এম এ লিতু, কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ)

  ২৪ জানুয়ারি, ২০২৪

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ

ভিন্ন পেশায় যাচ্ছেন তাঁতশিল্পীরা

* আগে শত পরিবার এ তাঁতের পেশায় থাকলেও এখন আছে ১৮ পরিবার * আধুনিক যন্ত্রপাতির সঙ্গে টিকে থাকতে দরকার পেশাগত শিক্ষা বা প্রশিক্ষণ

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ঐতিহ্য হারাচ্ছে তাঁতশিল্প। এতে রাষ্ট্রীয় কোনো উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ তাঁতশিল্পীদের। তাই তারা বেছে নিচ্ছেন ভিন্ন পেশা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শহর থেকে ৪ কিলোমিটার পূর্বে গেলেই অনুপমপুর গ্রাম। সেখানে আজও মুখরিত হয় তাঁত বুননের শব্দে। তাঁতশিল্পের সঙ্গে বহু পুরোনো সম্পর্ক উপজেলার হেলাই, বলিদাপড়া, মনোহরপুর, অনুপমপুরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের। একসময় এসব গ্রামের তাঁতি সম্প্রদায়ের লোকেরা ছিলেন বেশ সচ্ছল, সমৃদ্ধ ও স্বাবলম্বী, তখন তাঁত কাপড়ের চাহিদা ছিল ব্যাপক। এখনকার বাস্তবতায় তাঁতশিল্পের সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করছেন অনেক তাঁতি পরিবার। কাপড়ে রঙিন সুতা ব্যবহার করা হলেও তাদের জীবন এখন সাদাকালোয় মোড়া। যদিও বর্তমানে কিছু তাঁতী সম্প্রদায় এখনো ধরে রেখেছেন তাদের এ আদি পেশা।

সরেজমিন জানা যায়, কালীগঞ্জের অনুপমপুর গ্রামের একসময়কার সচ্ছল তাঁত মালিক জামাত আলির অধীনে চলত ১০টি তাঁত। পূর্ব পুরুষদের কাছ থেকে পাওয়া ১০টি তাঁত এখন ৪টিতে এসে দাঁড়িয়েছে। তাদের পরিবারের অনেকেই তাঁতের ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছেন।

একই অবস্থা উপজেলার অনুপমপুর গ্রামের তাঁতী সম্প্রদায় মানুষদের। আগে শত পরিবার এ পেশায় থাকলেও এখন ১৮টি পরিবার তাঁতের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

তাঁতশিল্পের সঙ্গে যুক্ত থাকা নাহিদুর রহমান জানান, তিনি ২টা তাঁত নিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। পারিবারিকভাবে স্ত্রী-পুত্রদের নিয়ে এ কাজ করছেন। এ কাজ দিয়েই তারা জিবিকা নির্বাহ করছেন।

আরেক তাঁতি মমতাজুল ইসলাম জানান, এখন শাড়ির কাজ হয় না বললেই চলে। কারণ শাড়ির খরচের সঠিক মূল্য পাওয়া কষ্ট। তাঁতের একটি শাড়ি তৈরিতে সময় লাগে প্রকারভেদে এক থেকে দুই দিন। খরচভেদে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা। যা বিক্রি হয় ৬০০ থেকে ১০০০ টাকা। তাছাড়া তাঁতের শাড়ি থেকে মেশিনে তৈরি শাড়ির আধুনিকতা বেশি।

খোঁজ নিয়ে আরো জানা গেছে, একটি তাঁতে প্রতিদিন ৪টি থানে গামছা হয় ৮টি। যার পাইকারি মূল্য ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকা। এই গামছা তৈরির সুতা আনতে হয় কুষ্টিয়ার বিত্তীপাড়া থেকে।

আধুনিক যুগের যন্ত্রপাতির সঙ্গে টিকে থাকতে হলে এ পেশায় জড়িতদের জন্য দরকার পেশাগত শিক্ষা বা প্রশিক্ষণ।

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত জাহান বলেন, এমন শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্তদের আমরা অনেক সময় ক্ষুদ্র ঋণের মাধ্যমে সহায়তা করে থাকি। তবে তাদের যদি কোনো সমিতি থাকে তবে তারা আসুক আমি কথা বলব।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close