আহমেদ রেজওয়ান, ফেনী

  ০৬ মে, ২০২৪

ফেনীর সোনাগাজী

নতুন ৮ জাতের ধান চাষ, জনপ্রিয় ‘ডায়াবেটিক রাইস’

ছবি: প্রতিদিনের সংবাদ

ফেনীর সোনাগাজীতে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট সোনাগাজী অঞ্চলিক কার্যালয়ের উদ্যোগে চলতি বোরো মৌসুমে নতুন আট জাতের ধানের চাষ হয়েছে। যার মধ্যে একটি ধানের জাত বিশেষ বৈশিষ্ট্যের কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী বলে দাবি করেছেন ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা। আর অন্য জাতগুলোও এ অঞ্চলের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী বলে জানিয়েছেন ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট সোনাগাজী আঞ্চলিক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, নতুন ধানের জাতগুলো হলো ব্রি ধান-৭৪, ১০১, ১০২, ১০৪, ১০৫, ১০৭, ১০৮ এবং ব্রি- হাইব্রিড ধান-৮। প্রায় ১০০ বিঘা পতিত জমিতে কৃষকরা পার্টনার প্রকল্পের মাধ্যমে এ আট জাতের ধান চাষ করেন।

এর মধ্যে নতুন উদ্ভাবিত ব্রি ধান-১০৫ এর চাল ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য উপকারী হবে। যাতে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (জিআই) ভ্যালু ৫৫। এই চালে অ্যামাইলোজের পরিমাণ শতকরা ২৭ শতাংশ এবং প্রোটিনের পরিমাণ ৭ দশমিক ৩ শতাংশ। কম জিআই সম্পন্ন হওয়ায় যাদের ডায়াবেটিকের সমস্যা তারা এটা খেলে শরীরে সুগার বাড়বে না বা পেটের সমস্যা হবে না বলে জানিয়েছে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তারা। ইতোমধ্যে এ জাতের ধানটি জাতীয় বীজ বোর্ড থেকে অনুমোদন পেয়েছে। যা ‘ডায়াবেটিক রাইস’ হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে।


  • ব্রি ধান-১০৫ এর চাল পরিচিতি পাচ্ছে ‘ডায়াবেটিক রাইস’ হিসেবে
  • হাইব্রিড ধানের চেয়ে দাম প্রতি মণে ৬০০ থেকে ১০০০ টাকা বেশি
  • ব্রি-১০৪ জাতের চালের দাম প্রতি মণে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা বেশি

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট সোনাগাজী আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহযোগিতায় পতিত জমিকে আবাদের আওতায় এনে উচ্চ ফলনশীল ধানের জাতগুলোর ভালো ফলনে খুশি স্থানীয় কৃষকরা।

পার্টনার প্রকল্পের কৃষক আবু সাঈদ ৪৫ বিঘা জমিতে চাষ করেছেন ব্রি-১০১, ব্রি-১০২, ১০৪, ১০৫ এবং ১০৮। তিনি জানান, ব্রি ধান-১০৫ জাতের চাল মাঝারি চিকন এবং সাদা। হাইব্রিড ধানের চেয়ে প্রতি মনে ৬০০ থেকে ১০০০ টাকা বেশি দাম পাওয়া যায়। এছাড়া ব্রি-১০৪ জাতের চাল সুগন্ধি ও লম্বাটে বাসমতি ধরনের হাওয়ায় এ ধানের দাম প্রতি মনে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা বেশি পাওয়ার আশা করেন তিনি। ধানের লম্বা ছড়া ও ফলন ভালো হওয়ায় স্থানীয় অনেক কৃষকই বীজ সংগ্রহে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট সোনাগাজী আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান ড. বিশ্বজিৎ কর্মকার বলেন, এই অঞ্চলের পতিত জমিকে আবাদের আওতায় নিয়ে আসার জন্য ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে সেচ পাম্পের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পার্টনার প্রকল্পে ১০০ বিঘা পতিত জমিতে লবণ সহিষ্ণু ও উচ্চফলনশীল নতুন আট জাতের ধানের চাষ হয়েছে। ইতোমধ্যে ব্রি-১০৫ জাতের ধানের অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় বীজ বোর্ড। এছাড়া নতুন চাষকৃত প্রতিটি ধানের আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য আছে এবং ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা নতুন নতুন জাত উদ্ভাবনে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন।

পিডিএস/জেডকে

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ফেনী,সোনাগাজী,ধান,গবেষণা,ব্রি
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close