ঝালকাঠি প্রতিনিধি

  ২৩ মার্চ, ২০২৪

দখল-দূষণে জাঙ্গালিয়া নদী এখন মরা খাল

দখল আর দূষণে ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলায় জাঙ্গালিয়া নদীর ভারানি খালটি মরা খালে পরিণত হয়েছে। ৯০-এর দশকেও লঞ্চ-স্টিমার নিয়মিত চলাচল করত। প্রশাসনের পক্ষ থেকে দখলদারদের উচ্ছদ ও নদী খননে নেই কোনো উদ্যোগ। তবে খাল দখলমুক্ত ও খননে তৎপর রয়েছে বলে জানায় উপজেলা প্রশাসন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলা সদরের বাজারের উত্তর মাথা থেকে শুরু করে পুরাতন জেল খানার পেছন থেকে বাইপাস এলাকা প্রাণকেন্দ্র থেকে জাঙ্গালিয়া নদীর সঙ্গে ভারানি খাল মিশেছে। বাকে বাকে প্রায় দীর্ঘ চার কিলোমিটার খালটির বিভিন্ন স্থানে ময়লার ভাগার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও আবাসিক বাড়ি নির্মাণ করে খালটি দখল করা হয়েছে এবং ফলে স্রোত বন্ধ হওয়ায় বিভিন্ন অংশ নালায় পরিণত হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা সিরাজ, ফিরোজ, জুয়েল, রফিক ও কালামসহ অনেকে জানান, রাজাপুরের বিষখালী নদী থেকে পিরোজপুরের কাউখালির সন্ধ্যা নদীতে মিলিত প্রায় ১৫ কিলোমিটার জাঙ্গালিয়া নদীটির দুই পাশ দখল করে নানা স্থাপনা নির্মাণ করছে প্রভাবশালীরা। এতে নদী ভরাট হয়ে মরা খালে পরিণত হয়েছে। বাগড়ি বাজার থেকে পশ্চিম দিকের বাজার হয়ে রাজাপুর স্বাস্থ্য কেন্দ্র পর্যন্ত খালের দুই পাড়ে পাকা স্থাপনা, বাঁশ-খুঁটি ও পিলার পুঁতে বিল্ডিং ও দোকান তোলার পাশাপাশি খাল ভরাট করছে প্রভাবশালীরা। এছাড়া অন্য স্থানগুলোতেও প্রভাবশালীরা নদী দখলে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। নদী ভরাট হওয়ায় উপজেলায় বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। ফলে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে, কৃষকরাও চাষাবাদে সঠিকভাবে পানি পাচ্ছেন না।

আরো জানা গেছে, জাতীয় নদীরক্ষা কমিশনের পক্ষ থেকে ২০১৬ সালে রাজাপুর উপজেলার ৮১ জন নদ-নদী, খাল-বিল ও জলাশয়-জলধারা অবৈধ দখলদারের তালিকা প্রকাশ করলেও উচ্ছেদে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয় হয়নি।

স্থানীয়রা জানান, ভারানি খালটি অবস্থা প্রায় মৃত। তাই নৌকায় করে বাজার আসা, ধান আনা-নেওয়া, বাজারের মালামাল বহনসহ নানা কাজে চলাচলে ব্যবসায়ী ও কৃষকরা সমস্যায় পড়েছেন। জোয়ারের সময় সামান্য পানি থাকলেও ভাটায় খালে পানিই থাকে না। এ কারণে শহরের কোথাও আগুন লাগলেও পানির সংকট দেখা দেয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পানির উৎস পাওয়া যায় না।

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক দখলদার জানান, প্রশাসন যদি খাল খনন করে বা খাল বড় করে, তখন তো এমনিতেই ছেড়ে দিতে হবে।

রাজাপুরের উপজেলা এলজিইডি কর্মকর্তা অভিজিৎ মজুমদার বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খালটি উদ্ধার করে দিলে খননের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিতপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

রাজাপুরের ইউএনও ফারহানা ইয়াসমিন এ বিষয়ে জানান, মাঝে মধ্যে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে খাল দখল মুক্ত রাখতে অভিযান চালানো হয়। আগামী অর্থবছরে প্রকল্প বরাদ্দ পেলে শহরের ভারানি খালটি উদ্ধার করে খনন করা হবে। এবং জাঙ্গালিয়া নদীটিও খননের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close