বগুড়ার শিবগঞ্জে ধাওয়াগীর দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত সেশন ফি নেওয়ার অভিযোগে ছাত্র শিক্ষকদের বাকবিতন্ডতা ও বহিরাগতদের দিয়ে স্কুল ছা্ত্রদের উপর মারপিটের অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় ৯ম শ্রেণির ছাত্র রেজওয়ান হোসেন রাহুলের বাবা রানা বাবু গত ১৩ জানুয়ারি উপজেলা নির্বাহী অফিসার সহ বিভিন্ন দপ্তরে মারপিটের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের জন্য লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ৯ জানুয়ারি উপজেলার শিবগঞ্জ ইউনিয়নের ধাওয়াগীর দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে ৯ম শ্রেণির ছাত্র মীম মাছাদ স্কুলে সেশন ফি দিতে গেলে স্কুল কর্তৃপক্ষ তার নিকট থেকে অতিরিক্ত ৪৫০ টাকা দাবি করে। সেশন ফি নিয়ে শিক্ষার্থীর সঙ্গে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম মর্তুজার একপর্যায়ে বাকবিতণ্ডা সৃষ্টি হয়। ঘটনার জেরে ওই দিন বিকালে ধাওয়াগীর মাঠে মীম ও জিসান নামের দুই শিক্ষার্থীদের মাঝে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরদিন আবার ১০ জানুয়ারি বিদ্যালয়ে ক্লাস চলাকালীন ওই ঘটনার জেরে জিসান তার বাবাকে ফোনে বলে গতকাল আমাকে যারা মারপিট করেছে তারা স্কুলে এসেছে।

বাবা আব্দুল বাছেদ ও স্থানীয় ইউপি সদস্য তোজাম্মেল হোসেন সহ বেশ কিছু বহিরাগতদের সঙ্গে নিয়ে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে। এক পর্যায়ে বিদ্যালয়ের ২য় তলায় ক্লাস রুমে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় শিক্ষার্থীরা হামলাকারীদের বাধা দিলে বহিরাগত লোকজন বেপরোয়াভাবে শিক্ষার্থীদের মারপিট করে আহত করে। আহতরা হলেন ৯ম শ্রেণির ছাত্র মীম, রেজাউল হোসেন, বিপুল, ইব্রাহীম, জুয়েল, সৌরভ, সাওন সহ ২২ জন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়।

এব্যাপারে ৯ম শ্রেণির ছাত্র রেজওয়ান হোসেন রাহুল এর বাবা রানা বাবুর সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, গত ১৩ জানুয়ারি উপজেলা নির্বাহী অফিসার সহ বিভিন্ন দপ্তরে মারপিটের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের জন্য লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।

তিনি আরো বলেন, সরকারি বই বিনামূল্য দেওয়ার কথা অথচ সেশন ফির নামে অতিরিক্ত ৪৫০ টাকা প্রধান শিক্ষক দাবি করায় এই ঘটনার সূত্রপাত হয়। বহিরাগতরা আমাদের সন্তানদের মারপিট করে আহত করলেও প্রধান শিক্ষক কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। উল্টো তার যোগসাজসে বহিরাগতরা হামলা চালিয়ে আমার সন্তান সহ ২২ জন শিক্ষার্থীকে মারপিট করেছে। অভিভাবক মিলন সরদার, সাহাবুল ইসলাম ও গোলাম রব্বানী বলেন, প্রধান শিক্ষক সেশন ফি’র নামে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়াকে কেন্দ্র করে প্রধান শিক্ষকের কিছু বহিরাগত লোকজন দিয়ে এ সংঘাতের ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম মর্তুজার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগে করা হলে তিনি জানান, আমাদের প্রতিষ্ঠানে এরকম একটা ঘটনা ঘটেছে আমি বিষয় টি ইউএনও স্যারকে জানিয়েছি। এই ঘটনায় আগামী সোমবার চেয়ারম্যান সঙ্গে বসার কথা আছে।

উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা টিএম আব্দুল হামিদ জানান, আমাকে প্রধান শিক্ষক ঘটনা সম্পর্কে জানিয়েছেন। আমরা সরেজমিন তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবো।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে কুলসুম সম্পা বলেন, এ ঘটনায় অভিযোগ পেয়েছি, বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য ইতিমধ্যে উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।