নিজস্ব প্রতিবেদক

  ৩০ আগস্ট, ২০১৯

নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনে অর্থায়ন বিশ্বব্যাংকের

নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদন ক্ষমতায় প্রায় ৩১০ মেগাওয়াট যোগ করতে বাংলাদেশ সরকার বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে ১৮৫ মিলিয়ন ডলারের ঋণচুক্তি সই করেছেÑ যা নির্ভরযোগ্য ও সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ এবং পরিচ্ছন্ন বায়ু পেতে অবদান রাখবে। প্রতি ডলার সমান ৮৫ টাকা ধরে বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ১ হাজার ৫৭২ কোটি ৫ লাখ টাকা। বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনের নতুন বাজার সম্প্রসারণে ‘দি স্কেলিং আপ রিনিউঅ্যাবল এনার্জি প্রজেক্ট’ ইউটিলিটি স্কেল সোলার ফোটোভেলটেক (পিভি) এবং ছাদের বা রুফটপ পিভির প্রতি দৃষ্টি দেবে সরকার। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে চুক্তিতে সই করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মনোয়ার আহমেদ ও বিশ্বব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর (বাংলাদেশ-ভুটান) ড্যানড্যান চেন। কার্বন নির্গমন কম?ানো ও বিদ্যুতের বিকল্প উৎস ব্যবহার নিশ্চিত করতে ফেনীর সোনাগাজীতে ৫০ মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ২০২০ সালের মধ্যে শতকরা ১০ শতাংশ বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎস থেকে মেটানোর লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সৌর ও বায়ুশক্তি ব্যবহার করে ফেনীতে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। প্রাথমিকভাবে সোনাগাজী উপজেলার চরাঞ্চলে প্রায় ১ হাজার একর জমিতে গড়ে উঠবে এ বিদ্যুৎকেন্দ্র। সোনাগাজী উপজেলার ওই চরাঞ্চলে জনবসতি কম। তাই সেখানে সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে উঠবে। এ কেন্দ্র নির্মাণের পর খালি জায়গার যথাযথ ব্যবহারেও প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে। তাই এসব জমিতে মাছ চাষের ব্যবস্থাও থাকবে। দেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার মাত্র ২ শতাংশ। বাকিটা প্রাকৃতিক গ্যাসসহ অন্য উৎস থেকে আসে। নিরাপদ ও সাশ্রয়ী এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার নিশ্চিত করতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

প্রকল্পের আওতায় সোলার পিভি মডিউলস, এসি ইনভারটার, মাউন্টিং স্ট্র্যাকচার, স্ক্যাডা সিস্টেম, ক্যাবলিং ও এক্সেসরিজ কেনা হবে। কেনা হবে সাবস্টেশন, ১০ কিলোমিটার ১৩২ কেভি ইভাক্যুয়েশন লাইন, আবশ্যিক খুচরা যন্ত্রপাতি। কাজের উন্নয়নে দেশি-বিদেশি পরামর্শকও নিয়োগ দেওয়া হবে।

প্রকল্পের যৌক্তিকতা তুলে ধরে বিদ্যুৎ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলেন, জ্বালানি হিসেবে বিশ্বব্যাপী তেল, গ্যাস, কয়লার প্রাপ্যতা কমে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে বিকল্প হিসেবে সৌরশক্তি, বায়ু, সমুদ্রের স্রোত ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদনে কাজ করছে বিশ্ব। সৌরশক্তিকেও ব্যাপকভাবে কাজে লাগানো হচ্ছে। বাংলাদেশেও সেসব প্রযুক্তি ব্যবহার করে পরিবেশবান্ধব পরিবেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের দিকে এগোচ্ছে বলে জানান তারা। প্রকল্পটি এ খাতে বেসরকারি বিনিয়োগের মাধ্যম উন্মোচনে সহায়তা করবে এবং বেসরকারি খাত, বাণিজ্যিক ব্যাংক ও অন্যান্য উৎস থেকে ২১২ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত সংগ্রহের আশা করে। ইআরডি সচিব মনোয়ার আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ সরকার নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদনের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে এ প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এছাড়া প্রকল্পটি প্রতি বছর উল্লেখযোগ্য পরিমাণের নিঃসরণ কমাতে সহায়তা করবে, যা প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে কার্বন নিঃসরণ কমাতে বাংলাদেশ নির্ধারিত লক্ষ্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close