reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১

এসএসিপি প্রকল্প সহায়তায় এক সফল কৃষকের গল্প

লালমোহনের এক কৃষক জসীম উদ্দীন। এসএসিপি প্রকল্পের সহায়তায় ভাগ্য বদলে এখন তিনি ভোলার লালমোহন উপজেলার রোল মডেল। শুধু নিজের ভাগ্য বদলেই থেমে থাকেননি। উপজেলার অন্য কৃষকদেরও উদ্বুদ্ধ করছেন তিনি।

ধলগৌড়নগর গ্রামের আবদুস সাত্তার ও সাফিয়া বেগমের সন্তান কৃষক জসীম উদ্দীন। আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে পড়াশোনা খুব একটা না করতে পারলেও আগ্রহ ছিল কৃষিকাজের প্রতি। আগ্রহ ছিল নিজেকে স্বাবলম্বী করে তোলার। কিন্তু সঠিক দিক নির্দেশনা ও প্রযুক্তির সহায়তা পাননি। তার সম্বল মোট ১ দশমিক ৫ একর জমি, যার সবটাই ছিল এক ফসলি ধানিজমি। নিজের স্ত্রী, চার মেয়ে ও বাবার খরচ মেটাতে হিমশিম খেতেন। এক বিঘা জমিতে ধান চাষ করে পেতেন মাত্র ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা।

এই কৃষক জসীম উদ্দীনের গল্প বদলাতে শুরু করে এসএসিপি। গল্পের শুরু ২০১৯-২০ সালে। প্রকল্পের সহায়তা এবং বিএআরআইয়ের বিজ্ঞানীদের মেধা ও শ্রম বদলে দেয় জসীম উদ্দীনের জীবনের চাকা। প্রকল্পের আওতায় মাত্র ১২ শতাংশ জমিতে শুরু করে বারি বিটি বেগুনের চাষ। সার, বীজ, ওষুধ সবই পেয়ে যান প্রকল্প থেকে, থাকেন বিজ্ঞানীদের সাহচার্যে। বছর ঘুরতেই বদলে যায় গল্প। আয় করেন প্রায় ৪০ হাজার টাকা, যেখানে ১২ শতাংশ জমিতে ধানচাষ করে পেতেন নামমাত্র লাভ।

এবার নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করেন সফল কৃষক জসীম উদ্দীন। আগের ১২ শতাংশ জমিতে আবারও করেন বারি বিটি বেগুনের চাষ। অবশিষ্ট জমির ৩২ শতাংশ জমিতে প্রকল্পের প্রযুক্তিগত সহায়তায় শুরু করেন সরজান পদ্ধতিতে সবজি ও মাছের চাষ। জমিতে তৈরি করেন তিনটি নালা ও চারটি বেড। নালা ও বেড তৈরি এবং বেডের ওপর মাচা প্রদানসহ তার মোট খরচ হয় ৬০ হাজার টাকা। যার বড় অংশই ছিল বিগত বছরের লাভের টাকা। চারটি বেডে প্রকল্পের সহায়তায় একে একে লাউ, মরিচ, টমেটো, শিম ও মিষ্টিকুমড়া লাগান। ২০২১ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত তার আয় ১ লাখ ১০ হাজার টাকা। চারটি বেডে ফসল আরো ৪০ থেকে ৪৫ দিন থাকবে বলে আশাবাদী এই কৃষক। বর্তমান বাজার মূল্য হিসেবে সেখান থেকে আরো আয় হবে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা।

এই ফসল উত্তোলন শেষে মাচায় উঠবে স্বপ্নের শসা, ধুন্দল, চিচিঙ্গা, করলা ও লাউ। নালা বা বেড তৈরিতে এবার আর কোনো খরচ হবে না। ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা খরচেই মেরামত হয়ে যাবে মাচা। সার, বীজ ও বালাইনাশকের সহায়তার জন্য কৃষক জসীম উদ্দীনের পাশে রয়েছে তার ভরসার এসএসিপি প্রকল্প।

কৃষক জসীম উদ্দীন এবার অন্যের ১ দশমিক ৫ একর পতিত জমি বার্ষিক ৭ হাজার ৫০০ টাকায় ভাড়া বাবদ নিয়েছেন। সেখানেও শুরু করেছেন বারি বিটি বেগুন এবং সরজান পদ্ধতিতে সবজি চাষ।

এমনি আরো অনেক সফল কৃষক তৈরি করে যাচ্ছে ঝঅঈচ প্রকল্প। ভোলা জেলার লালমোহন ও চরফ্যাশন উপজেলার আরও অনেক কৃষকের ভাগ্যের চাকা ঘুরতে শুরু করেছে এই প্রকল্পের বারি অঙ্গের হাত ধরে। তারাও প্রত্যেকেই হতে যাচ্ছেন এক একজন ‘জসীম উদ্দীন’। সফলতার গল্পটা এখানে কেবল শুরু, কৃষকের উন্নয়নে এভাবেই কাজ করে যাচ্ছে প্রকল্পের বারি অঙ্গ। কারণ কৃষকের সফলতাই প্রকল্পের সার্থকতা। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close