খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি

  ২১ জানুয়ারি, ২০২৪

৩০ যুবকের স্বেচ্ছাশ্রমে সাঁকো, দুর্ভোগ লাঘব

ছবি: প্রতিদিনের সংবাদ

স্বেচ্ছাশ্রমে ৩০ জন পাহাড়ি মারমা যুবক বাঁশ, কাঠ, দিয়ে চেঙ্গী নদীর ওপর সাঁকো তৈরি করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সাঁকো তৈরির কাজ শেষ করে মানুষ পারাপারের ব্যবস্থা করতেই এই উদ্যোগ। ওই পথে সাঁকো দিয়ে চলাচল করছে খাগড়াছড়ি সদরের দক্ষিণ গোলাবাড়ি, পশ্চিম গোলাবাড়ির ত্রিপুরাপাড়া, ঠাকুরছড়া, বটতলী, কালাডেবাসহ সাত গ্রামের পাহাড়ি মারমা বাসিন্দারা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, চেঙ্গী নদীর পারে মাইক বাজিয়ে গান শুনে যুবক, নারী ও তরুণীরা সাঁকো তৈরি করেছেন। কখনো বৌদ্ধ ধর্মীয়, আবার আধুনিক, হিন্দীসহ ইংরেজি গান শুনে শীতে চেঙ্গী নদীর পানিতে নেমে দুইপাশে দুইটি কুঠি ঘেরে বাঁশ ও কাঠ বেঁধে সাঁকো তৈরি করছেন যুবকরা।

সাঁকো তৈরির উদ্দ্যোক্তা ক্যাচিং মর্গ বলেন, ‘সাত গ্রামের মানুষ যাতায়াতের জন্য ৩০ জন ছেলে স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে সাঁকো তৈরি করছেন। রোগীদের পারাপার করতে অসুবিধা হয়। ওইপথে গর্ভবতীরা হাসপাতালে নিয়ে যেতে অনেক কষ্ট পায়। একইসঙ্গে দুর্ভোগে পড়ে স্বজন ও মানুষরা। দক্ষিণ গোলাবাড়ি, কালাডেবা, বটতলীসহ সাত গ্রামের মানুষ থেকে ১০ থেকে ৫০০ টাকা তুলে সাঁকো তৈরি হয়েছে। এ কাজে পঞ্চাশ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। সাঁকো তৈরি করতে পনের হাজার টাকা দান করেন সুজিত দেওয়ান। আমি নিজেও ১৫ হাজার টাকা দিয়েছি।

গোলাবাড়ির বাসিন্দা চাইহলাপ্রু মারমা ও আচাইপ্রু মারমা বলেন, সকাল থেকে আমরা স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে সবাই মিলে মিসে সাঁকো তৈরির কাজ করছি। সন্ধ্যার আগে সাঁকো তৈরি হয়ে যাবে। শীতে ঠান্ডা পানিতে নেমে কাজ চলছে।

দক্ষিণ গোলাবাড়ির বাসিন্দা নিওয়েন চৌধুরী বলেন, আমাদের গ্রাম থেকে নৌকা দিয়ে নদী পার করে শাক-সবজি বটতলীতে নিয়ে যেতে হয়। খাগড়াছড়ি শহরের চাহিদা মিটিয়ে চট্টগ্রাম পর্যন্ত যায়। বর্ষা মৌসুমে নৌকা ও শীত মৌসুমে সাঁকো দিয়ে পার করে সবজি বিক্রি করতে নিয়ে যেতে হয়। গ্রামবাসী থেকে টাকা তোলে যুবক, নারী ও বয়স্করা মিলে সাঁকো তৈরি করছেন। কষ্টের কোনো শেষ নেই আমাদের। একটি সেতু নিমার্ণ করা হলে দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পায় সাত গ্রামের মানুষরা।

গোলাবাড়ি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও হেডম্যান অংখ্যচিং চৌধুরী বলেন, জেলা পরিষদ, উন্নয়ন বোর্ড, এলজিইডি ও পানি উন্নয়ন বোর্ড ইচ্ছে করলে এখানে একটি সেতু নিমার্ণ করতে পারে।

খাগড়াছড়ি সদরের গোলাবাড়ি ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার রাম কুমার ত্রিপুরা বলেন, প্রতি পরিবার তিন থেকে চার কানি জমিতে সবজি চাষ করে। বাঁশের সাঁকো দিয়ে পার হয়ে সবজি শহরে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করতে হয় কষ্ট করে। এখানে সেতু দরকার।

খাগড়াছড়ি জেলা সদর গোলাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উল্লাস ত্রিপুরা বলেন, খাগড়াছড়ি পৌরসভা ও ইউনিয়নের মধ্যে পড়ে এই স্থানটি। দক্ষিণ গোলাবাড়িসহ বেশ কয়েকটি গ্রামবাসীদের টাকা দিয়ে তারা সাঁকো তৈরি করেন। আমরা যে বরাদ্দ পায় তা দিয়ে সেতু নিমার্ণ করা সম্ভব নয়। এখানে একটি সেতু নিমার্ণ জরুরি।

পিডিএস/এস

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
খাগড়াছড়ি,পাহাড়ি মারমা বাসিন্দা,সাঁকো তৈরি
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close