নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২১

অনলাইনে গাছ বিক্রি বাড়ছে

প্রতি বছর বর্ষা মৌসুম এলেই ভিড় বাড়ত নার্সারিগুলোতে। গ্রাহক চাহিদার দিকে নজর রেখে এই সময়েই দেশব্যাপী বৃক্ষমেলা হয় টানা ২৮ বছর। তবে গত দুই বছর চিত্রটা ভিন্ন। ক্রেতার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কমেছে নার্সারি। তবে এই অবস্থায় আশা জাগাচ্ছে অনলাইনে গাছ বিক্রি। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়ছে এই খাতের ক্রেতা ও ব্যবসার পরিধি।

রাজধানীর সবচেয়ে বড় আগারগাঁয়ের সবুজ বাংলা নার্সারিতে প্রায় ৫০ জাতের ফলের চারা এবং কলম রয়েছে। নানা রঙের প্রায় ৮০ ধরনের মৌসুমি ফুল আছে। এ ছাড়া শাপলা ও পদ্ম ফুলও পাওয়া যায়। ১৬ বছর আগে প্রতিষ্ঠা করা হয় নার্সারি। চড়াই-উতরাই পেরিয়ে যখন গতি আসে আয়-রোজগারে, তখন সব থমকে দিল করোনার থাবা। তিন লাখ টাকার মাসিক বিক্রি হঠাৎ নেমেছে ৪০ হাজারে। খরচ কমাতে বাধ্য হয়েছেন কর্মী ছাঁটাইয়ে। একই অবস্থা রাজধানীর অন্যান্য নার্সারিতেও। দৈনিক গড় বিক্রি নেমেছে ৫০ শতাংশের নিচে।

সবুজ বাংলা নার্সারির ব্যবস্থাপক নোমান মাহমুদ বলেন, সাধারণত বর্ষাকালে নার্সারি ব্যবসা জমজমাট থাকলেও গত দুই বর্ষা মৌসুম কেটেছে নীরবে। ক্রেতাশূন্য নার্সারিতে এখনো অলস সময় কাটছে আমাদের। ২০২০ সালে ছেদ পড়ল জাতীয় বৃক্ষমেলা আয়োজনে। একুশেও বসেনি বৃক্ষপ্রেমীদের আসর। তবে বিপরীত চিত্র গাছ বিক্রির অনলাইন প্ল্যাটফরমে। করোনার শুরু থেকে ক্রমান্বয়ে বেড়েছে গ্রাহক ও বিক্রি।

একই কথা জানালেন, ব্র্যাক কানন নার্সারির উৎপাদন কর্মকর্তা মো. নূরন নবী। তাদের নার্সারিতেও প্রায় সব প্রজাতির ফুল ও ফলের গাছ আছে। তবে নার্সারিভেদে দামে কিছুটা পার্থক্য দেখা গেছে। রাস্তার পাশে গাছ বিক্রি করতেন ইউসুফ। দুই তরুণ যখন এক দিন এসে ইউসুফকে বললেন, গাছের ছবি তুলে তারা অনলাইনে বিক্রি করতে চান, ইউসুফ খুব একটা আমলে নেননি। তবে প্রস্তাবে রাজি হয়েছিলেন।

কয়েক দিনের মধ্যেই ইউসুফকে অবাক করে দিয়ে প্রতি দিন প্রায় দুই-তিন হাজার টাকার অর্ডার আসতে শুরু করল। একসময় রাস্তার পাশের দোকান ছেড়ে দিয়ে দুই তরুণের সঙ্গে অনলাইনে গাছ বিক্রি করতে শুরু করেন ইউসুফ। ফেসবুকে তাদের পেজের নাম চিত্রা-বৃক্ষ হাট।

ইউসুফের কাছে প্রস্তাব নিয়ে যে দুই তরুণ হাজির হয়েছিলেন, তাদের নাম মোহাম্মদ সাবরীল রহমান ও কামরুল ইসলাম। দুজনেই বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) স্নাতক। উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্নটা মূলত সাবরীলকেই উদ্যমী করেছিল। আলোকচিত্রী বন্ধু কামরুল ইসলামের সহায়তা নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন। এখন তাদের উদ্যোগ ডালপালা মেলতে শুরু করেছে।

চিত্রা-বৃক্ষ হাট ফেসবুক পেজটির ফলোয়ার এখন প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার। সাবরীল বলেন, ‘শুধু ফেসবুক পেজ নয়। এখন আমাদের নিজস্ব ওয়েবসাইট আছে। ১০ জন কর্মচারী আছেন। প্রতিদিন আমরা ২০-২৫টি ডেলিভারি দিচ্ছি। মাসে গড়ে প্রায় পাঁচ লাখ টাকার গাছের অর্ডার আসে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close