ভোলা প্রতিনিধি

  ২৯ মার্চ, ২০১৭

বিকল মিটার, যোগসাজশের অভিযোগ

জেলেদের চাল মাপে কম দিয়ে হাতেনাতে ধরা গুদাম কর্মকর্তা

ভোলা সদর উপজেলা গুদাম কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) আবু জাফর মোহাম্মদ ওবায়দুল্যাহর বিরুদ্ধে চাল কম দেওয়ার ঘটনা হাতেনাতে ধরা পড়েছেন। গত সোমবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে জেলেদের মৎস্য ভিজিএফের চাল কম দেওয়ার সময় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী হাকিম (ম্যাজিস্ট্রেট) মৃধা মো: মোজাহিদুল ইসলাম গুদামে অভিযানে এই দুর্নীতি হাতেনাতে ধরা পড়ে। ইউনিয়নের সচিব, চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য (মেম্বার) জমায়েত হয়ে অভিযোগের ভিত্তিতে ইউএনও বাইরে থেকে মিটার স্কেল এনে চালের বস্তা পরিমাপ করে অভিযোগ সত্যতা পান। অভিযোগ আছে, গুদাম কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের যোগসাজোসে আগে থেকেই এই ওজনে কারসাজি চলে আসছিল।

তবে ওসিএলএসডি আবু জাফর নয়ন অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, মূলত মেম্বরাও সচিবরা মিলে চাল গো-ডাউনে রেখেছেন অন্যত্র বিক্রির করার জন্য। আমি তাদের মতো কাজ করিনি বলে আমার বিরুদ্ধে এই মিথ্যা অভিযোগ আনে।

নাম প্রকাশে একাধিক জন জানান, গুদাম কর্মকর্তা ও ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিরা হরিলুটের আত্মীয়। দুই পক্ষই উভয়ের দুর্নীতি ঢেকে রাখে। টানাপোড়েনের ফেরে চাল কম দেওয়ার গোপন বিষয়টি জনসম্মুখে উঠে এসেছে।

ভোলা সদর উপজেলার ভেদুরিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম মাস্টার, সচিব হোসেন মাহমুদ ও ইউপি সদস্যবৃন্দ বলেন, তারা যখন জেলেদের জন্য বরাদ্দ করা চাল নিতে আসেন তখন, ভোলা সদর উপজেলা গুদাম কর্মকর্তা আবু জাফর মোহাম্মদ ওবায়দুল্যাহ ৫০ কেজির বস্তা ৫২-৫৪ কেজি ধরে মেপে ট্রাকে ভরছিল। প্রতিবাদ করলে তাদেরকে ‘চোর’ বলে গালাগাল ও অসদাচারণ করেন। পরে ইউএনও এসে বাইরের থেকে ডিজিটাল মিটার এনে চালগুলো মাপেন। এবং প্রতি বস্তায় ৫০ কেজি ও ৫০ কেজির কম চাল পান। ইউএনও ওসিএলএসডি ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে সতর্ক করে মিটার সারাই করতে বলেন। চেয়ারম্যান ও সচিবদের সহনশীল হয়ে চাল বুঝে নেওয়ার পরামর্শ দেন। তবে এতে উপস্থিত বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-সদস্যবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা ওসিএলএসডির অপসারণ ও বদলি দাবি করেন।

পূর্ব-ইলিশা ইউনিয়নের সাত নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফখরুল আলম বলেন, গত বৃহষ্পতিবার চাল নেওয়ার পরে ১ হাজার ১০০ বস্তায় (৫৫ মেট্রিক টন) ৫ টন চাল কম দিয়েছে।

চেয়ারম্যান, সচিব ও ইউপি সদস্যবৃন্দ জানান, প্রতিবারে ২-১০ টন চাল কম দিচ্ছে এনালগ-বিকল মিটার এর অজুহাতে। তারা সেটি সংস্কার করছে না।

ভোলা সদর ইউএনও ও নির্বাহী হাকিম (ম্যাজিস্ট্রেট) মৃধা মো: মোজাহিদুল ইসলাম বলেন, জনগণের চাল বুঝিয়ে দিতে ও বুঝে নিতে উভয় পক্ষকে সতর্ক করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এ রকম হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ভোলা সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. তৈয়বুর রহমান মিটার সংস্কারের আশ্বাস দেন। একই গুদামের গুদাম কর্মকর্তা আবু জাফর মোহাম্মদ ওবায়দুল্যাহ বলেন, বিভিন্ন গুদামের কর্মকর্তার নিকট চেয়ারম্যানেরা চাল বিক্রি করেন। ভোলা সদরের গুদামেও চেয়ারম্যানেরা পরিষদের চাল বিক্রি করে যেতে চান, তিনি কেনেন না, তাদের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছেন।

তিনি আরও বলেন, ভোলায় ইউনিয়নের চেয়ারম্যানেরা জেলেদের পাওনা চালের সব না তুলে চাল বিতরণ শুরু করেছেন, ওই কম চালই সকলের মধ্যে বন্টন করবে। পরে ওই চাল তুলে ভোলার খাল পাড়ের গুদামের আড়ৎদারের নিকট বিক্রি করে যাবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist