নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৫ আগস্ট, ২০২০

১৫ ও ২১ আগস্টের কুশীলবরা এখনো সক্রিয় : সেতুমন্ত্রী

দেশের মানুষ বঙ্গবন্ধুর আদর্শ এবং চেতনাকে ধারণ ও লালন করে : স্থানীয় সরকারমন্ত্রী

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ১৫ আগস্ট ইতিহাসের নিষ্ঠুরতা রাজনৈতিক হত্যাকান্ড। জগতে আর কোনো হত্যাকান্ডে নিষ্পাপ শিশুকে হত্যা করা হয়নি, ‘অবলা নারী’কে হত্যা করা হয়নি, টার্গেট করা হয়নি অন্তঃসত্ত্বা নারীকেও। ১৫ ও ২১ আগস্টের কুশীলবরা এখনো সক্রিয়। এখনো তাদের ষড়যন্ত্রের নীলনকশা চলছে। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার বিকালে নগর ভবনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন আয়োজিত দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভায় অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, ঢাকা দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মান্নাফি, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরসহ অনেকে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সে সময় বিদেশে ছিলেন বলেই প্রাণে বেঁচে যান আমাদের আশার বাতিঘর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বঙ্গবন্ধুর আরেক মেয়ে শেখ রেহানা। সেদিন তারা বেঁচে গিয়েছিলেন বলেই বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে। যুদ্ধাপরাধের বিচার হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাযজ্ঞ এবং পরে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা একই ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতা। ১৫ আগস্টের প্রধান টার্গেট ছিল আমাদের ভৌগোলিক মুক্তির স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ২১ আগস্টে প্রধান টার্গেট ছিল আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তির স্থপতি শেখ হাসিনা। দুটি ঘটনার কুশীলবরা এখনো সক্রিয়।’ বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ১৯৭১ সালের যুদ্ধের পর ১৯৭২ সালে ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশে ফিরে গরিব ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করেছেন। কিন্তু জিয়া ও কর্নেল ফারুকের নির্দেশে ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারকে নৃশংসভাবে হত্যা করে সেনাবাহিনীর বিপথগামী কিছু সদস্য। তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে তারা থেমে থাকেননি। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও ওই সময় তারা দেশে আসতে দেয়নি। অনেক বাধাবিপত্তি অতিক্রম করে ১৯৮১ সালে তিনি দেশে আসেন। এ দেশ নিয়ে তিনি ভাবতে থাকেন। পরিকল্পনা করতে থাকেন কীভাবে দেশকে উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় এগিয়ে নেওয়া যায়। এই পরিকল্পনা করে তিনি বসে থাকেননি, পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করেছেন। তার একক চিন্তাশীল নেতৃত্বে দেশ আজ উন্নয়নশীল দেশে পৌঁছেছে।

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে মানুষ স্বাধীনতা অর্জনের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ে নিজেদের অধিকার আদায় করেছে। এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডাকে সাড়া দিয়ে তার দেশের জনগণ তথা সব শ্রেণি-পেশার মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিশ্বে একটি আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছে। বাংলার মানুষ বঙ্গবন্ধুর আদর্শ এবং চেতনাকে বুকে ধারণ এবং লালন করে বলেই প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে যখন সারা পৃথিবী ল-ভ-, তখন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে করোনা সংকটেও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ সব জনপ্রতিনিধি মাঠে গিয়ে কৃষকের ফসল ঘরে তুলে দিয়েছেন।

সভাপতির বক্তব্যে মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘তখন আমি খুব ছোট ছিলাম। আমি ও আমার বড় ভাই শেখ পরশ রাতে বাবা-মায়ের সঙ্গে একই খাটে ঘুমিয়ে ছিলাম। সেই হত্যাকা-ের কোনো স্মৃতি আমার মনে নেই। এমনকি বাবা-মায়ের সঙ্গেও কোনো স্মৃতি ঠিক মনে পড়ে না। আমার আবছা একটি স্মৃতি মনে পড়ে। সেটা হলো বাবার লাশ। তিনি সাদা হাতকাটা একটি গেঞ্জি পরা ছিলেন। গলায় একটি ক্ষতের দাগ ছিল এবং তাদের দুজনকে যখন নিয়ে যাওয়া হয় নিচে রক্ত জমাট ছিল। এর বেশি কিছু স্মরণ করতে পারি না। সেই দুর্বিষহ সময়টার কথা যখনই চিন্তা করি, তখন বেদনা বাড়ে।’

তিনি আরো বলেন, ‘প্রথমত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই। কারণ এই করোনাকালীন একজন আসামিকে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করেছেন। এ ছাড়া আরো যারা বিদেশে আছেন তাদের ফিরিয়ে এনে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসবেনÑ এই প্রত্যাশা রাখি।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close