যশোর প্রতিনিধি

  ২৯ মে, ২০১৭

১০০ বিঘা জমি দখল করেছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতা!

যশোর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান শাহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে ১০০ বিঘা জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। এই জমির বাজারমূল্য প্রায় ৩ কোটি টাকা। সদর উপজেলার চাঁচড়া ইউনিয়নের মাহিদিয়া বিলের ওই জমি ভুয়া নামে রেকর্ড মালিক দেখিয়ে কবলা দলিল করেছেন তিনি। জমির প্রকৃত মালিক ও প্রান্তিক কৃষকদের হত্যা ও মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দিচ্ছে শাহারুল ও তার ক্যাডার বাহিনী।

গতকাল রোববার প্রেসক্লাব যশোর মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে মাহিদিয়া গ্রামের ১৬০ জন জমির মালিক এ অভিযোগ করেন। পরে তারা প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেন।

সংবাদ সম্মেলনে মাহিদিয়া গ্রামের ১৬০ জন জমির মালিকের পক্ষে লিখিত বক্তব্য রাখেন শফিয়ার রহমান। তিনি অভিযোগ করেন, সদর উপজেলার আরবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা শাহারুল ইসলাম তার সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনী নিয়ে রাজনৈতিক প্রভাব দেখিয়ে কিছু অসাধু সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের সহায়তায় রিফুজিদের (ভারত থেকে আসা) নামে ভুয়া রেকর্ডের মালিক দেখিয়ে নিজ নামে কবলা দলিল করেছেন। ওই জমি দখলে তিনি পুলিশ কর্মকর্তার নাম ব্যবহার করে প্রকৃত মালিকদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন। অথচ ১৯৬২ সালের রেকর্ড ও দখল সূত্রে আমরাই ওই জমির মালিক।

তিনি আরও বলেন, আমাদের পূর্বপুরুষরা ১৯২৭ সালের পূর্ব থেক ওই জমিতে চাষাবাদ করে আসছিল। তৎকালীন এই জমির গাতিদার ছিল নবু সরদার। জমির গাতি পরিচালনা করতো মফেজ দফাদার। তাদের কাছ থেকে পাট্টা মূল্যে এবং কোন কোন জমিতে ওয়ারেশ সূত্রে জাফর সরদার, শামছুর রহমান সরদার, মোকছেদ দফাদার, সুনাল্যে বিশ্বাস, হাগু মোল্লা, শরিয়তুল্লাহ মোল্লা, অটল বিহারী পাল, ইউসুফ সরদার জমি চাষাবাদ করে আসছিল। পরবর্তীতে কাউছার আলী মোড়লসহ অনেকে চাষাবাদ করতো। ব্রিটিশ সরকার মানচিত্র চিহ্নিত করে উল্লিখিত মালিকগণের নামে ১৯২৭ সালে রেকর্ড লিপিবদ্ধ করেন। পরবর্তীতে ১৯৪৬-৪৭ সালে পাকিস্তান সরকার জেলা প্রশাসকের নামে ওই একশত বিঘা জমি অধিগ্রহণ করেছিল।

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর অনেক ভারতীয়কে পুশব্যাক করা হয়। তাদেরকে রূপদিয়া, সাড়াপোল, বানিয়াবহু, তপসীডাঙ্গা, চাঁচড়া, রাজা বরদাকান্ড রোড এলাকায় পুনর্বাসন করা হয়। বিল হরিনা ও মাহিদিয়া বিলের কিছু জমি রিফুইজিদের চাষাবাদের জন্য মৌখিক নির্দেশ দেন তৎকালীন জেলা প্রশাসক। পরবর্তীতে ১৯৬২ সালে একশত বিঘা জমি তফশীল অনুযায়ী দখল শর্ত হিসেবে রেকর্ডভূক্ত হয়। একশত বিঘা জমির মধ্যে মাত্র ৪২ শতাংশ জমি সরকারের নামে রেকর্ড হয়। যা সরলা বালা কান্তি ও সূর্যকান্তির জমি হিসেবে পরিচিত। অথচ ওই জমি কখনো রিফুউজিদের নামে রেকর্ড ছিল না। তবে ১৯৯০ সালের রেকর্ড অনুযায়ী কিছু জমি ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয় অধিগ্রহণ করে। বাকী জমি জেলা প্রশাসকের নামে রেকর্ড থাকে। ১৯৬২ সালের রেকর্ড ও দখল অনুযায়ী আমরাই ওই জমির মালিক।

এদিকে প্রেসক্লাবে পাল্টা সংবাদ সম্মেলনে আরবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহারুল ইসলাম বলেন, ‘আমি প্রকৃত মালিকদের কাছ থেকে ২৯ বিঘা জমি কিনেছি। আমি কারো জমি দখল করিনি। আমাকে হেয় করার জন্য রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের উস্কানিতে আমার বিরুদ্ধে এসব মিথ্যা অভিযোগ করছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার কোন ক্যাডার বাহিনী নেই। কেউ ভয়ভীতি প্রদর্শনও করেনি।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist