গড়ে ওঠা দৃষ্টিনন্দন ‘পাকশী রিসোর্ট’। নথি অনুযায়ী পাকশী রিসোর্ট লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা আকরাম আলী খান সঞ্জুর এর প্রতিষ্ঠা করেন। ২০২১ সালে তার মৃত্যুর পর স্ত্রী মোনাজ্জামা মুশতারী তানিয়া এর মালিকানা পান। স্থানীয়দের কাছে রিসোর্টটি সঞ্জু খানের রিসোর্ট নামেও পরিচিত। রিসোর্টের নথি অনুযায়ি, পাকশী রিসোর্ট লিমিটেড মালিক আকরাম আলী খান সঞ্জু ও তার স্ত্রী মোনাজ্জামা মুশতারী তানিয়া। তবে স্বামীর মৃত্যুর পর দুই সন্তানসহ তানিয়া পুরো রিসোর্টের মালিক হন।

তানিয়ার অভিযোগ সূত্রে থেকে জানা গেছে, সঞ্জু খানের মৃত্যুর পর তার বড় ভাই আরজু খানকে পাকশী রিসোর্ট অস্থায়ীভাবে পরিচালনার জন্য মৌখিকভাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। শর্ত অনুযায়ি শুরুতে রিসোর্টের আয় থেকে প্রতিমাসে ঢাকায় তানিয়ার নামে এক লাখ করে টাকা পাঠাতেন। কিন্তু ছয় মাস পর থেকে মাসে ৫০ হাজার, পরে করোনার অজুহাতে টাকা দিতে টালবাহানা শুরু করেন আরজু। ফোন জানতে চাইলে তানিয়াকে গালমন্দ করেন তিনি। ফোনে আরজু খান দাবি করেন, রূপপুর প্রকল্প সংশ্লিষ্ট রাশিয়ানরা রিসোর্টে না আসায় ও উচ্চআদালতে রেল কর্তৃপক্ষের করা উচ্ছেদ মামলা মোকাবিলা করতে গিয়ে টাকা দিতে পারছেন। তবে গোপনে খোঁজ নিয়ে এর বিপরীত অবস্থা জানা যায়।


  • সঞ্জু খানের মৃত্যুর পর মাসিক টাকা দেওয়ার শর্তে পাকশী রিসোর্ট পরিচালনার অনুমতি পান বড় ভাই আরজু খান।
  • টাকা দেওয়া বন্ধ থাকায় সম্প্রতি রিসোর্ট পুনরুদ্ধারে গিয়ে লাঞ্ছিত হন প্রয়াত সঞ্জুর স্ত্রী।
  • ঈশ্বরদী থানা ও পাকশী ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) লিখিত অভিযোগ ভুক্তভোগী তানিয়ার।

এদিকে সপ্তাহখানেক তানিয়া ঢাকা থেকে ঈশ্বরদীতে এলে লোকজন নিয়ে তাকে রিসোর্টে প্রবেশে বাধা ও লাঞ্ছিত করেন আরজু খান। পরে খোঁজ নিয়ে তানিয়া জানতে পারেন, ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে রিসোর্টের আয় গোপনে একটি ব্যাংকে জমাচ্ছেন আরজু। পরে ঈশ্বরদী থানা ও পাকশী ইউপিতে লিখিত অভিযোগ দেন তানিয়া।

জানতে চাইলে মৌখিকভাবে দেওয়া দায়িত্বে রিসোর্ট পরিচালনা ও শুরুতে প্রতিমাসে তানিয়াকে টাকা পাঠানো কথা স্বীকার করেন আহসান আলী খান আরজু। তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করে তিনি (তানিয়া) রিসোর্টে এসে সমস্ত কিছু পরিচালনার দায়িত্ব নিজে নিতে চাইছেন। এ জন্য আমাকে আগে থেকে অবহিত ও সময় দেওয়া হয়নি।’

আরজু খান বলেন, ‘বিষয়টি নিতান্তই আমাদের পারিবারিক ব্যাপার। আমার আরেক ভাই আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি আমেরিকা থেকে দেশ আসবে। সে এলে সব ভাই-বোন একসঙ্গে বসে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করব।’

পাকশী ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিন্টু বলেন, ‘পরিষদে লিখিত অভিযোগ পেয়ে রিসোর্টে গিয়ে পরিবারের সবার সঙ্গে আলাপ করে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি।’

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ওসি (তদন্ত) মনিরুল ইসলামকে অভিযোগের বিষয়টি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি রিসোর্টে গিয়ে বিষয়টির সঠিক তদন্ত করে আমাকে জানালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করব।’

পিডিএস/আরডি

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
পাবনা,ঈশ্বরদী
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close