reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৮ মে, ২০১৭

ভিক্ষা করছেন সাবেক ইউপি সদস্য

পাবনা জেলার চাটমোহরের পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকায় দেখা মেলে এক মহিলা ভিক্ষুকের। বয়সের ভারে চলাফেরা করা কঠিন, তবুও কাকডাকা ভোরে বেড়িয়ে পড়েন ভিক্ষা করতে। কেউ ভিক্ষা দেন, আবার কেউ বা তাড়িয়ে দিতে পারলে বাঁচেন! তবে এই ভিক্ষাবৃত্তিতে তিনি খুব লজ্জাও পান। তিনি হলেন- পাবনার চাটমোহর উপজেলার পার্শ্বডাঙ্গা গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য গফুরোন্নেছার কথা। জানা যায়, পঞ্চাশোর্ধ্ব বয়সের সাবেক এই জনপ্রতিনিধি এক সময় মানুষকে দু’হাত ভরে দিয়েছেন। এখন তিনিই মানুষের দয়ায় চলেন!

পার্শ্বডাঙ্গার মৃত জোরাল শেখের মেয়ে গফুরোন্নেছা। মাত্র ৭ বছর বয়সে একই গ্রামের চাঁদ আলীর সঙ্গে বিয়ে দেন তার বাবা-মা। অল্প বয়সে বিয়ে হলেও ভালোই চলছিল দু’জনের সংসার। ১৯৮৭ সালে পার্শ্বডাঙ্গা ইউনিয়নে সাধারণ সদস্য পদে পুরুষদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। টানা ৫ বছর সাধ্যমতো মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন।

স্বামী মারা যাওয়ার পর সংসারে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। সন্তান না থাকায় পিতার রেখে যাওয়া ৩ শতক জমিতে ঘর তুলে বসবাস শুরু করেন তিনি। নিঃসন্তান ছিলেন বলে তার চাওয়া-পাওয়ার কিছু ছিল না। নিজের জন্য কিছু না ভেবে কাজ করে গেছেন মানুষের জন্য। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি ক্রমেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। ২ বছর আগে গফুরোন্নেছা স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। দীর্ঘদিন সেখানে চিকিৎসাধীন থাকার পর ফিরে আসেন বাড়িতে।

চিকিৎসা করাতে গিয়ে বাড়ির যা কিছু ছিল সব বিক্রি করে নিঃস্ব হয়ে পড়েন সাবেক এই জনপ্রতিনিধি। নেমে আসে আর্থিক দৈন্যতা। একদিকে অসুস্থ, অন্যদিকে পেট চালানোর কথা চিন্তা করে উপায়ান্তর না দেখে শুরু করেন ভিক্ষাবৃত্তি! তবে, তার এলাকায় তিনি ভিক্ষা করতে লজ্জা পান। তিনি বলেন, শারীরিক অসুস্থতার কারণে আমি লাঠিতে ভর দিয়ে হেঁটে হেঁটে রাস্তায় চলাচল করি। বাড়ি থেকে প্রতিদিন চাটমোহরে আসি। কি করব, গড়ে প্রতিদিন আমার ১০০ টাকার ওষুধ লাগে। ভিক্ষা না করলে আমার ওষুধ খাওয়া হবে না!

গফুরোন্নেছা বলেন, আমি আমার এলাকায় ভিক্ষা করতে লজ্জা পাই; কারণ এক সময় ওই এলাকার মেম্বার ছিলাম। আমি কি করে তাদের কাছে ভিক্ষা চাইব? ভিক্ষা করে যা পাই তা দিয়ে সবার আগে ওষুধ কিনি। তার পরে যদি টাকা বাঁচে তবেই অন্য বাজার করি! এভাই চলে যাচ্ছে আমার সংসার।

পিডিএসও/মুস্তাফিজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ভিক্ষা করছেন,ইউপি সদস্য
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist